কাশীবোস লেন-নাকতলা-সুরুচি থেকে অজেয় সংহতি, ভার্চুয়ালি দেখুন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির ছবি...
পুজো এল বলে। তাই কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ সব মণ্ডপেই চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। মণ্ডপের ছবি থেকে থিমের খুঁটিনাটি দেখুন news18bangla.com -র সঙ্গে।


*পুজো এল বলে। তাই কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ সব মণ্ডপেই চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। সেখান থেকেই কিছু মণ্ডপের ছবি এবং থিমের খুঁটিনাটি রইল news18bangla.com -র পাঠকদের জন্য। কলকাতার ব্লকব্লাস্টার পুজোগুলির মধ্যে প্রথম সারিতেই নাম আসে নিউ আলিপুর সুরুচি সংঘের। শিল্পী ভবতোষ সুতারের ভাবনায় এবারে সুরুচির দুর্গা গড়ছেন সমাজের দুর্গারাই। শিল্পী মল্লিকা দাস সুতারের তত্বাবধানে সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মহিলারা সাজিয়ে তুলছেন মৃন্ময়ীকে। এবারে সুরুচি সংঘের থিমের পোশাকই নাম উৎসব নয়, মানুষের পুজো। প্রতিবেদন: শুভাগতা দে।


*সন্তোষপুর লেকপল্লীর এবারের থিম 'মাটির কান্না'। ৬৩ তম বছরে শিল্পী সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা এবং সৃজনে সেজে উঠছে তাদের মন্ডপ। লেকপলীর প্রতিমা গড়েছেন প্রথিতযশা শিল্পী সনাতন দিন্দা। দ্বিতীয়াতেই সাধারণ সরশনারথীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে মণ্ডপ, জানিয়েছেন ক্লাবের সম্পাদক সোমনাথ দাস।


*দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম ক্রাউডপুলার বালিগঞ্জ কালচারালের এবারের থিমের পোশাকি নাম 'গজে গমন শস্য শ্যামলা ধরিত্রী'। শিল্পী বিমান সাহার ভাবনায় সেজে উঠেছে মণ্ডপ। পুজো কমিটির কার্যনির্বাহী সম্পাদক সপ্তর্ষি বসু জানিয়েছেন, থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিমা বানিয়েছেন প্রয়াত শিল্পী অরুণ পাল এবং তাঁর সহকারী শিল্পীরা।


*দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম ক্রাউডপুলার শিবমন্দিরের এবারের থিম 'দেবী'। শিল্পী সঞ্জীব ঘোষের তত্বাবধানে এবং শিল্প নৈপুন্যে সেজে উঠেছে তাদের মন্ডপ। সত্যজিৎ রায় বহুবছর মুদিয়ালি এলাকায় বসবাস করেছেন। তাই শতবর্ষে তাঁর প্রতি সম্মান জানাতেই শিবমন্দিরের এই ভাবনা, জানিয়েছেন ক্লাবের অন্যতম কর্তা পার্থ ঘোষ। শিবমন্দিরের প্রতিমা গড়েছেন শিল্পী পিউ পাল। ১৭ অক্টোবরই দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে মণ্ডপ।


*উত্তর কলকাতার যে পুজোগুলো না দেখে ঠাকুর দেখা হয়না, তার অন্যতম কাশী বোস লেন। তাদের এবারের থিমের পোশাকই নাম 'দেবী ঘট'। শিল্পী পরিমল পাল সাজিয়ে তুলছেন মণ্ডপ। কাশী বস লেনের সম্পাদক সোমেন দত্ত বলেন, "এবারে করোনা আবহে বহু সতর্কতানেওয়া হয়েছে। বাড়ির বাইরে অকারণে না বেরনর আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। পুষ্পাঞ্জলি যাতে সকলে মনে মনে বাড়ি থেকেই দিতে পারেন তার বন্দোবস্ত করছি। মণ্ডপে এলে ফুলের ব্যবস্থা থাকছে না।" তৃতীয়াতেই খুলে দেওয়া হবে কাশী বোস লেনের মণ্ডপ।


*কলকাতার প্রাণকেন্দ্র থেকে বেশ খানিকটা যেতে হলে 'কুছ পরোয়া নেহি'। কারণ পুজোপ্রেমীদের কথায়, ঠাকুরপুকুর এসবি পার্কের মণ্ডপ না দেখলে নাকি, পুজো দেখার খামতি থেকে যায়। সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে ঠাকুরপুকুর এসবি পার্কের থিম '#জীবন-যুদ্ধ-বিগ্রহ'। শিল্পী পার্থ দাশগুপ্তের পরিকল্পনা এবং সৃজনে সেজে উঠেছে আবহ। প্রতিমাও গড়ছেন শিল্পী নিজেই। পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা সঞ্জয় মজুমদার জানিয়েছেন, থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আবহ ভাষ্য রচনা করেছেন কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা সৈকত কুণ্ডু এবং পাঠ করবেন দেবশঙ্কর হালদার। তৃতীয়ার দিনই দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে মণ্ডপ।


*শহরের ঠিক প্রাণকেন্দ্রে যে পুজোগুলি হয়, তার অন্যতম 'সমাজসেবী'। শিল্পী প্রদীপ দাসের ভাবনায় 'সেতু' থিমে সেজে উঠছে সমাজসেবীর মণ্ডপ। সমাজসেবী এবারে তাদের পুজো বাজেটের অনেকটা অংশ ব্যয় করছে হিঙ্গলগঞ্জে। পুজো কমিটির সম্পাদক অরিজিত মৈত্র জানিয়েছেন, "৭৫তম বর্ষে আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত ৭৫টি পরিবারের পাকাপাকি পুনর্বাসনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই উদ্দেশেই থিমের নাম 'সেতু'। সমাজসেবীর প্রতিমা গড়েছেন শিল্পী পিন্টু শিকদার।


*হরিদেবপুর অজেয় সংহতির এবারে থিম 'সংহতি'। তাদের এবারে হীরক জয়ন্তী বর্ষ। বহু পরিকম্পনা থাকলে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি করোনা আবহে। অজেয় সংহতির মণ্ডপ সাজিয়ে তুলেছেন শিল্পী দীপাঞ্জন দে এবং তাঁর সহযোদ্ধা অভিজিৎ চৌধুরী।


*রাসবিহারী মোড় সংলগ্ন ৬৬ পল্লীর পুজো এবারে সেজে উঠছে একেবারে অন্যভাবে। নবীন শিল্পী দীপ দাস এবং ঈশিকা চন্দ্রের ভাবনায় সেজে উঠছে মণ্ডপ। সত্যজিৎ রায়ের শতবর্ষে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েই সেজে উঠেছে ৬৬ পল্লীর মণ্ডপ। থিমের পোশাকই নাম 'অপরাজিত অপু'।


*দক্ষিণ কলকাতার যে পুজো না দেখলে অনেকটা মিস হয়ে যায়, সেটির নাম নাকতলা উদয়ন সংঘ। ৩৪ তম বছরে পা দেওয়া নাক্তলা উদয়নের এবারের থিম 'বেকার মেঘেরা চলল দূর/ শরৎ আকাশে ব্যাথার সুর'। শিল্পী ভবতোষ সুতারের কথায়, "অতিমারীর ভয়ঙ্কর প্রভাবে মানব সমাজ জীবন মৃত্যুর মুখোমুখি। সভ্যতার গতি স্তব্ধ। তাই আড়ম্বরের জন্য নয়, এবারে হচ্ছে একেবারেই দায়বদ্ধতার পুজো।