#কাঁথি: আগেই জানিয়েছেন তাঁর কাছে 'মেজো ছেলে'র কথাই শেষ কথা। সম্প্রতি লকেট চট্টোপাধ্যায় 'শান্তিকুঞ্জে' গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভায় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানালেও তিনি তখন কথা দিতে পারেননি। আসলে ওই যে, 'মেজো ছেলে' তখনও সবুজ সংকেত দেয়নি। কিন্তু সেই সংকেত অবশেষে মিলেছে। আর বুধবার সকালে কোভিড ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নিতে যাওয়ার পথে এখনও পর্যন্ত তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী জানিয়েছিলেন, 'ছেলে বললে নিশ্চয় যাব। আমাকে সুযোগ দিলে না যাওয়ার তো কিছু নেই।' আর সেই ছেলে, শুভেন্দু অধিকারী চন্ডীপুরের সভা থেকে জানিয়ে দিলেন, 'শিশির বাবু প্রধানমন্ত্রীর সভায় থাকবেন।' অর্থাৎ, সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গোটা অধিকারী পরিবারই যে পদ্মতলে আশ্রয় নিতে যাচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়ে গেল বুধবারই।
কিন্তু তিনি তো এখনও তৃণমূলের সাংসদ! প্রশ্নের জবাবে অবশ্য সময় নষ্ট না করেই কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শিশির বাবু। তাঁর কথায়, 'যে দিন থেকে শুভেন্দু বিজেপিতে গিয়েছে, সেই সময় থেকেই আমার বাপ-ঠাকুরদা-চোদ্দ পুরুষ তুলে গালাগালি করা হয়েছে। মীরজাফর, বেইমান বলা হচ্ছে! জানি না, আমরা কার খেয়েছি, কার ভোগ করেছি। যে যাই বলুক, মেদিনীপুরের লোক জানে আমরা ভোগী না ত্যাগী।'
দীর্ঘদিন ধরে মমতা ছিল তাঁর 'বোন', আর মমতার কাছে 'শিশির দা'। সেই সম্পর্ক যে অবশেষে তিক্ততায় এসে দাঁড়াল, তা শিশির অধিকারীর বক্তব্যেই স্পষ্ট। এমনকী নন্দীগ্রামের মাটিতে মমতার চোট পাওয়াকে বকলমে 'নাটকের' সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি। এদিনও শিশিরের গলায় কটাক্ষের সুর। বলেন, 'যা কীর্তি করেছেন, তা বড় লজ্জার ব্যাপার। এটা জেলার পক্ষে লজ্জার। নন্দীগ্রামবাসীর পক্ষেও লজ্জার।' হুইল চেয়ারে করেই ভোট প্রচারে ঝড় তুলছেন মমতা। তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের অন্তিম পর্যায়ে এসে শিশিরের মুখে সেই 'আহত' মমতার চোটের সত্যতা নিয়েও নানান প্রশ্ন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিশির অধিকারী বলেন, 'এতটাই গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে থাকলে উনি এত তাড়াতাড়ি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন কী ভাবে? কোথাকার ডাক্তার জানি না। কিন্তু এমন হয় নাকি!'
কেন তৃণমূলের সঙ্গে আর থাকতে পারছেন না? আপনি কি বাকি তৃণমূলত্যাগী নেতাদের মতো কাজ করতে পারছেন না? শিশির অবশ্য এক্ষেত্রে 'মেজো ছেলের' দলত্যাগের প্রসঙ্গ না এনে নিজের প্রতারিত হওয়াকেই শিখণ্ডি করছেন। তাঁর দাবি, 'আমার সঙ্গে তো প্রতারণা করা হয়েছে। এখানে গভীর বন্দর করবে বলেছিল। করেনি। দু’দিন আগে জাহাজ মন্ত্রী এসে বলেছেন, বন্দর করে দেব। নিতিন গডকড়ি এসেও একই কথা বলেছেন। আমি গভীর বন্দর চাই। যেখানে আমাদের ঘরের ছেলেমেয়েদের চাকরি হবে। রাজ্য সরকার তো গভীর বন্দর করতে পারবে না। ছোট বা মাঝারি বন্দর করতে পারবে, কিন্তু তা দিয়ে আমাদের কী হবে।'
অভিযোগ প্রচুর শিশির অধিকারীর। বার্তা স্পষ্ট ছিলই। এদিন তা প্রকাশ্যে এনে দিলেন তিনি ও তাঁর মেজো ছেলে, শুভেন্দু অধিকারীও। ফলে শিশিরের পদ্মযাত্রা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Sisir adhikari, Suvendu Adhikari, West Bengal Assembly Election 2021