#বাঁকুড়া : জেলায় নয়া মুখ দিয়ে বাজিমাত করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। জঙ্গলমহলের পাশাপাশি দুই জেলায় মোট ২১টি আসনের মধ্যে ১২টি আসনেই নতুন মুখ নিয়ে এসেছে রাজ্যের শাসক দল। নয়া মুখ দিয়েই বাজিমাত করতে চায় জোড়া ফুল শিবির। এরইমধ্যে মঙ্গলবারই বাঁকুড়া জেলার তিন বিধানসভা আসন শালতোড়া, ছাতনা ও রায়পুর আসনে সভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের টার্গেট আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ক।
সেই লক্ষ্য পূরণ করতে বাঁকুড়া জেলাতেও ঝাঁপিয়ে পড়ল জোড়া ফুল শিবির। ফলে আজ মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় এই সফর থেকে আদিবাসী ভোট ব্যাঙ্ককে ধরতে চাইছেন। জেলা রাজনীতির নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের মতে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের দুই পদাধিকারীকেও প্রার্থী করে তৃণমূল জমি মাপতে চাইছে।বাঁকুড়া জেলা এবারও তারকা প্রার্থী পেয়েছে। বাঁকুড়া কেন্দ্রের জন্য তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেছে নিয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া কেন্দ্রে লড়াই করে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন। তবে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বড়জোড়ায় তৃণমূলের তারকাপ্রার্থী সোহম চক্রবর্তী পরাজিত হন। যদিও বাঁকুড়া কেন্দ্রে দলীয় কোন্দল ঠেকাতেই সায়ন্তিকাকে বেছেছেন তৃণমূল কংগ্রেস।
রাজনীতিতে একপ্রকার নতুন ইন্দাসের প্রয়াত প্রাক্তন বিধায়ক গুরুপদ মেটের স্ত্রী রুনু মেটেও। গত নভেম্বরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন গুরুপদবাবু। এ বার ওই কেন্দ্রে রুনুদেবীকে প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের একাংশের মতে, বিধায়ক হিসেবে এলাকায় গুরুপদবাবুর জনপ্রিয়তা ছিল। বাঁকুড়ার বাকি ছ’জন অবশ্য রাজনীতির পরিচিত মুখ। এ বার প্রার্থী হতে চান না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তালড্যাংরার বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী। দলের একটি অংশের দাবি, সমীরবাবুকে সব সময় এলাকায় পাওয়া যেত না বলে কিছু মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। তা ছাড়া, সমীরবাবু নিজেও যে এই কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চাইছিলেন না, তা তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন। ওই কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা ‘মেন্টর’ অরূপ চক্রবর্তী।জেলা পরিষদের বর্তমান সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মূর্মূকে রাইপুরের প্রার্থী করা হয়েছে। তিনি তিন বছর সভাধিপতি পদে থাকলেও তাঁর ভাবমূর্তি নিয়ে এখনও কোনও অভিযোগ সামনে আসেনি। জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি তথা তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান শুভাশিস বটব্যাল অবশ্য ২০১১ থেকে ছাতনায় প্রার্থী হচ্ছেন। সে বার জিতলেও পরের বার হেরে যান। ওই কেন্দ্রের জয়ী আরএসপি প্রার্থী ধীরেন্দ্রনাথ লায়েক তৃণমূল শিবিরে এলেও তিনি নন, শুভাশিসবাবুই দলের টিকিট পেলেন।ব্লক নেতৃত্ব থেকেও প্রার্থী তুলে আনা হয়েছে। বাঁকুড়া জেলায় শালতোড়া কেন্দ্রে এ বার নতুন প্রার্থী করা হয়েছে দলের শালতোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি সন্তোষ মণ্ডলকে। বড়জোড়ারও প্রার্থী হয়েছেন সেখানকার ব্লক তৃণমূল সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়। তৃণমূলনেত্রী অলকবাবুর নাম ঘোষণা করতে গিয়ে তাঁকে ‘মাটির ছেলে’ বলে উল্লেখ করেছেন।
অনেকের ব্যাখ্যা, শালতোড়া কেন্দ্রে দু’বারের দলীয় বিধায়ক স্বপন বাউরিকে নিয়ে ক্ষোভ ছিল বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে। তাই সেখানে প্রার্থী বদল আনা হয়েছে। তরুণ মুখ হিসেবে সাম্প্রতিক কালে দলীয় নানা কর্মসূচিতে উঠে আসা যুব তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভানেত্রী অর্চিতা বিদকে বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের প্রার্থী করেছে তৃণমূল।
ABIR GHOSHAL