#মেলবোর্ন: অ্যাডিলেডের অপমানের বদলা নেওয়া হয়ে গিয়েছে মেলবোর্নের ২২ গজে। অন্ধকারের কানাগলি থেকে সাফল্যের হাইওয়েতে কড়া নেড়েছে টিম ইন্ডিয়া। এভাবেও ফিরে আসা যায়, একদিন বাকি থাকতেই ম্যাচ পকেটে পুরে অস্ট্রেলিয়ানদের স্পষ্ট বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে অজিঙ্ক রাহানের দল। এই জয় প্রমাণ করে আঘাত কখনও সেরাটা বের করে আনতে সাহায্য করে। টিম গেমে জিতেছে ভারত সন্দেহ নেই।
কিন্তু যে দুজনের কথা আলাদা করে বলতে হবে তাঁরা হলেন শুভমান গিল এবং মহম্মদ সিরাজ। দুজনেরই দেশের হয়ে টেস্ট অভিষেক। প্রথমজন বক্সিং ডে টেস্টের মত বড় মঞ্চে ওপেন করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৪৫ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৫ করেছেন। অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলারদের সামাল দিয়েছেন বরফশীতল মানসিকতায় এবং দুর্দান্ত টেকনিকে। আর দ্বিতীয় জন বল হাতে নিজের আগমনবার্তা জানান দিয়েছেন।
দেশে হঠাৎ করে বাবার মৃত্যু, শোক বুকে চেপেও অস্ট্রেলিয়ায় থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত, সবকিছুর পুরস্কার পেলেন সিরাজ। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫ টি উইকেট পেয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম টেস্টে বোলারদের মধ্যে এই কৃতিত্ব একমাত্র লাসিথ মালিঙ্গার ছিল। স্বাভাবিকভাবেই এই দুই তরুণ ক্রিকেটারের খেলায় মুগ্ধ ক্রিকেট পন্ডিত থেকে প্রাক্তন তারকারা। সুনীল গাভাস্কার তো বলছেন," সিরাজ অসাধারণ বল করল। দেখে মনে হয়নি ওঁর প্রথম টেস্ট। যখন ব্যাটসম্যান বাউন্ডারি মেরেছে, বা ওঁর বলে ক্যাচ পড়েছে, হতাশ হয়নি। দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে ঝাঁপিয়েছে। একজন ফাস্ট বোলার হিসেবে যে সাহস থাকা দরকার সেটা দেখিয়েছে। বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের টানা চাপে রেখে গিয়েছে। হাত খোলার জায়গা দেয়নি। সব মিলিয়ে দাগ কাটল ছেলেটা"।
Overcoming all the odds. Strong showing by the team at MCG. Thank you to all the fans for your support 🇮🇳 pic.twitter.com/XNxbH1pj0h
— Shubman Gill (@RealShubmanGill) December 29, 2020
অজিঙ্ক রাহানে গিলের প্রশংসায় বলেন, "ওঁর প্রথম শ্রেণীর রেকর্ড আমাদের জানা। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় এসে টেস্টে ওপেন করা এবং রান করা অনেক বেশি কঠিন কাজ। শুভমান দেখিয়ে দিল এই পর্যায়ের চ্যালেঞ্জ নিতেও তৈরি। দুটো ইনিংসে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। সিরাজ এবং গিল, এই দুই ক্রিকেটার নিজেদের অভিষেক ম্যাচে যেভাবে খেলল, আমি গর্বিত। " কোচ রবি শাস্ত্রী জানিয়েছেন মেলবোর্নের এই জয় দেশের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা কামব্যাক হিসেবে লেখা থাকবে।
ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে অ্যাডিলেডে আত্মসমর্পণের পর তাঁর কম সমালোচনা হয়নি। কিন্তু টিম ইন্ডিয়ার হেডস্যার জানাচ্ছেন তিনি জানতেন ছেলেরা এই অপমানের বদলা নেবে। তাই মুখে বেশি আলোচনা করেননি, বরং প্রত্যেকের নেট সেশনে বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল। এই ভয়ডরহীন ক্রিকেট যে এই ভারতীয় দলের পরিচয় মনে করিয়ে দিয়েছেন কোচ। পাশাপাশি এই জয় দেশের ক্রিকেট ভক্তদের নতুন বছরের উপহার হিসেবে দেখতে অনুরোধ করেছেন শাস্ত্রী।