

২০২১-এ কঠিন লড়াই৷ একদিকে দলে ভাঙন ধরিয়ে প্রবল প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে আসছে বিজেপি, অন্যদিকে জোট বেঁধেছে বাম-কংগ্রেস৷ এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের যাবতীয় আক্রমণ ভোঁতা করে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরতে তৃণমূলের পাখির চোখ পাঁচটি বড় জেলার ১০৯টি আসন৷


যে পাঁচটি জেলাকে রাজ্যের শাসক দল টার্গেট করছে সেগুলি হল- উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, কলকাতা, হাওড়া ও হুগলি৷ এই পাঁচ জেলার ১০৯টি বিধানসভা আসনকেই পাখির চোখ করছে তৃণমূল৷ শাসক দলের অন্দরের অঙ্ক বলছে, এই ১০৯টি আসনে বাজিমাত করতে পারলে রাজ্যে কেল্লা ফতে৷


২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী ২৯৪টির মধ্যে বিজেপি এগিয়ে ছিল ১২১টি বিধানসভা আসনে৷ আর তৃণমূল এগিয়ে ছিল ১৬৪টি আসনে৷ বিজেপি-তো ইতিমধ্যেই দাবি করতে শুরু করেছে, লোকসভার নির্বাচনের থেকেও বর্তমানে রাজ্যে তাঁদের জনসমর্থন বেড়েছে৷ দলে এসেছেন শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতা৷ তাই বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ২০০-র বেশি আসনে জিতবে বলেই দাবি করছেন বিজেপি নেতারা৷


পাঁচটি বড় জেলার মধ্যে উত্তর চব্বিশ পরগণায় রয়েছে ৩৩টি আসন৷ ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে এর মধ্যে ২৭টিতেই জিতেছিল তৃণমূল৷ বাম ও কংগ্রেস জিতেছিল ৩টি করে আসনে৷ ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে ২১টিতে এগিয়ে ছিল তারা৷ লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এই জেলায় ১২টি আসনে এগিয়ে ছিল বিজেপি৷ বাম ও কংগ্রেস কোনও আসনেই এগিয়ে ছিল না৷


দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার দিকে তাকালে দেখা যাবে, ২০১৬-তে জেলার ৩১টির মধ্যে ২৯টি আসনেই জয়ী হয় তৃণমূল৷ বাকি দুই আসনে জয়ী হয় বামেরা৷ আর ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পরিসংখ্যান বলছে, জেলার ৩১টি আসনেই এগিয়ে ছিল শাসক দল৷


হুগলি জেলার মোট আসন সংখ্যা ১৮৷ ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচন অনুযায়ী তার মধ্যে ১৬টিতে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল৷ বাম ও কংগ্রেস জিতেছিল ১টি করে আসনে৷ কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে মাত্র ১০টি আসনে এগিয়ে ছিল তারা৷ বিজেপি এগিয়ে গিয়েছিল ৮টি আসনে৷ তার মধ্যে ছিল সিঙ্গুরও৷


হাওড়ার দিকে নজর দিলে দেখা যাবে, ২০১৬ সালে জেলার মোট ১৬টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১৫টি দখল করেছিল তৃণমূল৷ বাকি ১টি আসনে জেতে কংগ্রেস৷ ২০১৯-এও ছবিটা বিশেষ বদলায়নি৷ ১৬টির মধ্যে ১৫টি আসনেই এগিয়ে ছিল তৃণমূল, অন্য আসনটিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি৷


সব শেষে কলকাতার দিকে নজর দেওয়া যাক৷ কলকাতার মোট বিধানসভা আসন ১১টি৷ ২০১৬ সালে ১১টিতেই জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস৷ কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ৮টি আসনে এগিয়ে ছিল শাসক দল৷ ৩টি আসনে এগিয়ে যায় বিজেপি৷


লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে এই পাঁচটি বড় জেলার ১০৯টি আসনে তুলনামূলক ভাবে সুবিধেজনক জায়গায় থাকলেও বেশ কিছু কাঁটাও রয়েছে তৃণমূলের৷ সেগুলি হল আমফানের ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ, মতুয়াদের সমর্থন কোনদিকে থাকে, আব্বাস সিদ্দিকির নতুন দল কতটা ভোট কাটতে পারে এবং অবশ্যই শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব৷