হোম /খবর /ফুটবল /
কাস্ত্রোকে বলতেন ‘দ্বিতীয় পিতা’,প্রিয়বন্ধুর মৃত্যুদিনেই চিরবিদায় মারাদোনার

বন্ধু হলেও কাস্ত্রোকে বলতেন নিজের ‘দ্বিতীয় পিতা’, প্রিয়বন্ধুর মৃত্যুদিনেই মারাদোনার চিরবিদায়

অমোঘ হৃদয়ের টান নাকি সম্পূর্ণটাই কাকতালীয় ৷ মৃত্যুতেও মিলে গেল দুই প্রিয় বন্ধু ৷

  • Last Updated :
  • Share this:

#কলকাতা: অমোঘ হৃদয়ের টান নাকি সম্পূর্ণটাই কাকতালীয় ৷ মৃত্যুতেও মিলে গেল দুই প্রিয় বন্ধু ৷ চার বছর আগে ২০১৬ সালে আজকের দিনেই প্রয়াত হন কিউবা বিপ্লবের নায়ক ফিদেল কাস্ত্রো ৷ সে সংবাদ পেয়ে বাচ্চা ছেলের মতো কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন দিয়েগো মারাদোনা ৷ হাউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, ‘আজ আমি দ্বিতীয়বারের জন্য পিতৃহারা ৷ আমার দ্বিতীয় পিতা কাস্ত্রোও আমাকে ছেড়ে চলে গেল ৷’

কাস্ত্রো-মারাদোনার সম্পর্ক গোটা বিশ্বের কাছে নিঃস্বার্থ বন্ধুত্বের এক উদাহরণ ৷ রাজনীতি ও ফুটবল বিশ্ব থেকে শত যোজন দূরে দুজনের মধ্যে ছিল এক অদ্ভূত আন্তরিক, ভালবাসা, স্নেহের সম্পর্ক ৷ ১৯৮৬ সালে কিউবা সফরের সময় কাস্ত্রোর সঙ্গে দিয়েগোর পরিচয় ৷ পরিচয়ের সেই শুরু হলেও একসময় কাস্ত্রো এই কিংবদন্তী ফুটবলারের জীবনে হয়ে উঠেছিলেন ইশ্বরের দূত ৷

একসময় হতাশা, দুদর্শা, মাদকের নেশা, অর্থকষ্টের অন্ধকার পাঁকে তলিয়ে যাচ্ছিলেন দিয়েগো ৷ সেসময় ফুটবল কিংবদন্তীর পাশ থেকে সরে গিয়েছিলেন চেনা-পরিচিত সমস্ত মানুষ ৷ হাত গুটিয়ে নিয়েছিলেন স্পনসররাও ৷ সমস্যায় জর্জরিত বিশ্বের সেরা প্রতিভাবান ফরওয়ার্ড প্লেয়ার সেসময় নিজেকে মাদকে ডুবিয়ে প্রায় শেষ করতে বসেছিলেন ৷ এমন অন্ধকার সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন একজনই, তিনি ফিদেল কাস্ত্রো ৷

সমস্ত সমস্যার সমাধান তো বটেই এমনকী দিয়েগোর চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থা করে দেন কাস্ত্রো ৷ কিউবায় নিজের কাছে এনে আশ্রয় দেন ৷ কিউবার প্রসিদ্ধ উন্নত স্বাস্থ্যপরিষেবার কল্যাণে সেবার প্রায় মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে, সুস্থ হয়ে ওঠেন মারাদোনা ৷ তিনি একবার বলেছিলেন, ‘আর্জেন্তিনায় যখন আমার সামনে এক এক করে দরজাগুলো বন্ধ হচ্ছিল, তখন উনি কিউবার দরজা খুলে দিয়েছিলেন। সে উপকার আমি জীবনে ভুলব না ৷’ বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে মারাদোনা নিজের ১০ নম্বর জার্সিও উপহার দেন কাস্ত্রোকে ৷ চে-এর অনুগামী দিয়েগো বাঁ হাতে ট্যাটু করিয়েছিলেন কাস্ত্রোর মুখ ৷

মারাদোনাকে সাহায্যের বিনিময়ে কাস্ত্রো কিন্তু কোনওদিন কিছু চাননি ৷ তাঁর জনপ্রিয়তাকে কিউবার কোনও কাজে ব্যবহার করেননি ৷ এমনকী কিউবার জাতীয় দলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুরোধও মারাদোনাকে কখনও করেননি কিউবার নায়ক ৷ একবার কাস্ত্রো বলেছিলেন, ‘দিয়েগো আমার গ্রেট ফ্রেন্ড। কোনও সন্দেহ নেই যে ও অসাধারণ এক খেলোয়াড় ৷ কিউবার সঙ্গে মারাদোনা বন্ধুত্বের মধ্যে কোনও পার্থিব লাভ-ক্ষতির হিসেব নেই ৷’

২০১৬ সালে ঠিক এই দিনেই ফিদেল কাস্ত্রোর মৃত্যু সংবাদ পেয়ে বিধ্বস্ত দিয়েগো জাতীয় শোকে যোগ দিতে ছুটে গিয়েছিলেন কিউবা ৷ বলেছিলেন, ‘আমার বন্ধু, আমার দ্বিতীয় বাবা, আমার গাইড চলে গেল এবার আমি কার কাছে যাব! কিউবার এই শোকের সময় আমি ওদের পাশে থাকতে চাই ৷ শেষ বিদায় জানাতে চাই আমার বন্ধুকে ৷’ এ এক অদ্ভুত সমাপতন, চার বছর বাদে বন্ধুর মৃত্যুদিনেই গোটা দুনিয়াকে স্তব্ধ করে মাত্র ৬০ বছরেই চির বিদায় নিলেন কিংবদন্তী, ফুটবলের ম্যাজিশিয়ান, বিতর্কের নায়ক, হৃদয়ের প্লেয়ার... ঘুমোও রাজপুত্র, ঘুমোও..

Published by:Elina Datta
First published:

Tags: Diego Maradona, Fidel Castro