

অতি প্রাচীনকাল থেকে বিশেষ করে আয়ুর্বেদশাস্ত্রেও ফুট মাসাজ নিয়ে একাধিক কথা বলা হয়েছে। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়ম ও নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে যদি পায়ে মাসাজ করা যায়, তাহলে শরীরের নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ঋতুস্রাবকালীন, মাতৃত্বকালীন সময়ের নানা সমস্যা, মাথাব্যথা থেকে শুরু করে স্নায়ুসংক্রান্ত একাধিক রোগেও ম্যাজিকের মতো কাজ করে ফুট মাসাজ। আসুন জেনে নেওয়া যাক বিশদে!


অবসাদ ও নিদ্রাহীনতা থেকে মুক্তি - মানসিক উদ্বেগ, অবসাদ থেকে মুক্তি দিতে পারে ফুট মাসাজ। যদি নিয়ম মেনে সঠিক পদ্ধতিতে মাসাজ করা যায়, তাহলে শরীরে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। এর জেরে স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। তাছাড়া ফুট মাসাজের জেরে শরীরে স্বস্তি আসে। ফলে নিদ্রাহীনতা বা ঘুমের অভাবও দূর হয়।


PMS, ঋতুস্রাবকালীন সমস্যা থেকে সমাধান - ঋতুস্রাবকালীন প্রায়শই মুড সুইং হয়। অনেকে দারুণ অস্বস্তিতে ভোগেন। অনেকের ক্ষেত্রে আবার একটা মানসিক অস্থিরতা লক্ষ্য করা যায়। এক্ষেত্রে ঠিকঠাক ফুট মাসাজ দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারে। পায়ের দিকে বুড়ো আঙুলের সাহায্যে হালকা চাপ দিয়ে মাসাজ করতে হবে। এতে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।


অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন নানা সমস্যার সমাধান - প্রসবের আগে ও পরে মহিলাদের ক্ষেত্রে পা ফোলা, ব্যথা, পেশি দুর্বলতা, অবসাদ-সহ একাধিক সমস্যা দেখা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সমস্ত সমস্যার মোক্ষম দাওয়াই হয়ে উঠতে পারে রিফ্লেক্সোলজি মাসাজ টেকনিক। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে পায়ে মাসাজ করলে অন্তঃসত্ত্বাদের মৌল বিপাকীয় হার স্বাভাবিক হয়ে যায়। এর জেরে শারীরিক প্রক্রিয়াগুলিও স্বাভাবিক হয়। ফলে শরীর সুস্থ থাকে।


মাল্টিপল স্কেলেরোসিস থেকে মুক্তি - অনেক সময়ে চোখে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এক চোখে ডাবল ভিশনের সমস্যা হয়। পেশি দুর্বলতা-সহ একাধিক স্কেলেরোসিস লক্ষ্য করা যায়। এক্ষেত্রে ফুট মাসাজ মাল্টিপল স্কেলেরোসিস থেকে মুক্তি দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাল্টিপল স্কেলেরোসিসের সমাধানে রিফ্লেক্সোলজি মাসাজ টেকনিক প্রয়োগ করতে হবে।


মাথাব্যথা থেকে আরাম - সাধারণত সাইনাস থেকেই মাথাব্যথা বা হেডেক হয়। এক্ষেত্রে অধিক চিন্তা করলেও ঘাড়ে-কাঁধে ব্যথা অনুভব হয়। অনেক সময় মাথার পিছনের দিকটায় যন্ত্রণা শুরু হয়। টেনে ধরে পিঠের দিকটা। এক্ষেত্রে দু'টি পায়ের পাতার উপরে ও বাইরের দিকটায় যদি হালকা চাপ দেওয়া যায়, তাহলে আরাম মিলবে। ব্যথার উপশমে পায়ের পাতার সামনে ও পিছনের দিকে মাসাজ করা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের কথায়, স্কুইজ ও রিলিজ টেকনিকে মাসাজ করলে হেডেক থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।


স্নায়ুতন্ত্রকে সবল করে - পায়ের সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের যোগ রয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের কথায়, পায়ের পাতার নিচে প্রথম ভার্টিব্রা থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় পায়ের সঙ্গে শরীরের নার্ভাস সিস্টেমের অবিচ্ছেদ্য যোগাযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে যদি পায়ের উপরে চাপ দেওয়া হয় ও ৩০-৪৫ সেকেন্ড পর্যন্ত মাসাজ করা হয়, তাহলে আরও সবল হয়ে ওঠে স্নায়ুতন্ত্র। স্নায়ুতন্ত্রের প্রক্রিয়াগুলি সচল হয়। একাধিক স্নায়ুর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে হাত গোলাকারভাবে ঘুরিয়েও পায়ে মালিশ করা যেতে পারে।