ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত। দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও দক্ষিণ আন্দামান সাগরে নিম্নচাপ ঘনীভূত হচ্ছে। মঙ্গলবার নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বুধবার। ঘূর্ণিঝড় শক্তিশালী থেকে অতি শক্তিশালী হবে। এই পড়বে ক্রমশ দিক পরিবর্তন করতে পারে বারবার। এমনটাই ইঙ্গিত আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের।
ঘূর্ণাবর্ত ঘনীভূত হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। নিম্নচাপ দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং দক্ষিণ আন্দামানসাগরে আরও ঘনীভূত হবে মঙ্গলবার ৯ মে। পরিণত হবে গভীর থেকে অতি গভীর নিম্নচাপে। বুধবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে শক্তিশালী রূপে তা পরবর্তী কালে আছড়ে পড়বে বাংলাদেশ ও মায়ানমার সীমান্তে।
সেই সময় এর অবস্থান হবে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর আন্দামান সাগর। গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে এই সিস্টেম মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোবে। সেই সময় এর গতিমুখ থাকবে উত্তর অভিমুখে। দশই মে বুধবার গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে মধ্য বঙ্গোপসাগরে। ভারতের মৌসম ভবন জানিয়ে দিল এই তথ্য। ঘূর্ণিঝড় এর অভিমুখ থাকবে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর। ভারতের মৌসম ভবন জানিয়ে দিল এই ঘূর্ণিঝড় ল্যান্ডফল করার সম্ভাবনা বাংলাদেশ ও মায়ানমার সীমান্ত এলাকা।
যদিও বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মডেল ভিন্ন ভিন্ন মত দিচ্ছে নিম্নচাপ তৈরি থেকে ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ এবং ল্যান্ড ফল নিয়ে। ভারতের মৌসম ভবনের সঙ্গে একমত আন্তর্জাতিক গ্লোবাল ফোরকাস্ট সিস্টেম বা জিএফএস জানাচ্ছি আটই মে সোমবার নিম্নচাপে পরিণত হবে সিস্টেমটি। যদিও আরো দুটি মডেল বিশেষ করে ইউরোপিয়ান মডেল জানাচ্ছি ১০ মে বুধবার নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। অন্য মডেলটি মধ্যস্থতা করে মঙ্গলবারে নিম্নচাপের পূর্বাভাস দিচ্ছে।
মধ্য বঙ্গোপসাগরে এই ঘূর্ণিঝড় দিক পরিবর্তন করবে। এটা সুনিশ্চিত হলেও বিভিন্ন মডেল বিভিন্ন দিকে তার গতিপথ সুনির্দিষ্ট করছে। যদিও ভারতের মৌসম ভবন নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার আগে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে নারাজ। ইউরোপ ও আমেরিকার দুটো মডেলই মোটামুটি ভাবে নিশ্চিত যে মধ্য বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড় টি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে বাংলাদেশ মায়ানমার সংলগ্ন উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে মায়ানমারের রায়খান এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে এটি স্থলভাগে ঢুকতে পারে।
প্রাথমিকভাবে উত্তরমুখী হয়ে এই ঘূর্ণিঝড় মধ্য বঙ্গোপসাগরের দিকে এগোতে পারে। এটি গতিপথ পরিবর্তন করবে। প্রাথমিকভাবে এটি বিশাখাপত্তনমের দিকে বা অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের দিকে কিছুটা এগোলেও তারপর বঙ্গোপসাগরের মধ্যেই আরো উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে এগোতে থাকবে। ক্রমশ এর সঙ্গে দূরত্ব কমবে ভুবনেশ্বর ও আমাদের রাজ্যের উপকূলের। এরপর উত্তর-পূর্ব দিকে এর অভিমুখ হয়ে এটি আরও শক্তিশালী হবে। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় থেকে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এর অভিমুখ দক্ষিণ পূর্ব বাংলাদেশ অথবা মায়ানমার উপকূল হতে পারে বলে আন্তর্জাতিক মডেল জানাচ্ছে। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই এটি উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যদিও এন সি ইউ এম মডেল যেটি ব্রিটেন অস্ট্রেলিয়া সাউথ কোরিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের যৌথ মডেল যে মডেলটি নিউমেরিক্যাল ওয়েদার প্রেডিকশন বা এন ডব্লিউ পি অনুযায়ী তাদের পূর্বাভাস নির্ধারিত করে। এই মডেল অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া সিস্টেম কি খুব বেশি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন না। অন্য মডেলের থেকে একেবারে ভিন্ন মত দিচ্ছে এই মডেল। এই মডেল অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকেই এটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। অর্থাৎ একেবারে তামিলনাডু উপকূলের দিকে। এরপর সমুদ্রের মধ্যেই এটি দিক পরিবর্তন করে দক্ষিণ-পূর্ব আরব সাগরে গিয়ে মিলিয়ে যাবে।