রায়গঞ্জ: জামিন পেতে কারাগারে বিয়ে করতে হবে অভিযোগকারী যুবতীকে, তবেই মিলবে জামিন৷ মঙ্গলবার এমনই রায় পেয়ে বিয়েতে রাজি হয়ে গেলেন বিচারাধীন যুবক। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সহবাসের। বিচারকের নির্দেশে অবশেষে রায়গঞ্জ সংশোধনাগারের ভিতরেই সরকারি খরচে বিয়ের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।
এদিকে আদালতের নির্দেশ মেনে এদিনই রায়গঞ্জ সংশোধনাগারেই অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে অভিযোগকারী যুবতীর বিয়ের যাবতীয় বন্দোবস্ত করেছিল সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। পুলিশ হেফাজত থেকে ধৃতকে বিয়ের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় সংশোধনাগারে। সেখানে অভিযোগকারী যুবতীর সঙ্গে রাত ১২টার লগ্নে দু’জনের রেজিস্ট্রি করে বিয়ে সম্পূর্ণ হয় বলে জানা যায়। জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা বিশাল মাউরিয়ার সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে রায়গঞ্জের বীরঘই গ্রামের বাসিন্দা এক আদিবাসী যুবতীর। বিশাল কর্মক্ষেত্রে থাকতেন হরিয়ানার পানিপথে।
আরও পড়ুন: নীল ফরাশের উপরে সার সার সাদা তাঁবু, অভিষেকের নবজোয়ার যাত্রায় নজর কাড়ছে এই ছাউনিতলা
আরও পড়ুন: ‘তোমার গলা ভেঙে গেছে, ক’দিন বিশ্রাম নাও’, অভিষেককে স্নেহের বকুনি মমতার
পরবর্তীতে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আদিবাসী যুবতীকে নিয়ে যায় পানিপথে। সেখানে প্রায় একবছর দুজনে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে থাকতেন এক ভাড়া বাড়িতে। পরবর্তীতে বিশাল যুবতীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে যুবতীর কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। সম্প্রতি যুবতীকে মারধোর দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয় অভিযুক্ত যুবক। পানিপথে থেকে যুবতী-সব কিছু হারিয়ে ফিরে আসেন নিজের গ্রাম রায়গঞ্জের বীরঘইতে। গত ৮ মে যুবতী অভিযুক্ত যুবক বিশাল মাউরিয়ার নামে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সেই অভিযোগ দায়েরের পরই রায়গঞ্জ পুলিশের একটি দল উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করেনিয়ে আসে বিশাল ও তাঁর বাবা সঞ্জয় মাউরিয়াকে। এরপর ১০ মে তাঁদের দুজনকেই তোলা হয় রায়গঞ্জ আদালতে। সেখানে বিশালকে ৮ দিনের হেফাজতে নেয় পুলিশ। অপর ধৃতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। এদিকে পুলিশ হেফাজত শেষে মঙ্গলবার অভিযুক্ত বিশালকে তোলা হয় রায়গঞ্জ আদালতের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জাজ করিম চৌধুরীর এজলাসে। সেখানে অভিযুক্তের আইনজীবী জামিনের আবেদন করলে বিচারক অভিযোগকারী যুবতীকে বিয়ে করার শর্তে জামিন দিতে রাজি হন।
সেই শর্তে রাজি হয়ে যান বিশাল। এর পরই সম্পূর্ণ বিচার বিবেচনা করে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে বিয়ের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন বিচারক করিম চৌধুরী। সেই সঙ্গে বিয়ের সময় ম্যারেজ রেজিস্ট্রারকেও সংশোধনাগারে থাকার নির্দেশ দেন তিনি। দু’জনের বিয়ের সরকারি শংসাপত্র আদালতে দাখিল করলেই অভিযুক্ত বিশাল ও তাঁর বাবা সঞ্জয়কে জামিন দেওয়া হবে। এই মর্মে এদিন জেল সুপারকে লিখিত নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এদিকে আদালতের নির্দেশ মেনে এদিনই রায়গঞ্জ সংশোধনাগারেই অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে অভিযোগকারী যুবতীর বিয়ের যাবতীয় বন্দোবস্ত করে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। রাত ১২ টার লগ্নে দুজনের বিয়ে সম্পন্ন রায়গঞ্জ সংশোধনাগারে।
পিয়া গুপ্তা
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Uttar dinajpur News