#বীরভূম: চালকরা না ফিরে আসার দেশে। সিউড়ীতে একাকি দাঁড়িয়ে দুই সরকারি রোড রোলার। ১৯৮০ সালেও বীরভূমের সিউড়ীর PWD - র ( রাস্তা) মেকানিক্যাল বিভাগের ভরা সংসার ছিল। ১৯৮৭ সালে এই বিভাগের ছিল প্রায় ৫৯ টি সরকারি রোড রোলার। ওই সমস্ত রোড রোলার ছিল নামিদামি কম্পানির। যা সরকারি ভাবে তখন কেনা হয়েছিল। যার মধ্যে ছিল ওমানিয়া, জেকব, জি আর ডাব্লু এর মতো অত্যাধুনিক রোড রোলার। যার মধ্যে বেশি চলছিল কলকাতার ব্রিটানিকা কম্পানির ওমানিয়া রোড রোলারের৷ আর এইসব রোডরোলার চালানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে সরকারি চালক ছিল বীরভূম PWD ( রাস্তা) -র মেকানিক্যাল বিভাগে।
বীরভূমের নানুর, বোলপুর, সাঁইথিয়া, রামপুরহাট থেকে সিউড়ী সব জায়গাতেই সরকারিভাবে রাস্তা নির্মাণের না রাস্তা সারাই এর কাজ করত এই সব রোড রোলার। বিভিন্ন ওজনের ছিল এই সমস্ত রোড রোলার। তখন সরকারিভাবেই হত রাস্তা নির্মাণ ও রাস্তা সারাই এর কাজ। তবে ধীরে ধীরে আধুনিক হয়েছে সরকারি অফিস গুলি। বড়ো বড়ো ঠিকাদার সংস্থা আসতে শুরু করাতে আস্তে আস্তে কাজ বন্ধ হয়ে যায় এই সমস্ত সরকারি রোড রোলার গুলির। প্রায় পড়ে পড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল সেগুলি। বেশির ভাগ চালক সরকারি ভাবে অবসর গ্রহণ করেছিলেন। তাই আজ থেকে বছর সাতেক আগে ধীরে ধীরে সরকারি ভাবে টেন্ডার করে সব পুরোনো রোড রোলার বিক্রি হয়ে গেলেও, টেন্ডার হয়নি দুটি রোড রোলারের - কারণ ওই অফিসে দুই জন চালক তখনও রয়েছেন, তারা সরকারি মাইনেও নিচ্ছিলেন রোড রোলারের চালক হিসাবে৷ ধীরে ধীরে তারাও অবসর নিলেন সরকারি নিয়মে। এরপর ওই দুই চালক পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে। বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে তাদের। জানা যায় অবসর গ্রহণের পরেও মাঝে মাঝে অফিস চত্বরে এসে হাত বুলিয়ে যেতেন ওই রোড রোলারে। শেষবারের মতো নিজের হাতে চালিয়ে ওই রোডরোলার রেখে ছিলেন অফিস চত্বরে। সেই রাখাই শেষ রাখা আজও সেই স্থানেই দাঁড়িয়ে আছে রোড রোলার গুলি।
মাটিতে কয়েকফুট ঢুকে গিয়েছে রোড রোলারের চাকা। খারাপ হয়ে গিয়েছে রোড রোলার। হয়তো আজও অপেক্ষা করে আছে কবে আবার পাবে চেনা হাতের স্পর্ষ। হয়তো কয়েকদিনের পর ফের টেন্ডার হবে এই রোড রোলার দুটির, বিক্রী হয়ে যাবে এই দুটিও। কারন এখন আর কাজ নেই সরকারি এই রোড রোলার গুলির। তার জায়গায় রাস্তা তৈরীতে কাজে নেমেছে বিখ্যাত বিখ্যাত ঠিকাদার সংস্থার অত্যাধুনিক রোড রোলার।