#দোহা: বিশ্বকাপের মঞ্চে আজকের আগে পর্যন্ত দুবার দেখা হয়েছিল ব্রাজিল ও ক্রোয়েশিয়ার। ২০০৬ এবং ২০১৪ বিশ্বকাপে এই দুই দল একই গ্রুপে ছিল। ২০০৬ সালে এক শূন্য গোলে জেতে ব্রাজিল। আট বছর পর ৩-১ গোলে জয়ের ম্যাচে নেইমারের জোড়া গোল ছিল। তবুও ব্রাজিল আতঙ্কের মাঝেই নয়া রূপকথা লিখতে তৈরি ছিল ক্রোয়েশিয়া।
মন্ত্র একটাই- হারার আগে হারব না। এক মুহূর্ত নেইমারদের জমি ছাড়ব না। ম্যাচের প্রথমার্ধ ব্রাজিলকে টক্কর দিয়ে গেল ক্রটরা। পেরিসিচ পায়ে বলে লাগাতে পারলে গোল পেতেও পারত ক্রোয়েশিয়া। লুকা মদ্রিচ দারুণ সেন্টার করেছিলেন। কিন্তু হেড করার কেউ ছিলেন না বক্সে। বিশেষ করে ডান দিক থেকে ইউরানোবিচ দুর্দান্ত ওভারল্যাপ করছিলেন।
নেইমার একটি এবং ভিনি দুটি গোল লক্ষ্য করে শট নিলেও বিপদ তৈরি হয়নি। ব্রাজিলের সেই কম্বিনেশন এবং রিটার্ন বল প্লে হতে দিচ্ছিলেন না লভরেন, ভারদিওলরা। একটা অদৃশ্য দড়ির মধ্যে যেন নিজেদের মুভমেন্ট মুভ করছিল কোভাসিচ, ব্রযোবিচরা। দ্বিতীয় অধ্যায়ের শুরুতেই একটি পেনাল্টির আবেদন পেয়েছিল ব্রাজিল। বক্সে বিপক্ষ ডিফেন্ডার এর হাতে বল লাগার জন্য। কিন্তু রিভিউ দেখে বাতিল করে দেওয়া হয়।
রাফিনহার জায়গায় এন্টনি এবং ভিনির জায়গায় রড্রিগোকে নামায় ব্রাজিল। এই সময় লুকাসের প্রচেষ্টা বাঁচিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক। আগেও একবার গোল লাইন সেভ করেছিলেন তিনি। ক্রোয়েশিয়া হয়তো ওপেন গোলের সুযোগ সেভাবে তৈরি করতে পারেনি, কিন্তু ব্রাজিলকে মাঝমাঠে কর্তৃত্ব করতে দেয়নি সেভাবে।
বরং যদি পাস খেলা এবং বল নিয়ন্ত্রণ রাখার পরিসংখ্যান দেখা যায়, তাহলে সাম্বা ব্রিগেডের থেকে এগিয়েছিল তারাই। অঙ্ক কষে নিজেদের সামর্থ্য বুঝে খেলাটা সাজিয়েছিল গতবারের রানার্স আপ দল। এই করে খেলাটা ৭৫ মিনিটে নিয়ে গেল ক্রোয়েশিয়া। দেখার ছিল শেষ ১৫ মিনিটে ব্রাজিল গোল তুলে নিতে পারে কিনা।
কারণ অতীতে ব্রাজিল শেষ কয়েক মিনিটে ঝড় তুলে ম্যাচের রং বদলে দিয়েছে, এমন উদাহরণ কম ছিল না। রিচার্লিসনকে তুলে নিয়ে শেষ ১০ মিনিট পেড্রোকে নিয়ে এলেন তিতে। কিন্তু ৯০ মিনিটে গোল করতে পারল না ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়ার লড়াকু ফুটবল খেলাটাকে নিয়ে গেল অতিরিক্ত সময়। ১০৫ মিনিটের মাথায় অবশেষে এল কাঙ্খিত গোল।
লুকাসের সঙ্গে ওয়াল খেলে ব্যালেন্স বজায় রেখে ক্রোয়েশিয়ার জালে বল জড়িয়ে দিলেন নেইমার। স্পর্শ করে ফেললেন কিংবদন্তি পেলেকে ৭৭ গোল করে। ব্রাজিলের রক্তচাপ বাড়ানোর ম্যাচে শেষ পর্যন্ত হলুদ সবুজ জার্সিকে সেমিফাইনালে নিয়ে গেলেন অধিনায়ক। এমনটাই মনে হচ্ছিল। কিন্তু নাটক বাকি ছিল খেলায়। ১১৭ মিনিটের মাথায় খেলায় সমতা ফিরিয়ে আনল ক্রোয়েশিয়া।
পেটকোভিচ বা পায়ের শট ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে জড়িয়ে গেল জালে। ক্রোয়েশিয়া হারার আগে হারেনা আবার প্রমাণ করে গেল। টাইব্রেকারে ব্রাজিলের হয়ে মিস করলেন রড্রিগো। ক্যাসেমির গোল করেন। পেড্রো গোল করলেন। মারকুইনস মারলেন পোস্টে। বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়ে গেল ব্রাজিলের।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Fifa world Cup 2022, Neymar