কলকাতা : বাংলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়ে ফেলেছিলেন । এ বার বাংলা ছাড়ার ছাড়পত্র নিতে সিএবি-তে যাচ্ছেন ঋদ্ধিমান সাহা । শনিবার দুপুরে সিএবি-তে যাবেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন উইকেটকিপার। এনওসি চেয়ে আবেদন করবেন ঋদ্ধি । সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ শনিবার দুপুরের দিকে ইডেনে গিয়ে সিএবির হেড ক্লার্ক বিশ্বপতিবাবুর হাতে এনওসি নেওয়ার চিঠি দিয়ে আসবেন ঋদ্ধিমান । সেই সময় সিএবির কোনও কর্তা উপস্থিত থাকেন না সাধারণত । তবে শেষ মুহূর্তে পাওয়া খবর অনুযায়ী, সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়ার সঙ্গে আজ দুপুরে একবার বৈঠক করতে পারেন ঋদ্ধিমান সিএবি-তে।
অর্থাৎ ঋদ্ধিমান যখন এনওসি চাইতে পৌঁছবেন সেই সময় সিএবি-তে থাকতে পারেন অভিষেক । যদিও বাংলা ছাড়ার সিদ্ধান্তে ঋদ্ধিমান এখনও অটল রয়েছেন। সিএবি সভাপতিও ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, সত্যিই ঋদ্ধিমান যদি খেলতে না চান তা হলে জোর করে আটকানো হবে না। ঋদ্ধিমানকে এনওসি দিয়ে দেওয়া হবে । অর্থাৎ আগামী মরশুমে বাংলা ছেড়ে যে কোনও রাজ্যের হয়ে ক্রিকেট খেলতে পারবেন শিলিগুড়ির এই ক্রিকেটার । তবে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়ার আগে ঋদ্ধিমানের সঙ্গে একবার কথা বলতে চান অভিষেক । শনিবার দুপুরে সেই আলোচনা হতে পারে সিএবিতে।
বঙ্গ ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার উপর একরাশ অভিমান নিয়েই বাংলা ছাড়ছেন ঋদ্ধিমান । ভারতীয় টেস্ট দল থেকে বাদ পাওয়ার পর একাধিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। প্রথমে ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়েই বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি হোয়াটসঅ্যাপ-সংলাপ তুলে ধরেন । যেখানে ঘাড়ের চোট নিয়ে অনবদ্য ব্যাটিং করার পর ঋদ্ধিমানকে সৌরভ জানিয়েছিলেন ক্রিকেট ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা না করতে, তিনি সব সময় পাশে আছেন ।
আরও পড়ুন : ইংরেজদের বিরুদ্ধে দুই বাঁহাতি ব্যাটারের লড়াইকে কুর্নিশ সৌরভের, ঠিক করে দিলেন রানের লক্ষ্যও
যদিও দেখা যায় এই টেস্ট ম্যাচের পরবর্তী সময়েই ভারতীয় দলের প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড় এবং নির্বাচক মণ্ডলীর পক্ষ থেকে ঋদ্ধিমানকে জানিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে ভবিষ্যতে আর ভারতীয় টেস্ট দলের জন্য ভাবা হচ্ছে না । নতুন ক্রিকেটারদের দেখতেই এই সিদ্ধান্ত । এই সিদ্ধান্তে হতাশ হয়ে পরেন বঙ্গজ উইকেটকিপার । তবে সিএবি-র একাধি কর্তা বলতে শুরু করেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম প্রকাশ্যে তুলে ঠিক কাজ করেননি ঋদ্ধিমান সাহা । ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ে বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফির গ্রুপ পর্বের ম্যাচ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন তিনি। যেহেতু তাঁর ভারতীয় দলের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই তাই জুনিয়র ক্রিকেটারদের জায়গা ছেড়ে দিতেই বাংলার গ্রুপ পর্বে খেলতে রাজি ছিলেন না ঋদ্ধিমান। যদিও প্রকাশ্যে তিনি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে না খেলার কথা বলেন।
আরও পড়ুন : ধ্বংসস্তূপ থেকে ভারতকে উদ্ধার! দুরন্ত সেঞ্চুরিতে ইংরেজদের দাদাগিরি দেখালেন ঋষভ পন্থ
ঠিক এই সময়ে আচমকা ঋদ্ধিমান সাহার বাংলা ক্রিকেটের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেন সিএবি যুগ্ম সচিব দেবব্রত দাস। দেবব্রতবাবু অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময়ে নানা অজুহাতে ঋদ্ধিমান নাকি বাংলার হয়ে খেলা থেকে বিরত থেকেছেন । এরপরই চূড়ান্ত অপমান বোধ করেন বৃদ্ধি । তবে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। আইপিএল খেলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিছুদিন পরিস্থিতি ধামাচাপা থাকলেও রঞ্জি ট্রফির নক আউট পর্বের জন্য বাংলা দল ঘোষণা হওয়ার পরই বিতর্ক ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে । ঋদ্ধিমানের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, তার সঙ্গে কথা না বলেই তাকে বাংলা বলে রাখা হয়েছে। দ্বিতীয়ত সিএবি যুগ্ম সচিব দেবব্রত দাস যে মন্তব্য করেছেন তার জন্য তাঁকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে । না হলে তিনি বাংলার হয়ে ক্রিকেট খেলবেন না ।
যদিও সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়া বিষয়টিকে ব্যক্তিগত মতামত বলে বিতর্ক থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ঋদ্ধিমান এতে রাজি হননি । আর দেবব্রতবাবু নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাননি । ফলে শেষমেশ ঋদ্ধিমান আর বাংলা ক্রিকেটের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন হতে চলেছে। বাংলা ছেড়ে কোন রাজ্যের হয়ে তিনি খেলবেন তা এখনও চূড়ান্ত নয়। ত্রিপুরার নাম শোনা গেলেও ঋদ্ধি এখনও সিদ্ধান্ত নেননি বলেই জানান । বাংলা থেকে এনওসি সার্টিফিকেট পাওয়ার পরেই নতুন দলের নাম জানিয়ে দেবেন তিনি । ঋদ্ধিমান বাংলা ছাড়ছেন এই খবরে হতাশ বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: CAB, Sourav Ganguly, Wriddhiman Saha