#কলকাতা : রাত পোহালেই রাজ্যে পঞ্চম দফার নির্বাচন (West Bengal Assembly Election 2021, 5th Phase)। উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়িতে নির্বাচন হতে চলেছে। মোট আসন ৪৫টি।৪৫টি আসনের মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার ১৬ আসনে ভোট, নদিয়ারর ৮ টি কেন্দ্রে , পূর্ব বর্ধমানের ৮ আসন, কালিম্পংয়ের ১ টি আসন, জলপাইগুড়ি জেলার ১৫ থেকে ২১ আসনে ভোট হবে।পঞ্চম দফার নির্বাচনে রয়েছে বেশ কিছু হেভিওয়েট প্রার্থী।
হেভিওয়েট প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন- তৃণমূলের মদন মিত্র, চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ব্রাত্য বসু, গৌতম দেব, অদিতি মুন্সি, সুজিত বসু। বিজেপির রাহুল সিনহা, শমীক ভট্টচার্য, পার্নো মিত্র। সিপিআইএমের সায়নদীপ মিত্র, অশোক ভট্টাচার্য প্রমুখ।তালিকা বলছে রাজনীতি অথবা বিনোদন জগতের চেনা মুখে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল।যুযুধান দু'পক্ষই সেয়ানে সেয়ানে এমন কেন্দ্র কিন্তু সাকুল্যে তিনা।দুই তারকা প্রতিপক্ষ রয়েছে এমন আসনগুলি হল, বরাহনগর, রাজারহাট-গোপালপুর এবং বিধাননগর।
বরানগর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী রাজ্যের বিদায়ী মন্ত্রী তাপস রায়। এই আসন থেকেই পর পর দু’বারের বিধায়ক তাপস এবার জিতলে হ্যাটট্রিক করবেন। অন্যদিকে তাঁর বিরুদ্ধে গেরুয়া শিবিরের রাজনীতিতে নবাগতা পার্নো মিত্র।বেশ কিছু দিন আগেই বিজেপিতে যোগ দিলেও এই প্রথম নির্বাচনের ময়দানে পার্নো। একমাস বরানগরে থেকে সেরেছেন প্রচার। শেষ দিন বুধবার তাঁর মিছিলে হামলার অভিযোগে ওঠে। উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।প্রার্থী হিসেবে টক্কর দিতে মরিয়া পার্নো। অন্যদিকে তাঁকে তেমন 'প্রতিপক্ষই' মনে করছেন না তৃণমূলের দুবার জয়ী বিধায়ক। তবে নজর থাকবে এই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণে।
এই পর্বের সবথেকে বেশি চর্চিত কেন্দ্র সম্ভবৎ বিধাননগর। একসময়ের সতীর্থ সব্যসাচী দত্ত এবং সুজিত বসুর লড়াই এই কেন্দ্রকে বার বার শিরোনামে এনেছে প্রচার পর্ব থেকেই। এখানকার লড়াই দুই পোড় খাওয়া রাজনীতিকের ইমেজের লড়াই।দু’জনেই তৃণমূলের বিদায়ী বিধায়ক। দমকল মন্ত্রী সুজিত বিধাননগরেরই বিধায়ক। অন্যদিকে বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত রাজারহাট-নিউটাউনের বিদায়ী বিধায়ক। এ বার পদ্মের হয়ে তিনিই প্রার্থী বিধাননগরে।তাই নিঃসন্দেহে এই আসনের দিকে তাকিয়ে থাকবে বাংলা।
পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণে তৃণমূলের আরও যাঁরা নজর করবেন তাঁদের মধ্যে অবশ্যই রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। গত দুই বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের পরে এ বারেও তিনি প্রার্থী দমদম আসন থেকে। এই পর্বেই আবার রয়েছেন মদন মিত্র। চিটফান্ড কাণ্ডে জেলবাসের পরে ফের একবার সক্রিয় রাজনীতির মঞ্চে মদন।এর আগে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের কাছে কামারহাটি আসনে হেরে যান তিনি। এর পরে ২০১৯ সালে ভাটপাড়া উপনির্বাচনেও বিজেপি-র কাছে পরাজয়ই মিলেছে।তবুও তৃণমূল সুপ্রিমো তাঁর ওপরই ভরসা রাখলেন কামারহাটিতে। কুমড়ো-গান-রাজনৈতিক 'হোলি' প্রচারে প্রথম থেকেই আলোয় থেকেছেন মদন মিত্র। রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী কী একুশের নির্বাচনের হাত ধরে ফিরতে পারবেন স্ব-আসনে? এই কেন্দ্রে তাঁর বিরুদ্ধে আছেন বিজেপির আরেক গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়।ভারে তিনিও কিন্তু কিছু কম যান না।
তৃণমূল শিবিরের আরেক 'তারকা' মুখ, হেভিওয়েট প্রার্থী, চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। রাজনীতিতে নতুন নন।তৃণমূলের পুরনো সৈনিক। পর পর দু’টি বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়া চিরঞ্জিত তৃতীয়বার বারাসত কেন্দ্রেই তৃণমূলের প্রার্থী। অন্যদিকে উত্তর বঙ্গে রয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রে প্রার্থী রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেব। এই কেন্দ্র থেকেই ২০১১ এবং ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছেন তিনি। রাজ্যের প্রথম উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী এবার পঞ্চম দফার হেভিওয়েট তালিকার অন্যতম প্রার্থী। এ ছাড়াও পঞ্চম দফার ভোটে প্রার্থী রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। নজরে থাকছেন তিনিও।
২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে লড়ে রাজারহাট-নিউটাউন আসনে তৃণমূলের সব্যসাচী দত্তর কাছে পরাজিত হন তাপস চট্টোপাধ্যায়। এবার রাজারহাট-নিউটাউন আসনে তৃণমূলের প্রার্থী তিনি। ২০১৫ সালে তৃণমূলে যোগ দেওয়া তাপস অতীতে রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভায় বাম বোর্ডের চেয়ারম্যানও ছিলেন।
সবমিলিয়ে ভোট পঞ্চমীতে সুজিত বসু বনাম সব্যসাচী দত্ত, মদন মিত্র বনাম রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়দের লড়াইয়ে যেমন নজর থাকবে বাংলার তেমনই রাজারহাট-নিউটাউন, রাজারহাট গোপালপুর থেকে দেগঙ্গা , হিঙ্গলগঞ্জের ভোট লড়াই নিয়েও চরমে উঠবে ভোটযুদ্ধের পারদ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।