#হায়দরাবাদ: অটোচালকের ছেলে আজ বিএমডব্লিউ - র মালিক। মনে রাখার মত অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে দেশে ফিরে দুদিনের ভেতর নিজেকে বিলাসবহুল বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার দিলেন মহম্মদ সিরাজ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করেছেন টিম ইন্ডিয়ার তরুণ তারকা। সর্বশক্তিমানকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি নিজের শহরের রাস্তায় গাড়ি নিয়ে ঘোরার ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি। হায়দরাবাদে পৌঁছে বিমানবন্দর থেকেই সোজা বাবার কবরে ছুটে গিয়েছিলেন। ভারতের তরুণ ফাস্ট বোলার নিজের অভিষেক সিরিজেই রূপকথার নায়ক হয়ে গিয়েছেন। তিন ম্যাচে তেরো উইকেট,সিরাজ যেন আবির্ভাব লগ্নে হাজার ওয়াটের আলো ছড়িয়েছেন। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় অশ্বিন,বুমরাহকে পেছনে ফেলেছেন।
সিডনিতে জাতীয় সংগীত শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি, ব্রিসবেনে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে প্রয়াত বাবার কথা স্মরণ করেছেন। প্রত্যেকটা উইকেট উৎসর্গ করেছেন বাবাকে। জানিয়েছিলেন,"জানতাম বাবা সব দেখছেন। তারপর বাড়ি ফিরতেই মা কেঁদে ফেললেন। আসলে এত তাড়াতাড়ি সব ঘটে গেল বোঝা গেল না। এসবের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। দীর্ঘদিন আমার ফেরার জন্য মা অপেক্ষা করেছে। সম্পূর্ণ অন্যরকম অনুভূতি। বলে বোঝাতে পারব না"। সত্যি তো। বাবার মৃত্যুর পর দেশে ফেরার সুযোগ থাকলেও দেশে ফেরেননি সিরাজ। ফোনে মা বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়া থেকে যেতে, সুযোগ পেলে দেশের হয়ে নিজেকে উজাড় করে দিতে। সেটাই করেছেন সিরাজ।
Mohammed Siraj gifted himself a BMW after returning home from Australia.https://t.co/OW58629mT3
— Circle of Cricket (@circleofcricket) January 23, 2021
দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আজ বিদেশেও প্রশংসিত হচ্ছে তাঁর নাম। ছেলেকে নিয়ে এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন সিরাজের বাবা মহম্মদ ঘাউস। অভাবের সংসারে অটো চালিয়ে দিন যাপন করেছেন, কিন্তু ছেলের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নকে শেষ হতে দেননি। এমন কাহিনী ক্রিকেট রোমান্সের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। অস্ট্রেলিয়ায় ভাল খেলার পুরস্কার পেয়েছেন সিরাজ। ফেব্রুয়ারি থেকে ঘরের মাঠে হতে চলা ইংল্যান্ড সিরিজে আঠারো জনের দলে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
বাবার কবরের সামনে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। যাঁর উৎসাহে ক্রিকেটার হওয়া সেই বাবাই দেখে যেতে পারলেন না ছেলের উন্নতি। সিরাজের ভক্তরা প্রিয় তারকার ছবি এবং ভিডিওতে লাইকের বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছেন। সত্যিই সিরাজের গল্প যেন রূপকথার কাহিনী। আগামী দিনের ভারতীয় জোরে বোলিং এর ভবিষ্যত হতে চলেছেন তিনি। আপাতত সবকিছু ছেড়ে ক্রিকেটে নিজের ফোকাস রাখতে চান।