

আতঙ্ক নেই। বরং নিয়ন্ত্রণ আছে। আছে মারণ ভাইরাসটা সম্পর্কে জনসচেতনতা। আছে সরকারি নির্দেশিকা মেনে চলার মানসিকতা। আর তাতেই চিন বা ইতালি হওয়ার রাস্তায় পা বাড়িয়েও এখন তুলনায় নিরাপদ, সুরক্ষিত ফ্রান্স। Story: PARADIP GHOSH


সরকারি পরিসংখ্যান বলছে,২৫ শে মার্চ রাত পর্যন্ত ফ্রান্সে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ২২৩০৮। সেরে উঠেছেন ৩২৮১ জন। মারা গিয়েছেন ১১০০ মানুষ। মোট আক্রান্তের ২৫%। মারণ ভাইরাস COVID-19 এর প্রাথমিক ঝাপটা সামলে দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ল্যান্ড অফ দা ফ্র্যাঙ্কস।


ফ্রান্স বলতে এক লহমায় চোখে ভাসে আইফেল টাওয়ার, মিউজে দ্য লভ। প্রেম-ভালোবাসার দেশ হিসেবে পরিচিত ফ্রান্সেও করোনা প্রভাব আটকাতে লক-ডাউন পরিস্থিতি। বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে ফিল-আপ করতে হয় সরকারি নির্দেশিকার ফর্ম। জরুরী পরিস্থিতিতে কেন বেরোবেন? কখন বেরোবেন? কতক্ষণ বাইরে থাকবেন? কোথায় যাবেন? সরকারি নির্দেশিকা ফর্মে ইঞ্চি ইঞ্চি তথ্য ভরে তবেই বাড়ির বাইরে পা রাখার অনুমতি মিলছে ফরাসিদের।


আর তথ্যে সামান্য ১৯-২০ হলেই অন-স্পট জরিমানা গুনতে হচ্ছে ১৩৫ ইউরো। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ হাজার টাকা। জরিমানার চোখ রাঙানিতে শৃঙ্খলার রাস্তায় ফিরেছেন ফরাসিরা। শুধু ফরাসি বললে একটু ভুল বলা হয়। প্যারিস, নিসের মত শহরগুলোয় ফরাসিদের থেকে এখন শরণার্থীদের ভিড় বেশি। শুধু প্যারিসেই এখন মরোক্কান, তিউনিসিয়ান, নাইজেরিয়ানদের মত বাংলাদেশীদের দাপাদাপি। রয়েছেন প্রচুর সংখ্যক পাঞ্জাবিও।


কলকাতা থেকে এক দশক আগে ফ্রান্সে পাড়ি জমানো বাঙালি শুভঙ্কর রায় বলছিলেন, "চাপা টেনশন আছে। তবে আতঙ্ক নেই। সরকারের ওপর আস্থা আছে। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।" প্যারিসের বাইরে আর্জেন্তই শহরে বেসরকারি সংস্থায় বাঙালি হিসাবরক্ষকের কাজ করেন বছর চল্লিশের বাঙালি। বরং গলা ভারী হয়ে যায় বাংলাকে নিয়ে আলোচনায়। "কলকাতা ঠিক আছে তো?" দূর দেশের কাছের মানুষটার গলায় এক রাশ উৎকন্ঠা আর উদ্বেগ তার নিজের শহরটার জন্য। শুভঙ্কর বলে চলেন, "কলকাতা আমার নিজের শহর। বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকি, ওই শহরটাকে ভোলা যায় না কী? প্যারিস সামলে নেবে। কলকাতাকে বলুন একটু নিয়ন্ত্রিত থাকতে। আপনারাও সামলে নিতে পারবেন।"