শীত বিদায় নিয়েছে। কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় এখন ভোররাতেও বেশ গরম লাগছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে মশার উপদ্রব। জানলা খুলে ঘুমনোর উপায় নেই। ভয় রয়েছে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ সংক্রমণের।
মশা থেকে বাঁচতে বাজারে তরল, কয়েল বা ম্যাটের মতো নানা ধরনের মশা নিরোধক বিক্রি হয়ে থাকে। সে সব আমরা ব্যবহারও করি দেদার। কিন্তু এতে মশার কোনও ক্ষতি হয় না। তারা সাময়িক ঝিমিয়ে পড়ে, হুল ফোটানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে মাত্র।
আসলে এক এক রকম মশা নিরোধক, এক এক রকম উপায়ে কাজ করে। কোনটা মশা তাড়ায়, কোনটা আবার মেরে ফেলে। আজকাল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তরল মশা নিরোধক ব্যবহার করা হয়। এটি আসে এক ধরনের মিশ্র তরল, যা হালকা গরম হলে বাষ্পে পরিণত হয়। এতে থাকে তিন ধরনের তরলের মিশ্রণ—
১. কীটনাশক- যা মশা তাড়িয়ে দেয়।
২. স্টেবিলাইজার/অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট- এটি উত্তাপের কারণে কীটনাশককে অক্সিডাইজ করা থেকে বাধা দেয়।
৩. পারফিউম- একান্তই মানুষের জন্য এই সুগন্ধী ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন: আপনার হাতের স্মার্টফোনে কতগুলো সেন্সর একসঙ্গে কাজ করে জানেন?
এই মিশ্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল ট্রান্সফ্লুথ্রিন। এটি মশার ত্বকের কাছাকাছি পৌঁছে স্নায়ুতন্ত্রের উপর কাজ করে, তাকে অবশ করে দেয়। ফলে মশার ওড়াউড়ি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ঘটনা হল সব ধরনের মশা এই রাসায়নিকে কাবু হয় না। সব থেকে বড় কথা হল দীর্ঘদিন ধরে এই রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে মশার মধ্যেও প্রতিরোধ শক্তি গড়ে উঠেছে।
১. কেমিক্যাল রিপেলেন্টস- এগুলি সরাসরি মানুষের ত্বকে লাগানো হয়। এতে ডেব বা ডিইইটি, পিকার্ডিয়ন বা আইকার্ডিয়ন, আইআর৩৫৩৫-এর মতো রাসায়নিক থাকে। এর বেশিরভাগই সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
২. স্প্যাটিয়াল রিপেলেন্টস - এগুলি সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করা হয় না। বরং বাষ্পীভূত করে ব্যবহার করা হয়। যেমন কয়েল, রিপেল্যান্ট স্প্রে, ভেপোরাইজার এবং ম্যাট।
কিন্তু এত কিছু করেও যে সব সময় ফল পাওয়া যায় তা নয়। সারারাত মশা নিরোধক তরলের যন্ত্র চালু থাকলেও মশা হুল ফোটায়। কেন এই ব্যর্থতা?
আরও পড়ুন - পুরুষের পর্দাফাঁস! Facebook-এর এই গ্রুপে ‘ডার্টি সিক্রেট চালাচালি’ করেন মেয়েরা
ড্রাগ টেস্টিং ইনস্টিটিউট শ্রী রাম টেস্টিং ল্যাবরেটরির তরফে তিনটি সম্ভাবনার কথা জানান হয়েছে—
প্রথমত, প্রতি বছর একই প্রজাতির মশা থাকে, এমনটা নয়। মশার বিভিন্ন প্রজাতি যেমন এডিস, অ্যানোফিলিস, কুল্যাক্স, কুলিসেটা, ম্যানসোনিয়া, সোরোফোরা, টক্সোরিনাইটিস, ভেমিয়া ইত্যাদি রয়েছে। একই ধরনের প্রতিরোধক সকলের উপর কার্যকর নয়।
দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত প্রতিরোধকের ব্যবহার মশার মধ্যে নিজস্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলছে।
তৃতীয়ত, পণ্যের খরচ বাঁচাতে সংস্থা উপস্থিত রাসায়নিক পরিমাণ হ্রাস করতে পারে। এমন হলেও কাজ কম হবে।
যদিও অল ইন্ডিয়া কেমিস্ট ফেডারেশনের তরফে কৈলাশ গুপ্ত জানান, আসলে দূষণই মশার বাড়বৃদ্ধির প্রধান কারণ। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন এসি চালানো থাকলে মশা নিরোধক খুব কার্যকর হয় না। এসি মশা নিরোধক তরলের বাষ্পকে নিজের দিকে টেনে নেয়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Mosquito