

বাঙালি জননেতা নেই৷ এই সঙ্কটেই দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিল রাজ্য বিজেপি৷ অন্য দল থেকে হলেও বাঙালি কোনও জননেতার খোঁজে ছিল বিজেপি নেতৃত্ব৷ শুভেন্দু অধিকারী দলে যোগ দিলে বিজেপি-র সেই সন্ধান অনেকটাই মিটবে, এ বিষয়ে একমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা৷ সঙ্গে এই প্রশ্নও থাকছে, শুভেন্দু অধিকারীকে কীভাবে কাজে লাগাবে বিজেপি নেতৃত্ব? Photo-File


নন্দীগ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুরের গণ্ডী ছাড়িয়ে গত কয়েক বছরে গোটা রাজ্য জুড়েই শুভেন্দুর জনভিত্তি এবং সমর্থন তৈরি হয়েছে৷ মুখে তৃণমূল নেতৃত্ব যাই বলুন না কেন, শুভেন্দুর সঙ্গে দলের দূরত্ব যত বেড়েছে, বিভিন্ন জেলার নেতাদের বেসুরো মনোভাবে তা ভালভাবে টের পেয়েছে রাজ্যের শাসক দল৷ এতদিন মুকুল রায় সহ তৃণমূলের ছোটবড় অনেক নেতা বিজেপি-তে গেলেও কোনও জনপ্রিয় বাঙালি জননেতাকে খুঁজে পায়নি বিজেপি৷ যে কারণে অরাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকেও মুখ খুঁজতে হচ্ছিল বিজেপি-কে৷


অধ্যাপক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর কথায়, 'বিজেপি-র বাঙালি মুখের সন্ধান অবশ্যই শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে পূরণ হবে৷ আমার ধারণা বিজেপি শুভেন্দুকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবেই কাজে লাগাবে৷ তাঁকে কাজে লাগিয়েই বিজেপি ২০২১-এর ভোটের বৈতরণীও পার হতে পারবে৷ তাঁর প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েও সরকার পরিচালনার মুখ হিসেবে তুলে ধরতে পারবে বিজেপি৷


আইআইএমসি ঢেঙ্কানলের অধ্যাপক সম্বিত পালও মনে করছেন, বাঙালি জননেতা হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীর প্রভাবকে অস্বীকার করার জায়গা নেই৷ তিনি বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর শুভেন্দু অধিকারীই তৃণমূলে সবথেকে জনপ্রিয় নেতা৷ এ বিষয়ে কোনও সংশয় নেই৷ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় শুভেন্দুর জনভিত্তি রয়েছে৷ তবে শুভেন্দুকে বিজেপি কীভাবে কাজে লাগায়, সেটাই দেখার৷ '


অধ্যাপক সম্বিত পাল আরও একটি বিষয় তুলে ধরেছেন৷ তিনি বলেন, 'বিজেপি-র মূল লক্ষ্য তৃণমূলকে দুর্বল করা৷ শুভেন্দু অধিকারী কী শর্তে বিজেপি-তে যাচ্ছেন তা আমি জানি না৷ কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী যে জীবন ধারা, তিনি যে আদর্শের কথা বলেন, তাতে বিজেপি- আরএসএস- এর ভিতরে খাপ খাইয়ে নেওয়া তাঁর পক্ষে তুলনামূলক সহজ হবে বলেই মনে হয়৷'


তবে শুভেন্দু বিজেপি-তে গিয়েই কতটা গুরুত্ব পাবেন, তাঁকে বাড়তি গুরুত্ব দিলে রাজ্য বিজেপি-র ভিতরেও পুরোন নেতাদের বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে কি না, সেই আশঙ্কা থাকছেই৷ কিন্তু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্ব যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন, তা মুখ বুজেই মেনে নিতে হবে রাজ্যের নেতাদের৷