#পুরুলিয়া: মনোনয়ন পত্রে ত্রুটি থাকায় দলীয় প্রার্থী দাঁড়াতে পারবেন না ভোটে, তাই বিজেপিকে আটকাতে নির্দল প্রার্থীকেই সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। ঘটনা পুরুলিয়ার জয়পুর কেন্দ্রের। 'অঘটন' ঘটেছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে 'সেই' অঘটন কাটিয়ে ওঠার পর স্বস্তি পেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু সেই হাইকোর্টেরই ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল রাজ্যের শাসক দল। কী নির্দেশ ছিল ডিভিশন বেঞ্চের? ত্রুটিপূর্ণ মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন পুরুলিয়ার জয়পুরের শাসক দলের প্রার্থী উজ্জ্বল কুমার। ফলে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করে দেয় নির্বাচন কমিশন। এরপরই হাইকোর্টে গিয়েছিল তৃণমূল। তাতে সিঙ্গল বেঞ্চে জয়ও পায় শাসক দল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন শেষমেশ ডিভিশন বেঞ্চে গেলে সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ হয়ে যায়। সেই ক্ষতি মেটাতে এবার জয়পুর কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী দিব্যজ্যোতি সিংদেওকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল। এদিন পুরুলিয়ার জনসভা থেকে সেই ঘোষণা করেন তৃণমূল সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিস্থিতি এখন এমন, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের পর আর ২৯৪ নয়, আগামী বিধানসভা ভোটে ২৯৩ আসনে লড়তে হচ্ছে শাসক দল তৃণমূলকে। পুরুলিয়ার জয়পুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী উজ্জ্বল কুমার আর লড়তে পারবেন না ভোটে। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেন উজ্জ্বল। কিন্তু স্ক্রুটিনিতে ত্রুটি ধরা পড়ায় তা সংশোধন করতে বলা হয়। সংশোধনের পর বুধবার ফের তা জমা দেন তৃণমূল প্রার্থী। কিন্তু, তারিখ সংক্রান্ত ভুল ধরা পড়ে তাতে। এরপরই উজ্জ্বল কুমারের মনোনয়ন বাতিল করে দেয় কমিশন। তৃণমূল এরপর হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে জয় পেলেও ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে চাপে পড়ে। উজ্জ্বল কুমারকে নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তই বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।
পুরুলিয়ার তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি আদালতের রায়ের পর বলেছিলেন যে, 'বিষয়টি নিয়ে কোর্টে যাওযার সময়ও আর নেই। কাজেই ওই আসনে তৃণমূলের প্রতীকে প্রার্থী থাকছে না। প্রার্থীর হলফনামায় তারিখ সংক্রান্ত একটি সমস্যা ছিল। কমিশন যে সেটি এত বেশি গুরুত্ব দিয়ে বসবে, তা ভাবতেই পারিনি।' এবার পুরুলিয়ার মাটিকে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিলেন, বিজেপিকে আটকাতেই হবে। তাই ওই কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থীকেই সমর্থন করবে তৃণমূল।
প্রসঙ্গত পুরুলিয়ার জয়পুর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে উজ্জ্বল কুমারকে বেছে নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই তাঁর মনোনয়ন বাতিল করে দেয় নির্বাচন কমিশন। এরপরই জয়পুর বিধানসভা তৃণমূল নেতৃত্ব-সহ জেলা নেতৃত্বের তরফে কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, 'ওই প্রার্থীর মনোনয়নে যে ত্রুটির কথা বলা হচ্ছে, তা খুবই সামান্য। এই কারণে মনোনয়ন বাতিল করা উচিৎ হবে না।' তাই উজ্জ্বল কুমারের আগের মনোনয়ন পত্রকেই গ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেয় আদালত। সেক্ষেত্রে নতুন করে তাঁকে আর মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। কিন্তু সেই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যায় নির্বাচন কমিশন। আর তাতে তৃণমূলের হারই হয়। কিন্তু সেই হারকে এবার জয়ে রূপ দিতে নির্দল প্রার্থীকেই সমর্থন করল রাজ্যের শাসক দল।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।