#কলকাতা: অখ্যাত খেলা। খুব কম মানুষই এই খেলার নাম জানে। 'কেটেলবেল’। এই খেলাটি মূলত পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল।
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান-সহ অনেক দেশেই এই খেলার চল রয়েছে। আন্তর্জাতিক কেটেলবেল ম্যারাথন সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক গিরা ক্রীড়া সংস্থা এই খেলা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে আয়োজন করে।
আরও পড়ুন- FIFA World Cup, alcohol : কাতার বিশ্বকাপে ফুটবলপ্রেমীদের মদের চাহিদাএই খেলায় মূলতঃ কেটলির আকারের একটি ভারী বস্তু নির্দিষ্ট বৃত্তে ঘোরাতে হয়। জিনিসটি দেখতে অনেকটা হাতলওয়ালা ক্যাননবলের মতো। ১০ মিনিটের মধ্যে যিনি যত বেশি ঘোরাতে পারবেন, তিনি বিজয়ী হবেন।
কেটেলবেলের বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। কলকাতার মিন্টো পার্কের বাসিন্দা শিবানী আগরওয়াল ২৯তম IGSF বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে দুটি স্বর্ণপদক জিতেছেন এবং কেটলবেল গেমে মাস্টার অফ স্পোর্ট (MS) র্যাঙ্ক অর্জন করেছেন প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসাবে।
প্রতিযোগিতাটি ১-৩ জুলাই পর্যন্ত গ্রিসের লৌট্রাকিতে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ইভেন্টে তিনি ১৬ কেজি ওজনের কেটলবেল সহ ওয়ান আর্ম লং সাইকেল প্রদর্শন করেছিলেন। তিনি এই ইভেন্টে ১১৩টি পুনরাবৃত্তি করেছিলেন এবং এমএস র্যাঙ্ক অর্জন করেছিলেন।
তাঁর দ্বিতীয় ইভেন্টে তিনি ওয়ান আর্ম স্ন্যাচ ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে তিনি ১০০টি পুনরাবৃত্তি করেন। উভয় ইভেন্টেই তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেন।
দুটি ইভেন্টের দশ মিনিটের সময়সীমা ছিল এবং উত্তোলককে বিরতিহীনভাবে উত্তোলন করতে হত। ইভেন্টের পরে ভারতীয় দলের সঙ্গে শিবানী ৪ জুলাই এথেন্সে ভারতীয় দূতাবাসে গ্রীসের ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অমৃত লুগুন-এর সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
আরও পড়ুন- IND vs PAK, T20 World Cup : বিশ্বকাপের তিন মাস আগেই শেষ ভারত পাক ম্যাচেরশিবানী এর আগে দুবার ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে যথাক্রমে উজবেকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়ায় চ্যাম্পিয়নশিপে আইজিএসএফ কেটলবেল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। তার পর তৃতীয়বারও তিনি ২০২১ সালে ফ্রান্সে IKMF কেটলবেল ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন।
তিনি সম্প্রতি YLF, ICC (Indian Chambers of Commerce) দ্বারা প্রাইড অফ বেঙ্গল: ইয়াং অ্যাচিভার্স, স্পোর্টস বিভাগে ভূষিত হয়েছেন। শিবানী এই বছর মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছ থেকে একটি স্বীকৃতির চিঠিও পেয়েছেন।
একজন নেতৃস্থানীয় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট থেকে একজন মায়ের ভূমিকা নিয়ে, তিনি মনে করেন এই যাত্রা তাঁর কোচ কলকাতার অর্ণব সরকারের পরামর্শ ছাড়া সম্ভব হত না। তিনি শিবানীকে কেটলবেল স্পোর্টসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন এবং তাঁকে সবসময়ের জন্য পাশে পেয়েছেন স্বামী মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে।
শিবানীর জীবনে এই খেলা হঠাৎ করেই যোগ হয়েছিল। ছোট থেকেই চেহারা অত্যন্ত ভারী ছিল। কোনও দিনই ক্রীড়াবিদদের মতো চেহারা ছিল না। সন্তানের জন্মের পর অনেকটাই মোটা হয়ে যান শিবানী।
শরীরের বাড়তি ওজন ঝরাতেই কেটেলবেল অনুশীলন শুরু করেন। আস্তে আস্তে এই অখ্যাত খেলাটার প্রতি প্রেম জন্মে যায় তাঁর। কলকাতায় থাকলে একদিনও অনুশীলনে কামাই দেন না। ক্রীড়াবিদদের মতো শরীর না থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র মনের জোরে তিনি সহজেই বিশ্বের নানা প্রতিযোগিতায় জয় পাচ্ছেন।
স্বামী সন্তান সংসার সামলেও পেশায় চার্টার্ড একাউন্টেন্ট শিবানী চান এই রাজ্যের আরো বহু ছেলেমেয়ে যেন এই কেটেলবেল খেলায় অংশ নেয় এবং দেশের মুখ উজ্জ্বল করে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Sports