Facebook এবং instagram ব্যবহারকারীদের ডেটা সংগ্রহ করে এবং যথেচ্ছভাবে তা ব্যবহার করে। গোপনীয়তার অধিকার ভঙ্গ করার একাধিক অভিযোগ উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিরুদ্ধে। কিন্তু তারপরেও Meta কীভাবে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করে, কীভাবে তা ব্যবহার করে—তা জানাতে চায় না।
নিউজ ১৮-এর তরফে ভাস্বতী গুহ মজুমদারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে বর্তমানে এমন কোনও আইন নেই যা Meta-কে তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য করে। কিন্তু কীভাবে এমন কাজ করে চলেছে Facebook, Instagram, সেবিষয়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
নজরদারি—
ব্যবহারকারী কতক্ষণ একটি ভিডিও দেখছেন, বা দেখেননি, তার উপর কি Facebook এবং instagram নজরদারি চালায়? নিউজ ১৮-র তরফ থেকে করা এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দেয়নি Meta।
তবে ‘সাইবার পিস ফাউন্ডেশন’-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং গ্লোবাল প্রেসিডেন্ট মেজর বিনীত জানিয়েছেন, নজরদারি চালায় সংস্থাগুলি। মেজর বিনীত বলেন, ‘কেউই-কমার্স ওয়েবসাইটে কোনও পণ্যের খোঁজ করলে, একই পণ্যের বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে দেখাতে শুরু করে। এই সংস্থাগুলি ব্যবহারকারীদের তথ্য বড় আকারে ব্যবহার করে, তবেই সফ্টওয়্যারটি ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে কোনও ব্যক্তি কেমন আচরণ করবেন।’
আবার ESDS সফ্টওয়্যার সলিউশন লিমিটেডের চিফ টেকনোলজি অফিসার ঋষিকেশ যাদব বিশ্বাস করেন যে, এই সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটগুলিরও কোনও লুকানো এজেন্ডা থাকতে পারে। সেখানে তারা কোনও বিশেষ মতাদর্শের মানুষের উপর কোনও বিশেষ উপায়ে নজরদারি চালাতে পারে। ধরা যাক, কোনও পণ্য বিক্রির জন্য যদি সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি কোনও অর্থ পায়, তাহলে সেই পণ্যের গুণকীর্তনই করবে তারা। এতে ব্যবহারকারী প্রভাবিত হবেন। ফলে শুধু নজরদারি চালানোই নয়, ম্যানিপুলেটও করে এরা।
আরও পড়ুন: চলতে চলতে ফ্যানের স্পিড কমে গিয়েছে? নতুন এর মতো ঝড়ের গতির জন্য করুন এই কাজ
তৃতীয় পক্ষের হাতে তথ্য তুলে দেওয়া—
Instagram এবং Facebook-এ বিজ্ঞাপন দাতা এক সংস্থা Woovali-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা নেহা সুয়াল এবং ডিজিটাল মার্কেটিং কোম্পানি Ayatiworks-এর প্রতিষ্ঠাতা উপেন্দ্রন নন্দকুমার অবশ্য দাবি করেন, এদের ডেটা সুরক্ষা নীতি খুব ভাল। এমনকী আগের থেকে আরও ভাল হয়েছে বলে জানান নন্দকুমার। তিনি স্পষ্ট বলেন, ব্যবহারকারীকেও এটা বুঝতে হবে যে তাঁর অধিকার রয়েছে তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে ডেটা শেয়ারিং সম্পর্কিত অনুমতি না দেওয়ার।
তবে, ব্যবহারকারীর বয়স, লিঙ্গ, ভাষা এবং অঞ্চল—এমন তথ্য যে তৃতীয় পক্ষের কাছে যায়, সে সম্পর্কে নিশ্চিত ঋষিকেশ যাদব।
আরও পড়ুন - দেওয়াল থেকে কতটা দূরে রাখতে হয় ফ্রিজ? ৯৯% মানুষ সঠিক তথ্য জানেন না
কোথায় সংরক্ষণ করা হয় এসব তথ্য? বিদেশী কর্মীরা কি তা দেখতে পারেন?
নিউজ ১৮-এর এই প্রশ্নের উত্তরও দিতে অস্বীকার করেছে Meta।
মেজর বিনীত জানান, আমেরিকা এবং আয়ারল্যান্ডের ডেটা সেন্টার ছাড়াও Meta মুম্বাইতে একটি ডেটা সেন্টার স্থাপন করছে। এখান থেকে ভারতীয় ব্যবহারকারীদের অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হৃষিকেশ যাদব জানান, সোশ্যাল মিডিয়ার শর্তাবলী বলে যে ব্যবহারকারীর ডেটা বিশ্লেষণাত্মক এবং কর্মক্ষমতা অপ্টিমাইজেশানের জন্য ব্যবহার করা হবে। অর্থাৎ, ভারতের ভিতরে এবং বাইরে সংস্থার কর্মীদের কাছে ওই তথ্য থাকেই।
কী ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, Facebook এবং instagram ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে। ব্যক্তিগত বিবরণ যেমন নাম, ইমেল, ফোন নম্বর, জন্মদিন, বাড়ির ঠিকানা ইত্যাদি। এছাড়াও কোনও সংস্থার অবস্থান, ব্যবহার, ডিভাইস ডেটা, আইপি অ্যাড্রেস, ব্রাউজার ইত্যাদি।
তাছাড়া অনলাইন অ্যাকটিভিটি যেমন কতবার লগ-ইন, লগ-ইন করার পছন্দের সময়, বিভিন্ন ফিচার ব্যবহার ইত্যাদির উপর তো নজরদারি চলেই। কী ধরনের কন্টেন্ট দেখেন, কী পছন্দ, কী অপছন্দ, কী মন্তব্য করেন বা রিপোস্ট করেন এবং কী ধরনের কনটেন্ট বারবার দেখেন, সব দেখা হয়।
এমনমকী এদের কন্ট্যাক্টের উপরও নজরদারি চালানো হয় বলে দাবি ঋষিকেশ যাদবের।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।