#কলকাতা: ফুটবলার মারাদোনা কিংবদন্তি। মানুষ মারাদোনাও ছিলেন অনেক বড় মনের। মারাদোনার সঙ্গে ৯ বছর একসঙ্গে, এক ছাদের তলায় কাটিয়েছেন এক ভারতীয়। নাম সুলেমান কুট্টি। ফুটবল ঈশ্বরের ভারতীয় যোগসূত্র এই সুলেমানই।
অবসরের পর দীর্ঘ সময় দুবাইতে কাটিয়েছেন মারাদোনা। এই লম্বা সময়টায় ফুটবল ঈশ্বরের ছায়াসঙ্গী ছিলেন বিজয়ন, আনচেরির রাজ্য কেরলের মালাপ্পুরম জেলার বাসিন্দা সুলেমান। তানুর আয়ায়া গ্রামের ছেলে সুলেমান ভাগ্যের খোঁজে দুবাই গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়েই দিয়েগোর সংস্পর্শে আসা সুলেমানের। দুবাই গিয়ে সেখানে ড্রাইভিং কোর্স করে ড্রাইভারের চাকরির খোঁজ করছিলেন সুলেমান। স্থানীয় এজেন্সি মারফত মারাদোনার গাড়ি চালানোর সুযোগ হয় আচমকাই। অল্প সময়েই দিয়েগোর দিল জিতে নেন ভারতীয় যুবক। কিংবদন্তির খাস আদমিতে পরিণত হন সুলেমান। এজেন্সির চাকরি ছেড়ে মারাদোনার ব্যক্তিগত গাড়ি চালকের চাকরিতে যোগ দেন কেরালাইট সুলেমান। কেরলের সুলেমানের ঠিকানা বদলে যায় মারাদোনার দুবাইয়ের বিলাসবহুল বাংলোর ঠিকানায়। দুবাইয়ের পাম জুমেইরার বিলাসবহুল বাংলো O-37 হয় কেরালার যুবকের নতুন ঠিকানা। এরপর একে একে নয়টা বছর। দীর্ঘ সময় দিয়েগোর ছায়া সঙ্গী ছিলেন এই যুবক। আদর করে কেরালার সুলেমানকে ডাকতেন সুলি।
কখনও ড্রাইভার নয়, মালাপ্পুরাম থেকে উঠে আসা আনকোরা যুবককে নিজের সন্তানের মতোই ভালবাসতেন দিয়েগো। দুবাইয়ের আল-ফুজেইরা ক্লাবের কোচিং ছেড়ে আর্জেন্টিনা যাওয়ার সময়েও প্রিয় সুলিকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন দিয়েগো। পারিপার্শ্বিক বাধ্যবাধকতার কারণে সেদিন ইচ্ছে থাকলেও দুবাই ছাড়া হয়নি সুলেমানের। তবে ঈশ্বরের সঙ্গে যোগাযোগটা ছিল শেষ দিন পর্যন্ত।
ফুটবল ভগবানের ৬০তম জন্মদিনেও শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন সুলেমান। জবাবে দিয়েগো বলেছিলেন, "মিস ইউ সুলি।" বুধবার রাতের পর থেকে কোটি কোটি দিয়েগো অনুরাগীর মতই চোখের জল বাঁধ মানছে না ভারতীয় যুবকের। নিউজ এইট্টিন বাংলাকে দুবাই থেকে সুলেমান বলছিলেন,"কেন যে গেলাম না! জীবনের বাকি দিনগুলো এই আক্ষেপ তাড়া করে বেড়াবে। কিন্তু কেন এত তাড়াতাড়ি চলে গেল দিয়েগো স্যার?" আম ফুটবল অনুরাগীর মতোই প্রশ্নটা তাড়া করে বেড়াচ্ছে কেরালাইট যুবককেও।
PARADIP GHOSH