

আপনার সর্দি-কাশির ধাত রয়েছে? মরশুম বদলের সময় ঘন ঘন নাক টানা, হাঁচি-কাশি লেগেই থাকে? তা হলে আপনি অনেকটা নিশ্চিন্ত থাকতেই পারেন। কোভিড ১৯ সংক্রমণের সম্ভাবনা আপনার অনেকটাই কম। এমনই বলছে সাম্প্রতিক গবেষণা। তার কারণ, আপনার শরীরে ইতিমধ্যে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে আছে, যা নতুন ভাইরাসের সঙ্গে লড়ে শরীরকে দুর্বল হয়ে যাওয়া থেকে আটকায়। Representational Image


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উঠে আসা তথ্য বলছে, অনেকেরই আগে করোনা সংক্রমণ হয়েছে। যা কি না 'কমন কোল্ড করোনা ভাইরাস'। অনেকেরই সর্দি-কাশি, হাঁচির ধাত রয়েছে। ঘন ঘন ঠাণ্ডা লাগে। এতদিন ভাবা হয়েছিল তাঁদের বুঝি রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বা ইমিউনিটি খুব দুর্বল। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে করোনা ভাইরাসের অনেক রকম প্রকারভেদের মধ্যে কোভিড ১৯ ভাইরাস একটি। Representational Image


এ ছাড়াও নানা রকমের করোনা ভাইরাস রয়েছে, এবং আমাদের মধ্যে অনেকেরই এর আগে নন সার্স কেোভ ২ সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে। উপসর্গ হিসেবে সাধারণ সর্দি, কাশি, জ্বর এই সব ছিল, এক সময়ে তা সেরেও গিয়েছে। এবং শরীরে ওই ভাইরাসের অ্যান্টিবডি ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছে। Representational Image


হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনা রোগীদের ক্ষেত্রেও এই কথা সত্যি। 'কমন কোল্ড' ভাইরাসে আগেই আক্রান্ত হয়েছে এমন কোভিড ১৯ রোগীদের সংক্রমণ মৃদু হচ্ছে। উপসর্গ তেমন বাড়াবাড়ি রকমের নয়। এঁদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হলেও ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের প্রয়োজন হচ্ছে কম। এমনকি কৃত্রিম ভেন্টিলেশনের প্রয়োজনও তুলনামূলক ভাবে কম হচ্ছে। মানে, এ বার নতুন করে কোভিড ১৯ ভাইরাস শরীরে এলে তার সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা রয়েছে শরীরের অ্যান্টিবডির। জার্নাল অফ ক্লিনিকাল ইনভেস্টিগেশন-এ প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা। Representational Image


সম্প্রতি এমবায়ো নামের এক জার্নালে এই বিষয়ে আরও একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় বলা হয়েছে কোভিড ১৯ যে ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে, সেই সার্স কোভিড ২ আমাদের শরীরের মেমোরি বি সেলকে অ্যাক্টিভ করে তোলে। এই মেমোরি বি কোষ প্যাথোজেনকে চিহ্নিত করে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। পরে আবার প্যাথোজেন শরীরে প্রবেশ করার চেষ্টা করলেই দ্রুত কাজে নেমে পড়ে মেমোরি বি সেল। সে ভাইরাসকে চিহ্নিত করে সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগেই তাকে সারিয়ে তোলে। মেমোরি বি সেল কয়েক দশক পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। যাঁরা এর আগে ঘন ঘন সর্দিতে ভুগতেন, তাঁদের শরীর সহজেই সার্স কোভ-২ ভাইরাসকে চিহ্নিত করতে পারবে এবং এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি করে ফেলবে। আগামী দিনে কোভিড ১৯ ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ক্ষেত্রেও এই গবেষণা খুব কাজে লাগবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানী এবং চিকিৎসক মহল। Representational Image