

আয়, ব্যয় এবং সঞ্চয়- এই তিনটি জিনিসের আনুপাতিক হার যদি একটু এদিক-ওদিক হয়ে যায়, তখনই দেখা দেয় সমস্যা, মাথায় চেপে বসে ঋণের বোঝা! তবে সবাই যে অমিতব্যয়িতার কারণেই ঋণভারে জর্জরিত হয়ে থাকেন, তা নয়। হোম লোন বা ভেহিকল লোনের ক্ষেত্রে তা হয় না। আবার যে সব ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য এডুকেশন লোন নিয়েছেন, তাঁদের ব্যাপারটাও আলাদা।


কিন্তু যে দিক থেকেই বিচার করা হোক না কেন, আদতে ঋণ বিষয়টা দুশ্চিন্তারই। কত দিনে তা শোধ হবে, এই ভাবনা যে সহজে পিছু ছাড়তে চায় না। তাই চলতি বছর যেমনই কাটুক না কেন, ২০২১ সালটা বরং ঋণমুক্ত থাকার সঙ্কল্পই নেওয়া যাক। দেখা যাক, কোন বিষয়ে নজর দিলে ঋণ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে না।


যথাসময়ে কিস্তি শোধ - যাঁরা কোনও কারণে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েছেন বা ক্রেডিট কার্ডের অঙ্ক শোধ করছেন বা ইএমআই চুকিয়ে দিচ্ছেন মাসে মাসে, তাঁদের যথাসময়ে কিস্তি শোধ করার ব্যাপারটা মাথায় রাখতেই হবে। না হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থা জরিমানা ধার্য করবে। পরিমাণে ঋণের বোঝা যাবে বেড়ে।


ব্যালান্স ট্রান্সফার - এই বিষয়টি কেবলমাত্র ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্যই প্রযোজ্য। অনেক ব্যাঙ্কেই একটি ক্রেডিট কার্ডের ঋণ অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করার সুবিধা থাকে। যার জন্য ব্যাঙ্ক কখনও কখনও কোনও টাকাই কাটে না, কাটলেও তার পরিমাণ হয় খুবই সামান্য। তাই ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে এই বিকল্পটি ভেবে দেখা যেতে পারে। এতে ঋণ তাড়াতাড়ি শোধ হয়ে যাবে।


প্রয়োজন বুঝে খরচ করা - মর্জিমাফিক খরচ করা তাঁদেরই মানায়, যাঁদের উপার্জন অনেক বেশি! কিন্তু সবার তো সেই সুবিধা থাকে না। তাই প্রয়োজন বুঝে খরচ করতে হবে। তা হলেই অতিরিক্ত ব্যয় এবং সেখান থেকে ঋণ নেওয়ার প্রশ্ন দেখা দেবে না।


খরচের হিসেব রাখা - এই বিষয়টি ঋণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিবার্য। প্রয়োজন বুঝে খরচ না হয় করা হল! কিন্তু তার পরেও যে সব কিছু আয়ত্তে থাকবে, এমন কোনও মানে নেই। তাই সম্ভব হলে রোজ কত খরচ হচ্ছে, তার একটা হিসেব রাখতে হবে। সে মোবাইল বা কমপিউটারের স্প্রেডশিটেই হোক বা খাতায়-কলমে হোক; তা হলেই খরচ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অন্যের কাছে হাত পাতার দরকার পড়বে না।


যতটা সম্ভব টাকা জমানো - অনেক সময়ে আপৎকালীন সঞ্চয়ের অভাবেও ধারকর্জ করতে হয়। সেই জায়গাটা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ফিক্সড ডিপোজিট, রেকারিং ডিপোজিট- এ সবের সাহায্য নেওয়া যায়। অল্প করে হলেও টাকা জমাতে পারলে সুদের হার নিয়ে তা অনেকটা হয়ে ওঠে। তবে এই জমানোর অভ্যেস জারি রাখতে হবে, মাসের শুরুতেই এই জমার অঙ্ক বেতন থেকে আলাদা করে নিতে পারলে ঝাড়া হাত-পায়ে থাকা যায়!