

ডায়েটে বিভিন্ন ধরনের বাদাম রাখা শরীরের জন্য ভালো, বলে থাকেন চিকিৎসকরা। এই বাদামের মধ্যে আমন্ড অন্যতম উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন E থাকে, যা ত্বক ও চুল ভালো রাখে। পাশাপাশি এর অন্যান্য পুষ্টিগুণ শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে।


বিভিন্ন ধরনের আকারে ও আয়তনে আমন্ড বাজারে পাওয়া যায়। শীতে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও শরীর ভালো রাখতে আমন্ডের জুড়ি মেলা ভার। সল্টেড আমন্ড বা আমন্ড বাটার খুবই জনপ্রিয়। এ ছাড়াও আমন্ড মিল্ক-সহ এটি খাবারে একাধিক ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তার আগে জেনে নেওয়া দরকার আমন্ডের উপকারিতার দিকটা! কেন এই খাবার ডায়েটে অ্যাড করা উচিৎ?


আমন্ডের পুষ্টিগুণ- আমন্ডে ক্যালোরি থাকে ১৬১ গ্রাম | ফাইবার থাকে ৩.৫ গ্রাম | প্রোটিন থাকে ৬ গ্রাম | কার্বোহাইট্রেড থাকে ২.৫ গ্রাম | ফ্যাট থাকে ১৪ গ্রাম | মোটামুটি ২৮ গ্রামের একটি আমন্ডে ৩৭ শতাংশ ভিটামিন E থাকে ও ৩২ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম থাকে।


আমন্ডের উপকারিতা- শরীরে একাধিক উপকারে লাগে আমন্ড। কোলেস্টেরল কমায় - আমন্ড রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। বেশ কিছু সমীক্ষা বলছে, রক্তে ব্যাড কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় ও ভিটামিন E সঞ্চার করে। পাশাপাশি এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও পটাসিয়াম থাকায় রক্তচলাচল ঠিক রাখে। আর রক্তচলাচল ঠিক থাকলে হার্টও ভালো থাকে।


আমন্ড হাড়ের জন্য ভালো - অনেকেই বলে থাকেন যে, যাঁরা শুধু সবজি খান, তাঁদের ক্যালসিয়ামের অভাব হয়। কিন্তু বিষয়টি একেবারেই সত্যি নয়। কারণ দুধ, বিশেষ করে আমন্ড মিল্ক ক্যালসিয়ামের অন্যতম উৎস। তাই এটি খেলে অনেকাংশেই ক্যালসিয়াম বাড়ে ও হাড় মজবুত হয়।


অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস থাকে আমন্ডে - এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস থাকে, যা ইনফ্লেমেশন দূর করে। ক্যানসারের সম্ভাবনা কমায়। পাশাপাশি ভিটামিন E-সমৃদ্ধ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস শরীরে নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে। অ্যালজাইমার্স ডিজিজ হওয়ার প্রবণতা কমায়। মাথায় রাখতে হবে, আমন্ডে খোসায় বেশি করে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস থাকে।


ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ভালো - বেশ কিছু বাদাম আছে, যা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ভালো। তার মধ্যে আমন্ড অন্যতম। আমন্ডে কার্বোহাইট্রেড কম থাকে ও ফাইবার বেশি থাকে, ফলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এটি। পাশাপাশি এর ম্যাগনেসিয়াম শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায় ও সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বেশ কিছু সমীক্ষা বলছে, আমন্ড টাইপ টু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। সঙ্গে এটি খেলে পেট ভরতি থাকে, ফলে বার বার খিদে পাওয়ার ঝামেলা থাকে না। এবং ক্যালোরি ইনটেকও তাতে কম হয়।


স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে - আমন্ডে সেলেনিয়াম থাকে, যা মানসিক অবসাদ কমায়, অ্যাংজাইটি দূর করে। এটি অ্যাগ্রেশন লেভেলও নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে বেশ কিছু চিকিৎসক বলে থাকেন, স্ট্রেস কমাতে আমন্ড ডায়েটে রাখা যেতে পারে।


কতগুলো আমন্ড একদিনে খাওয়া উচিৎ? ডায়েট বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, যদি ওজন কমানোর প্রয়োজন হয় বা মাসল তৈরি করার, তা হলে একজন প্রাপ্তবয়স্ত ব্যক্তি দিনে ৮ থেকে ১০টি আমন্ড খেতে পারেন। মাথায় রাখতে হবে, বেশি আমন্ড খেলে আবার শরীর খারাপ হতে পারে কারণ এতে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। বেশি আমন্ড খেলে শ্বাসের সমস্যা, হজমের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।


ভেজানো আমন্ড খাওয়া উচিৎ বা শুকনো? অনেকের মনেই এই প্রশ্নটা থাকে। এ ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, স্বাদের নির্ভর করে দুই'ই খাওয়া যেতে পারে। তবে, ভেজানো বাদাম খাওয়ার পরামর্শই দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। কিন্তু অনেকেই বলে থাকেন যে, এর খোসা ছাড়িয়ে না খাওয়াটাই ভালো, কেন না খোসায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টস থাকে।