আসানসোল: পূর্ব রেলের তরফ থেকে আসানসোল ডিভিশনে বিভিন্ন জায়গায় চালানো হচ্ছে উচ্ছেদ অভিযান। বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ করতে অভিযান চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে পূর্ব রেলের তরফ থেকে। এই অভিযানে সবক্ষেত্রেই কোপ পড়ছে। সাধারণ মানুষ থেকে শিক্ষাক্ষেত্র, সব জায়গাতেই দখলদার উচ্ছেদে উঠে পড়ে লেগেছে রেল কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই রেলের সিদ্ধান্তে ভাঙ্গা পড়েছে আসানসোলের দুটি বহু পুরনো বিদ্যালয়। রেলের জায়গায় থাকা ওই বিদ্যালয় দুটিকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। যা নিয়ে উঠেছিল বিতর্কের ঝড়। তাছাড়াও বিগত কয়েকমাস ধরেই দখলদার উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছে আসানসোলের বিভিন্ন জায়গা। আবারও সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। তবে এবারে ক্ষোভের আগুন আরও বেশি। তাই এবারে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছেন খোদ মেয়র। আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় রেল কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সমাধানের আশায়। সম্প্রতি, চিত্তরঞ্জন শহরে অবৈধ ভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদের নোটিশ পাঠিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। সেই নোটিশ পাওয়ার পরেই সাধারণ মানুষজন দ্বারস্থ হন বিধায়ক তথা মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের কাছে। সাধারণ মানুষের আবেদনে আর চুপ থাকতে পারেন নি তিনি। তাই এদিন চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার জেনারেল ম্যানেজার এস.কে কাশ্যপের সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ করেছেন বিধান বাবু।
এদিন চিত্তরঞ্জন রেল কারখানা জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করে এলাকাবাসীর অসুবিধার কথা তুলে ধরেন মেয়র তথা বিধায়ক। এই প্রসঙ্গে বিধান উপাধ্যায় জানিয়েছেন, উচ্ছেদের নোটিশ পাওয়ার পরেই অনেক মানুষ তাদের অসুবিধাগুলি নিয়ে তার কাছে আসেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এদিন চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার জিএমের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন। সেখানে এলাকাবাসীর অসুবিধার কথা গুলি তুলে ধরেছেন তিনি। এই বিষয়ে বিধান উপাধ্যায় আরও বলেছেন, এখানে বহু মানুষ রয়েছেন, যারা বছরের পর বছর ধরে মাটির ও টালির বাড়ি করে বসবাস করছেন। কিন্তু হঠাৎ এই উচ্ছেদের নোটিশে তাদের মাথায় হাত পড়েছে। কার্যত আশ্রয় হীন হয়ে পড়েছেন তারা। এখন তারা হটাৎ করে কোথায় যাবেন? কিভাবে তাদের পুনর্বাসন সম্ভব? সেইসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ৪০০ একর জমির জলের ঠিকানা পেয়েও পেলেন না কৃষকরা
বিধানবাবু বৈঠক সেরে বেরোনোর পর জানিয়েছেন, জেনারেল ম্যানেজার আশ্বাস দিয়েছেন, নতুন করে কোনও আবাসন তৈরি করা যাবে না। তবে তারা কোনো উচ্ছেদ অভিযান চালাবে না। তাছাড়া রাস্তায় গরু, মোষ যেন না চলাচল করে, তার দিকে নজর রাখতে হবে। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, যেসব পুরোনো পকেট গেট রয়েছে, সেগুলিও বন্ধ করা হবে না। অন্যদিকে উচ্ছেদ অভিযান এবং নোটিশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন শহরের বহু মানুষ। এদিন আসানসোল উত্তর বিধানসভা অঞ্চলে উচ্ছেদ প্রত্যাহার করতে হবে রেল প্রশাসনকে, এই দাবি তুলে আন্দোলনে নেমেছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। যারা মূলত রেলপার এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুনঃ মনের জোরে রংয়ের জাদুকর সুকল্প চিত্র প্রদর্শনী
এদিন আসানসোল ডিআরএম অফিসের সামনে তারা ধর্না দিয়েছেন। পাশাপাশি একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, আসানসোল রেলপার অঞ্চলে রেলের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ করার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। উচ্ছেদ জারি নোটিশ দেওয়ার পর আসানসোলের স্টেশন রোড সহ জিটি রোডের বেশ কয়েকটি জায়গা খালি করেছে রেল পুলিশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন রেলপার এলাকার মানুষজন। রেলের পক্ষ থেকে দেওয়া এই উচ্ছেদ নোটিশের বিরোধিতা করেছেন তাঁরা। দাবি তুলেছেন, আগে তাদের পুনর্বাসন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে নয়তো কোনওরকম উচ্ছেদ অভিযান চালানো যাবে না।
Nayan Ghoshনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Asansol, Indian Railway, Paschim bardhaman