করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) ডাবল মিউট্যান্টেই (Double Mutant) সারা দেশে হাহাকার। আর এবার সেই ডাবল মিউট্যান্টের আতঙ্কের মধ্যেই চিন্তা বাড়ালো ট্রিপল মিউট্যান্ট (Triple Mutant Corona)। এই ট্রিপল মিউট্যান্ট আরও শক্তিশালী বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়েছে এই মিউট্য়ান্ট। আর সেই রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথমেই এগিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (Corona in Bengal)। আর তাই এই মিউট্যান্টের নাম দেওয়া হয়েছে বেঙ্গল স্ট্রেইন (Bengal Strain)।
দেশে নতুন করে সংক্রমণের পিছনে এতদিন ডাবল মিউট্যান্টকেই দায়ী মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু এরই মধ্য়ে তিনবার রূপ বদলে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে এই মারণ ভাইরাস। এমনকী, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকলেও ট্রিপল মিউট্যান্ট থাবা বসাতে সক্ষম। এই মিউট্যান্ট আগের দুটির থেকে আরও বেশি সংক্রামক বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকী টিকাকরণ হয়ে থাকলেও এই ট্রিপল মিউট্যান্টকে আটকানো কঠিন। অনেকেই ভাবেন আগে করোনা হয়ে থাকলে তুলনামূলক ভাবে ঝুঁকি অনেকটাই কম। কিন্তু ট্রিপল মিউট্যান্টে আক্রান্ত হতে পারেন তারাও, যারা আগে করোনায় ভুগেছেন।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, কোভিড ১৯ এর তিনটি আলাদা স্ট্রেইন মিলে তৈরি এই ট্রিপল মিউট্যান্ট বা বেঙ্গল স্ট্রেইন। ফলে এর শক্তি আগেরগুলির তুলনায় আরও বেশি। এই মিউট্যান্টেকর সংক্রমণ যেমন দ্রুত হচ্ছে, তেমনই আক্রান্ত হলেও দ্রুত শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারতের যে রাজ্যগুলিতে ঝড়ের গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে তার জন্য দায়ী ট্রিপল মিউট্যান্ট। পশ্চিমবঙ্গে এই মিউট্যান্টের বাড়বাড়ন্ত সবচেয়ে বেশি। তাই এর নাম রাখা হয়েছে বেঙ্গল মিউট্যান্ট। একই সঙ্গে ডাবল ও ট্রিপল মিউট্যান্ট থাবা বসাচ্ছে মানুষের শরীরে। এখনই নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে এই মিউট্যান্ট আরও মারাত্মক রূপ নেবে এবং সংক্রমণের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই সাবধান করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে এই নতুন মিউট্যান্ট আরও কতটা ভয়ঙ্কর তা বুঝতে আরও গবেষণা দরকার বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যে কোনও ধরনের ভাইরাসই চরিত্র বদল করতে থাকে যার ফলে তৈরি হয় নতুন মিউট্যান্টের। সেরকমই করোনা তিনবার রূপ বদলেছে। তবে প্রশ্ন উঠছে করোনার জন্য মানুষ এখন যে ভ্যাকসিন নিচ্ছে তাতে কি এই মিউট্যান্টকে আটকানো যাবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছতে গেলে আরও গবেষণা প্রয়োজন। ভ্যাকসিন কতটা কার্যকর হয় তাও পরীক্ষা করে দেখা তবে এখনই তৎপরতা না দেখালে ভাইরাস আরও ছড়াবে এবং ভবিষ্যতে চরিত্র বদল করে আরও সাংঘাতিক হয়ে উঠবে।
তবে এই ভয়াবহতার মধ্যে একটু স্বস্তি দিয়েছে ICMR। কারণ তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাকসিন করোনার একাধিক প্রজাতিকে বিনাশ করতে সক্ষম। তবে ট্রিপল মিউট্যান্ট বিনাশ হয় কি না সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে আরও গবেষণা দরকার বলে তারা জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, দেশের দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা এবার ৩ লক্ষ ছাড়াল ৷ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ১৫ হাজার ৭৩৫ জন।