#বহরমপুর: মঙ্গলবার বিকেলে মেয়ের নিথর দেহ এসে পৌঁছয় গ্রামের বাড়ি মালদহের কালিয়াচকের রাজনগর গ্রামে। কান্নায় ভেঙে পড়েন গ্রামবাসী থেকে পরিবার-পরিজন। সুশান্তর ফাঁসির দাবি করেন নিহতের মা।
ভর সন্ধ্যায় বহরমপুর শহরের মধ্যেই খুন হয়েছিলেন কলেজ পড়ুয়া এক তরুণী৷ এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খুনিকে গ্রেফতার করল পুলিশ৷ মুর্শিদাবাদেরই সামশেরগঞ্জ থেকে আততায়ীকে গ্রেফতার করা হয়৷ ধৃত ওই যুবকের নাম সুশান্ত চৌধুরী৷ প্রণয় ঘটিত কারণেই এই হামলা বলে প্রাথমিক তদন্তে একরকম নিশ্চিত পুলিশ৷ এ দিন সন্ধ্যায় বহরমপুর সুইমিং পুলের কাছে বছর কুড়ির ওই তরুণীকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়৷ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছিল, হামলাকারী যুবকই কাছের মেস থেকে ওই তরুণীকে ডেকে এনেছিল৷ এর থেকেই পুলিশ একরকম নিশ্চিত হয়, আততায়ী তরুণীর পূর্ব পরিচিত৷
ঘটনায় শোকস্তব্ধ নিহতের পরিবার-পরিজন, প্রতিবেশীরা। ইংরেজবাজারের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের এয়ারভিউ কমপ্লেক্সে একই পাড়ায় বেড়ে ওঠা নিহত তরুণী আর অভিযুক্ত খুনি সুশান্ত চৌধুরীর। ছোটবেলা থেকেই নিঃসন্তান পিসির বাড়িতে বড় হয়েছে সুশান্ত। পিসির বাড়ির উলটো দিকেই মুখোমুখি বাড়ি নিহতের। অষ্টম শ্রেণি থেকেই ওই বাড়িতে যাতায়াত বন্ধু সুশান্তর।
আরও পড়ুন- কিছুক্ষণেই ঝড়বৃষ্টি এই জেলাগুলিতে, ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার মধ্যে ফের ভাসবে দক্ষিণবঙ্গ
কিন্তু, বছরখানেক ধরেই সম্পর্ক ঘিরে তৈরি হয় টানাপোড়েন। সম্পর্ক কার্যত তলানীতে পৌঁছয় গত বছর দুর্গাপুজোর আগে। অভিযোগ, সেই সময় রাতে পিসির বাড়িতে বন্ধুদের নিয়ে পিকনিক করে সুশান্ত। এরপর মদ্যপ অবস্থায় বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে হাজির হয় তরুণীর বাড়িতে। সেখানে গভীর রাতে বাড়ির দরজায় ধাক্কাধাক্কি, গালিগালাজ কিছুই বাদ যায়নি। পরদিন এনিয়ে পাড়াতেই মীমাংসা বৈঠকও হয়। যেখানে হাজির ছিলেন ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ ঘোষ। দুজনেই কমবয়সী আর পড়ুয়া হওয়ায়, ভবিষ্যতের কথা ভেবে থানা-পুলিশ করা হয়নি। সুশান্তকে ডেকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি সুশান্তর ল্যাপটপ থেকে সমস্ত ছবি ডিলিট করে দেওয়া হয়। সকলেই ভেবেছিলেন এতে হয়ত সমস্যা মিটে যাবে। কিন্তু, পরিণতি এমন ভয়ঙ্কর হতে পারে তা কেউই কল্পনাও করতে পারেননি।
সুশান্তর পিসি শান্তিরানী চৌধুরী নিঃসন্তান। পুলিশের চাকরিরত স্বামী আর তিনি দুজনে ছোটবেলা থেকে সুশান্তকে বড় করছিলেন। শান্তিরানি দেবী বলেন, ছোটবেলা থেকে মেধাবী ছিল সুশান্ত। কিন্তু, প্রতিবেশী ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের পর পড়াশোনাতেও অনীহা তৈরি হয়েছিল। ওদের সম্পর্ক নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে মনোমালিন্যও হয়। এরই মধ্যে স্বামীর মৃত্যু হওয়াতে ঝামেলা এড়াতে বছরদেড়েক আগে ভাইপো সুশান্তকে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেন তিনি। তবে, ভাইপো এভাবে "খুনি" হয়ে উঠবে, কারও প্রাণ কেড়ে নেবে, তা ভেবে উঠতে পারছেন না পিসি শান্তিরানি দেবী।
সেবক দেবশর্মা
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Murder