#বর্ধমান: একটা উপন্যাস। সেই উপন্যাসের চরিত্রকে আঁকড়ে ধরে মেলা! এমনটাও হয়। এক দু বছর ধরে নয়, টানা দু দশক ধরে কালনার হাতিপোতা গ্রামে হয়ে আসছে দেবদাস স্মৃতি মেলা। গল্পের চরিত্র যখন সবকিছু ছাপিয়ে বাস্তব হয়ে সামনে এসে দাঁড়ায় তখনই বোধহয় সার্থকতার সব সীমারেখা ছাপিয়ে যায় সেই সৃষ্টি। স্রষ্টার মৃত্যুদিন সৃষ্টির পুজোর সার্থকতা সেখানেই।
কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবসে তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে পূর্ব বর্ধমানের কালনার হাতিপোতা গ্রামে অনুষ্ঠিত হয় দেবদাস স্মৃতি মেলা। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই মেলা চলে আসছে। স্থানীয়দের মতে, জনপ্রিয় উপন্যাস দেবদাসের রসদ শরৎবাবু এই হাতিপোতা গ্রাম থেকেই সংগ্রহ করেছিলেন। তাই প্রতি বছরই বসে এই মেলার আসর। নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মেলায় বসে হরেক রকমের মিষ্টির দোকান।
শরৎচন্দ্রের ‘দেবদাস’ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিল পূর্ব বর্ধমানের কালনার এই হাতিপোতা গ্রামে বটগাছের তলায়। উপন্যাস থেকেই জানা যায়, এখানেই ছিল পার্বতীর শ্বশুরবাড়ি। দেবদাসের আড়ালে শরৎচন্দ্র বলেছেন নিজের জীবনের অনেক কথা- এমনও মনে করেন কালনার নান্দাই পঞ্চায়েতের হাতিপোতা গ্রামের বাসিন্দারা।
তাই দেবদাসের সেই স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই প্রতি বছরই ১৬ই জানুয়ারি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবস পালিত হয়। কালনা শহর থেকেই কয়েক কিলোমিটার দূরেই রয়েছে এই হাতিপোতা গ্রাম।আর এখানেই দেবদাসকে স্মরণে রাখতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ক্লাব দেবদাস স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
দেবদাস’ উপন্যাস থেকে জানা যায় যে পার্বতীর সঙ্গে দেখা করতে জীবনের অন্তিম লগ্নে হাতিপোতা গ্রামে এসেছিলেন দেবদাস।উপন্যাসেই লেখা রয়েছে বর্ধমান জেলার হাতিপোতা গ্রামে এক জমিদার বাড়িতে বিয়ে হয়েছিল পার্বতীর। হাতিপোতার সেই জমিদার ভূবনমোহন চৌধুরীর বাড়ির অস্তিত্বও এক সময় ছিল এই গ্রামে। বর্তমানে তা বিলীন হয়ে গেলেও মানুষ সেই স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরেই আনন্দে মেতে ওঠেন।
পার্বতীর বাড়ির সামনেই নাকি ছিল একটি বটগাছ। দেবদাস সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন।এ ই মেলা কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা রেজাউল মোল্লা ও আরজেদ শেখ বলেন ‘শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় আমাদেরই হাতিপোতা গ্রাম থেকেই দেবদাস উপন্যাসের রসদ সংগ্রহ করেছিলেন যা আমাদের কাছে খুবই গর্বের।তাই সেই স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই ঔপন্যাসিকের প্রয়াণ দিবস থেকে শুরু হয় ‘দেবদাস স্মৃতি মেলা’। চারদিন ধরে চলা এই মেলায় আসেন বিশিষ্টজনেরা। পর্যটকদের আনাগোনা বছরভর লেগেই থাকে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Burdwan news, West bengal tourism