

করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত খানিকটা কমলেও রোগ পুরোপুরি এখনও যায়নি। রোগীরা অনেকেই নতুন ধরনের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকদের সম্মুখীন হচ্ছেন। আর সেই নতুন উপসর্গে রয়েছে নিউমোনিয়া এবং তাঁদের ফুসফুসের এক্স-রে করে দেখা যাচ্ছে সাদা দাগ পড়ে গিয়েছে সেখানে। আগে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছিলেন। এখন আগেই নিউমোনিয়া হচ্ছে রোগীদের। করোনাভাইরাস ধীরে ধীরে নিজের চরিত্রের বদল করছে ঠিকই। কিন্তু কখন এটি ভয়াবহ রূপে ফিরে আসবে তা কিন্তু এখনও স্পষ্ট নয়।


করোনাভাইরাস হওয়ার পর শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুস। অনেকের ক্ষেত্রেই ফুসফুস বিকল হয়ে গিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছে। চিকিৎসকেরাও যে কোনও করোনা রোগীর প্রথমে ফুসফুসের পরিস্থিতিই যাচাই করে দেখতে চান। ফলে এক্স-রে করার পরামর্শ দেন। সেখানে যদি রিপোর্টে সাদা দাগ ধরা পড়ে তবে কিন্তু সাবধান হওয়ার সময় এসেছে। সিটি স্ক্যান করলে আরও ভালো করে করোনার প্রভাব ধরা পড়ে।


কোহিনুর হাসপাতালের চেস্ট স্পেশ্যালিস্ট ডক্টর রাজারতন সদাভার্তের মতে, করোনা রোগীদের মধ্যে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অস্বাভাবিকতা লক্ষ করা যাচ্ছে। করোনার মতো উপসর্গ থাকছে, তবে রিপোর্ট করোনা পজিটিভ নয়। সবচেয়ে বেশি প্রভাব থাকছে ফুসফুসের উপর। ঠিক সময়ে এর চিকিৎসা না হলে ফুসফুস বিকল হয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।


সংক্রমণ স্পেশ্যালিস্ট আরেক চিকিৎসক ডক্টর ওম শ্রীবাস্তবের মতে, কোভিড ১৯ নিয়ে গবেষণাতেই উঠে আসছে যে, কত তাড়াতাড়ি এবং কী ভাবে এই ভাইরাস নিজের চরিত্র বদলাচ্ছে। করোনার আগে ৬-৭ দিন ধরে উপসর্গ দেখে নিউমোনিয়া হয়েছে ধরা যেত। এখন ২ দিনে নিউমোনিয়া বাসা বাঁধছে শরীরে, ফুসফুসের বারোটা বেজে যাচ্ছে মুহূর্তে।


নানাবতী হাসপাতালের সিনিয় রেডিওলজিস্ট ডক্টর নিমিশ কামাত বলেছেন, করোনা রোগীদের বয়সের হেরফেরও চোখে পড়ছে। এখন অনেক কম বয়সীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রায় ৪-৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে কম বয়সী রোগীর পরিমাণ। প্রথম ৭-১৬ দিনের মধ্যেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে শরীরের। সেই সময়ই রোগীর সবচেয়ে ভালো চিকিৎসার প্রয়োজন।