১০ বছর পর কেন ফের রাজ্য রাজনীতির ভরকেন্দ্র নন্দীগ্রাম?
রাজ্য রাজনীতিতে ফের ভরকেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে নন্দীগ্রাম। মধ্যিখানে পেরিয়ে গিয়েছে দশবছর। সেবার আর এবারের লড়াইয়ের পার্থক্য একটাই, ২০১১ ছিল অধিকারপ্রতিষ্ঠার লড়াই। আর এবার প্রেস্টিজফাইট। কিন্তু নন্দীগ্রামই কেন হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আখড়া?


রাজনৈতিক মহলের মত, শুভেন্দু বিজেপিতে যোগদানের পরেই নিজের গোল সেট করেছেন। অবিভক্ত মেদিনীপুর দখলের কথা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। এই বার্তা তৃণমূলের নজরও টেনে নিয়ে গিয়েছে ওই ৩৫ টি আসনেই। আর ইতিহাসগত কারণেই এই ৩৫ টি আসনের হটস্পট নন্দীগ্রাম।


২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রাম হত্যাকাণ্ডের সময়ে আগাগোড়া লড়াইযের ময়দানে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর আন্দোলনের জমিকে শক্ত করেছিল অধিকারী পরিবার তথা শিশির অধিকারীর সাংগঠনিক দক্ষতা। আজ ১০ বছর পরে সেই ইতিহাস থেকেই ডিভিডেন্ট চাইছেন অধিকারীরা।


২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রাম হত্যাকাণ্ডের সময়ে আগাগোড়া লড়াইযের ময়দানে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাঁর আন্দোলনের জমিকে শক্ত করেছিল অধিকারী পরিবার তথা শিশির অধিকারীর সাংগঠনিক দক্ষতা। আজ ১০ বছর পরে সেই ইতিহাস থেকেই ডিভিডেন্ট চাইছেন অধিকারীরা।


অবিভক্ত মেদিনীপুরের ৩৫ আসনের মধ্যে ১৬টি আসন পূর্ব মেদিনীপুরে, ১৫ টি পশ্চিম মেদিনীপুরে আর ঝাড়খণ্ডে রয়েছে ৪টি আসন। ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে এই ৩৫টি আসনের মধ্যে ৩০টিই ছিল তৃণমূলের। কিন্তু ২০১৯ লোকসভা ভোটে দেখা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম গেরুয়া রঙে ছেয়ে গিয়েছে। কাজেই বিজেপি মনে করে এর সঙ্গে জুড়তে হবে শুধু পূর্ব মেদিনীপুর, আর তাতেই তাদের অস্ত্র শুভেন্দু অধিকারী। রাজনৈতিক মহলের মত, ভূমিপুত্র শুভেন্দুও চান লড়াইয়ের চেনামাঠ কাঁথি এবং নন্দীগ্রামকেই বেসক্যাম্প হিসেবে দেখতে।


অন্য দিকে তৃণমূলের ক্ষেত্রে নন্দীগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ অন্য কারণে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে সর্বভারতীয় রাজনৈতিক ইমেজ তা তৈরিই হয়েছে নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুরের মতো আন্দোলনকে কেন্দ্র করে। তাই কঠিন লড়াইটা তিনি সেখান থেকে শুরু করলে দল চাঙ্গা হবে তাঁকে দেখেই, এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।


তাছাড়া প্রথমে সুপ্রকাশ গিরি সম্পর্কে আস্থা প্রকাশ করে প্রার্থী হিসেবে মমতার নিজের নাম ঘোষণার অর্থ শুভেন্দুর নন্দীগ্রাম তৎপরতা ভাবাচ্ছে তৃণমূলের অন্দরমহলকেও।


নন্দীগ্রামে ২৩ শতাংশের বেশি সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। সেটা মাথায় রাখলে বিজেপির থেকে নন্দীগ্রামে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনটাই মত রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের।


শুভেন্দু ইস্তফা দিয়েই ভাঙন ধরানোর বার্তা দিয়েছিলেন। তাঁর কথা ফলছেও। ইতিমধ্যেই ইস্তফা দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের যব তৃণমূল সম্পাদক রাধাকান্ত দাঁ। হলদিয়ার বিদায়ী পুরপ্রধান শ্যামল আদক। লালমাটির দিলীপ ঘোষ আর বালুমাটির শুভেন্দু অধিকারীর ধাক্কা বালিয়াড়ির বাঁধ আটকাতে, দলের নীচুতলাকে ভরসা দিতে তৃণমূল নেত্রীকে আসরে নামতেই হত। নন্দীগ্রামকে সামনে রেখে সেই কাজটাই করেছেন মমতা বন্দ্যোরপাধ্যায়।