#নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের যুগান্তকারী রায়ে টালমাটাল বিসিসিআই-এর অন্দরমহল। রায়ের কপি পেলেই পরের পদক্ষেপ নেবে বোর্ড। ডাকা হতে পারে ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠক। জরুরি এসজিএম ডাকার পথও খোলা রয়েছে এখন। রায়কে পাল্টা চ্যালেঞ্জের খসড়া তৈরি বোর্ডে।
আড়াই বছর ধরে চলা মামলায় অতীতেও বহুবার স্পেশ্যাল বেঞ্চের কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল বোর্ডকে। সোমবার রায় বেরোতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে বিসিসিআই। বোর্ডের সামনে একই বেঞ্চের কাছে রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশনের রাস্তা খোলা। তবে স্বয়ং বোর্ডের আইনজীবীও সেই সম্ভাবনা নিয়ে সন্দিহান।
বোর্ডের সামনে দ্বিতীয় রাস্তা খোলা রয়েছে সাংবিধানিক বেঞ্চে যাওয়ার। সেক্ষেত্রে রায়কে মূল্যায়ণ করতে ন্যূনতম ৫ বিচারপতিকে নিয়ে গঠন করতে হবে। তবে রিপোর্টের কপি হাতে পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে বোর্ড। সূত্রের খবর, রায়ের প্রতিলিপি পর্যালোচনা করতে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকতে পারে বিসিসিআই। খোলা থাকছে ৭২ ঘন্টার নোটিসে জরুরি বিশেষ সাধারণ সভা ডাকার পথও।
বোর্ড অবশ্য রায় বেরনোর আগেই পাল্টা চ্যালেঞ্জের খসড়া তৈরি রেখেছে। ১৬ পাতার সেই খসড়ায় ১১ বছর আগের জোরাষ্ট্রিয়ান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির করা মামলার উল্লেখ রয়েছে। চ্যালেঞ্জ জানানো হয়েছে এক রাজ্য, এক ভোটের রায়কে। বোর্ডের খসড়ায় বলা হয়েছে, দেশের সংবিধান তৈরি হওয়ার অনেক আগে থেকেই সোসাইটি অফ রেজিস্ট্রারের আওতায় নথিভুক্ত বিসিসিআই। আর ভারতীয় ক্রিকেটে বিদর্ভ, সৌরাষ্ট্রের মত করদ রাজ্যের অবদান অনস্বীকার্য। তাই এক রাজ্য থেকে মাত্র একটি সংস্থার ভোটাধিকার চালু হলে অধিকার হারাবে এইসব রাজ্য। উল্টোদিকে যথার্থ ক্রিকেটীয় পরিকাঠামো না থেকেও ভোটাধিকার পেয়ে যাবে মণিপুর, মিজোরামের মত রাজ্যগুলি।
২০০৩-এর ডি পি শর্মার করা মামলার উল্লেখ থাকছে বোর্ডের খসড়ায়। সংস্থায় সদস্য হওয়ার জন্য ৭০ বছরের উর্ধ্বসীমাও মানতে নারাজ বোর্ড। বিসিসিআই-এর যুক্তি, দেশের রাষ্ট্রপতি যদি ৮০ বছর বয়সে কাজ চালাতে পারেন, তাহলে কীসের ভিত্তিতে কোনও স্বশাসিত সংস্থায় পদের বয়সসীমা ৭০ বছরে বেঁধে দেওয়া যেতে পারে ? বোর্ডের দ্বিতীয় যুক্তি, সংবিধান অনুসারে সুপ্রিম কোর্ট শুধুমাত্র আইনের ব্যাখ্যা দিতে পারে। কেন তাঁরা আইন তৈরির পথে হাঁটছেন ?
ম্যাচের বিজ্ঞাপন-মুক্ত টাটকা টিভি সম্প্রচারের রায়কেও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে খসড়ায়। বোর্ডের যুক্তি দেশের মাটিতে প্রতিটি ম্যাচে টিভি সত্ত্ব থেকে আয় হয় গড়ে ৪০ কোটি টাকা। যা ব্যয় করা হয় জুনিয়র ক্রিকেটের পরিকাঠামো তৈরি করতে। এর থেকে অনুদান পায় রাজ্য সংস্থারাও। ম্যাচে টিভি বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হলে স্যাটেলাইট চ্যানেল কেন, দুরদর্শনও সম্প্রচারের ব্যয়ভার বহন করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে ম্যাচ সম্প্রচারের গোটা মডেলই ভেঙে পড়বে।