#মালদহ: গত তিন বছর শান্ত ছিল ইউক্রেন (Ukraine Crisis)। ইউক্রেনবাসীও শান্তিতেই ছিলেন। কিন্তু যুদ্ধ বাধঁতেই চেনা দেশটাই যেন অচেনা হয়ে গেল। বাইরে মুহুর্মুহু গুলির শব্দ। ঘনঘন বেজে উঠছে সাইরেন। বন্ধ দোকান বাজার। অপ্রতুল খাবার। পানীয় জলের অভাব। হস্টেলের নীচে বাংঙ্কারে বসে বসে তিন দিন কাটানো। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাসে করে বেরিয়ে গন্তব্য রোমানিয়া সীমান্ত। দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার বাসযাত্রা।
কিন্তু, সীমান্ত থেকে ১১ কিলোমিটার আগেই বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের। এর পরে বাস থেকে নেমে শুরু হয় হাঁটা। সীমান্তের কাছে পৌঁছে দেখা যায়, আগে থেকেই সেখানে হাজির বিভিন্ন দেশের প্রায় দুই হাজার মানুষ। হুড়োহুড়ি, ধাক্কাধাক্কির মাঝেই শূন্যে গুলি চালাতে শুরু করে ইউক্রেন (Ukraine Crisis) পুলিশ। আতঙ্কে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। সেখানে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষে কেউ ছিলেন না। এক-দুই ঘন্টা অন্তর ১০-১২ জন করে বিদেশিকে রোমানিয়া সীমান্ত পার করানো হচ্ছিল।
এভাবে ১৪-১৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরে ইউক্রেন ছেড়ে রোমানিয়া পৌঁছে কিছু খাবার ও কম্বল মেলে। কিন্তু, সেখানে তখন হাড়হিম অবস্থা। মাইনাস ৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা। এরই মধ্যে আচমকা শুরু হয় তুষারপাত। দেশে ফেরার লড়াই সহজ ছিল না। রোমানিয়া সীমান্ত থেকে বাসে করে ভারতীয় পড়ুয়ার দল পৌঁছয় বিমান বন্দরে। ভিড় বাড়ায় রোমানিয়া বিমানবন্দর থেকে প্রথমে ধাক্কা খেতে খেতে বেরিয়ে আসতে হয়। পরে গভীর রাতে ভারতে ফেরার বিমান মেলে।
আরও পড়ুন-সরাসরি পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব জেলেনস্কির! তৃতীয় দফার কথাবার্তা কবে, দেখুন ভিডিও
রোমানিয়া থেকে ইস্থানবুল হয়ে বিমান পৌঁছয় দিল্লিতে। এরপর আর অসুবিধে হয়নি। দিল্লি বিমানবন্দরে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরা ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে ব্যবস্থা করে পড়ুয়াদের প্রথমে আনা হয় বাংলা ভবনে। এর পরে কলকাতা হয়ে আজ সকালে মালদহে ফেরা। ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস সময়ে সাহায্য করলে দেশে ফিরতে এত কষ্ট পোহাতে হতো না, বলছেন ভেনেজিয়া ন্যাশনাল মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ডাক্তারির ছাত্র মালদহের পড়ুয়া নূর হাসান।
আরও পড়ুন- দেশে ফিরলেন আরও ৪০ জন বাঙালি পড়ুয়া! ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আজ মোদির বৈঠক
আজ সকালে ছেলে বাড়িতে ফিরতেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার অবসান। ছেলেকে ঘিরে মিষ্টিমুখ পরিবারের। সকাল থেকেই বাড়িতে ভিড় করেন এলাকার মানুষ। মা রোকিয়া বিবি জানান, গত কয়েকদিন টিভিতে বসে শুধু যুদ্ধের (Ukraine Crisis) খবর দেখা আর ছেলের জন্য কান্নাকাটি। আতঙ্কে খাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ছেলে কষ্টে ছিল। এখন পরিবারের সবাই খুব খুশি। এর থেকে ভালো আর কিছু হয়না।
সেবক দেবশর্মা
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।