#গোয়া: সোমবার রাতে হায়দরাবাদকে হারাতে পারলেই নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করে ফেলত এটিকে মোহনবাগান। এফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা নিশ্চিত করে ফেলত সবুজ মেরুন ব্রিগেড। কিন্তু স্বপ্ন সত্যি হল না। অন্তত এদিন। পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হল অ্যান্টোনিও লোপজ হাবাসের দলকে। তাও আবার দশ জনের হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে। ম্যাচটা হেরেও যেতে পারত সবুজ মেরুন বাহিনী। সকাল দেখে যেমন বোঝা যায় দিনটা কেমন যাবে, এদিন কিন্তু সেরকম ইঙ্গিত ছিল না। পাঁচ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন হায়দরাবাদের ডিফেন্ডার সানা।
মনে হয়েছিল প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেবে রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসরা। উল্টে গতির বিপরীতে আট মিনিটের মাথায় গোল হজম করে বসল সবুজ মেরুন ব্রিগেড। প্রীতমের একটা ব্যাকপাস না ধরে ছেড়ে দিলেন তিরি। পেছন থেকে বল ফলো করে আসা আরীদানিকে খেয়াল করেননি তিনি। বলে পা লাগিয়ে দিলেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার। অরিন্দম দায় এড়াতে পারেন না। আগেই মাটিতে শুয়ে পড়েন বাগান গোলরক্ষক। গোল লাইন সেভ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন সন্দেশ।
প্রথমার্ধের বাকি সময়টা চেষ্টা করেও গোল করতে পারেনি এটিকে মোহনবাগান। বলা ভাল একজন কম থাকা সত্ত্বেও লড়াই ছাড়েনি হায়দারাবাদ। বাড়তি তাগিদ নিয়ে খেলছিলেন ভিক্টর, আকাশ, ওডেইরা। নিখিল পূজারী, লিষ্টন, হোলিচরণদের মত ভারতীয় ফুটবলাররা নিজেদের উজাড় করে দিলেন। দশজনেও পাল্টা প্রেসিং ফুটবল খেলল দলটা। দ্বিতীয়ার্ধের বারো মিনিটের মাথায় ব্যবধান কমায় এটিকে মোহনবাগান। ডেভিড উইলিয়ামস একটা বল বাড়ান মনবীরকে। ডানদিক থেকে দ্রুতগতিতে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়ে শট নেন মনবীর। গোলরক্ষককাটিমনি প্রথম পোস্টে থাকলেও বলটা আটকাতে পারেননি।
মনে হয়েছিল এবার বুঝি বিপক্ষকে নাকানিচোবানি খাওয়াবে সবুজ মেরুন ফুটবলাররা। কিন্তু এদিন যেন না হারার আলাদা প্রতিজ্ঞা নিয়ে নেমেছিল হায়দরাবাদ। পরিবর্ত হিসেবে নামা ডাচ ফুটবলার আলবর্গ গোল করে দলকে এগিয়ে দিলেন। কেউ মার্ক করেনি তাঁকে। পেছন থেকে টপ বক্সের বাইরে জোরালো শট অরিন্দমের নাগাল এড়িয়ে জড়িয়ে গেল জালে। জাভি হার্নান্দেজকে তুলে নিয়ে কোমল এবং লেনির জায়গায় জয়েসকে নামালেন হাবাস। শেষদিকে প্রবীরকে নামিয়ে আক্রমণ বাড়ানোর চেষ্টা করলেন।
ছয় মিনিট অতিরিক্ত সময় দিয়েছিলেন চতুর্থ রেফারি। ডেভিড উইলিয়ামস কর্ণার থেকে ছোট পাস খেললেন জয়েসকে। তিনি বক্সের মধ্যে বল ফেললে ভিড়ের মধ্যে প্রীতম কোটাল বল জালে জড়িয়ে দিলেন। শেষমুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার ফল পেল এটিকে মোহনবাগান। কিন্তু নিশ্চিত হার বাঁচল বললেও ভুল হবে না। তবে এদিন চিন্তা বাড়াল সন্দেশের চোট। পাঁজরে চোট পেয়ে উঠে যেতে হয় বাগানের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডারকে।
এরপর রবিবার মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে লিগের শেষ ম্যাচ খেলবে এটিকে মোহনবাগান। ওই ম্যাচ কিছুতেই হারা যাবে না। ড্র রাখলেও শীর্ষে থাকা দল হিসেবে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ছাড়পত্র পেয়ে যাবে হাবাস ব্রিগেড। এদিন ম্যাচ শেষে মেজাজ হারিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় হাবাসকে। হয়তো শীর্ষস্থান রেখে চ্যাম্পিয়নস লিগের ছাড়পত্র জোগাড় করতে না পারার হতাশা থেকেই এমন অভিব্যক্তি স্প্যানিশ কোচের।