#ঝাড়গ্রাম: শারীরিক অক্ষমতাকে হারাতে হলে দরকার মনের জোর। সাহস আর ইচ্ছে থাকলে জীবনের যেকোনও প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে ওঠা যায়। আর হয়তো সেই জন্যই পা না থাকা সত্ত্বেও পেরোনো যায় মহা সমুদ্র। বা নকল পা লাগিয়ে দৌড়ে প্রথম হওয়া যায়। অথবা পা দিয়েই এঁকে ফেলা যায় ছবি। এমন নানা সাহসিকতায় আমাদের দেশ ভরে রয়েছে। কিছু মানুষ প্রতিদিন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন, একেই বলে বেঁচে থাকা। প্রতিবন্ধকতা থাকতেই পারে, কিন্তু তাঁকে জয় করে এগিয়ে যাওয়াই জীবনের বার্তা দেয়। তেমনই মনের জোরে সব রকম বাঁধাকে জয় করেছেন ঝাড়গ্রামের জগন্নাথ মাহাতো।
জন্ম থেকেই দুই পায়ে জোর নেই ৩২ বছরের এই যুবকের। কিন্তু সেই প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে সে স্নাতক হয়েছে। এমনকি রোজগারের জন্য প্রতিদিন বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের অফিসে যায় সে। তাও নিজের হুইলচেয়ারে করে। রাস্তায় বাস, লড়ি, ভ্যান, রিকশার পাশে ছুটে চলে তাঁর হুইল চেয়ার। এই চেয়ার চালিয়েই রোজ অফিসে যায় সে। ঝাড়গ্রামের মানুষ কুর্নিশ জানায় এই ছেলের সাহসকে।
একটি ইন্টারভিউতে জগন্নাথ জানিয়েছেন, ছোট থেকেই তাঁর পা দু'টি অকেজো। কষ্ট সহ্য করেও সে নিজের পড়াশুনা শেষ করেছে। বাড়িতে তাঁর বৃদ্ধ বাবা ও মা রয়েছেন। তাঁদের দায়িত্ব জগন্নাথের উপরেই। তাই চাকরি পাওয়ার আগে সে ছাত্রদের পড়িয়ে সংসার চালাত। রোজ হুইল চেয়ার চালিয়েই যেতেন বহু দূরের ছাত্রদের বাড়ি। কিন্তু তাঁর ভাগ্য খুলে গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। ঝাড়গ্রামের এক সভায় মুখ্যমন্ত্রীর চোখে পড়ে যায় সে। তখনই তাঁর চাকরির ব্যবস্থা করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এই ঘটনার পর তিন বছর সে কোনও চাকরি পায় না। তবে ফের মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ঝাড়গ্রামের ডিসট্রিক্ট কালেকট্ররেট অফিসে ক্যাসুয়াল স্টাফ হিসেবে ২০১৫ সালে সে কাজ পায়। মাসিক ৯০০০ টাকা মাইনে তাঁর। এই টাকা রোজগারের জন্যই প্রতিদিন যাতায়াত মিলিয়ে ৩০ কিলোমিটার পথ সে হুইল চেয়ার চালিয়ে অফিস করে। জগন্নাথ মাহাতোর এই সাহস ও মনের জোরকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলেই।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Jhargram, West bengal