

সোনা! অনেক ক্ষেত্রেই সমাজের একটি বড় অংশের সম্পত্তি তথা প্রভাব-প্রতিপত্তির নির্ণায়ক হয়ে ওঠে এই মূল্যবান ধাতুটি। তবে ভবিষ্যৎ সুরক্ষা ও সঞ্চয়ের ক্ষেত্রেও বিনিয়োগের একটি বড় মাধ্যম এটি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সোনাকে অপেক্ষাকৃত স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ অপশন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এতে রিটার্নের বিষয়টিও সুনিশ্চিত। তবে বিটকয়েনে বিনিয়োগ নিয়েও অনেকে পরামর্শ দেন। অর্থনৈতিক পরামর্শদাতাদের কথায়, শর্ট টার্ম ইনভেস্টমেন্টের ক্ষেত্রে সেরা অপশন হতে পারে বিটকয়েন। কিন্তু স্থায়িত্বের দিক থেকে ততটা নির্ভরযোগ্য নয় এই ক্রিপটো কারেন্সি। এক্ষেত্রে বিনিয়োগের অপশন হিসেবে বেছে নেওয়ার আগে, বিশদে জেনে নেওয়া যাক সোনা ও বিটকয়েন সম্পর্কে।


২০০৮ সালে বিটকয়েনের ধারণা প্রকাশ্যে আসে। ২০০৯ সালে পুরোদমে কাজ শুরু করে দেয় এটি। আসলে এটি একটি কম্পিউটার ফাইল যা কোনও ফোন বা কম্পিউটারের ডিজিটাল ওয়ালেট অ্যাপে স্টোর করা থাকে। এক্ষেত্রে প্রতিটি লেনদেনই ব্লকচেইন নামে একটি পাবলিক লিস্টে রেকর্ড করা হয়। যে কোনও ব্যবহারকারী খুব সহজেই বিটকয়েন বিক্রি করতে ও তা ট্রান্সফার করতে পারেন।


QR কোড ব্যবহার করেও ট্রান্সফার করা যেতে পারে বিট কয়েন। এক্ষেত্রে থার্ড পার্টি এক্সচেঞ্জ সার্ভিসের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। এই সংস্থাগুলি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কোনও ইচ্ছুক ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। যে স্টোরগুলি বিটকয়েন নেয়, সেখানে ডিজিটাল কারেন্সি হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে বিটকয়েন।


তবে, বিটকয়েনের বিষয়টি অপেক্ষাকৃত নতুন। এর জেরে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিটকয়েনকে এমার্জেন্সি ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কথায়, এখন যদি বিটকয়েনে বিনিয়োগ করা যায়, তা হলে অদূর ভবিষ্যতে বড়সড় রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বলা বাহুল্য, অল্প সময়ের মধ্যেই অনেকটা লাভের সম্ভাবনা থাকে।


কিন্তু, চারিত্রিক দিক থেকে বিটকয়েন অত্যন্ত পরিবর্তনশীল। খুব একটা স্থায়ী নয়। প্রায় সময়ই বড়সড় তফাতে দাম ওঠানামা করে। তাই লাভের পাশাপাশি লোকসানের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। আর এদিক থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এটি। এর আরও একটি বড় সীমাবদ্ধতা হল, পুরোপুরি ডিজিটাল মোডেই সব কাজ হয়। এর জেরে যে কোনও সময় ওয়েব ওয়ালেট হ্যাক হয়ে যাওয়া ও বিটকয়েন চুরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।


এদিক থেকে সোনা অত্যন্ত স্থায়ী বিনিয়োগের অপশন হতে পারে। যাঁরা লং টার্ম ও স্থায়ী বিনিয়োগের পথে হাঁটতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে ভরসার অন্যতম জায়গা হতে পারে সোনা। বাজার মন্দার সময় এমনকি যখন সমস্ত জিনিসের দাম কমতে থাকে, তখনও সোনার দাম বাড়তে থাকে। একান্ত বিপরীত পরিস্থিতি ছাড়া খুব একটা সোনার দাম পড়ে না। তাই ইনভেস্টমেন্টের অত্যন্ত বিশ্বাসযোগ্য ও ভরসার জায়গা হল সোনা। বিশ্ব জুড়ে এর জনপ্রিয়তাও রয়েছে।