ঝাড়গ্রাম: হাতির হানায় একই দিনে একই জায়গা মৃত্যু হল এক মহিলা সহ দুই বেক্তীর। শুক্রবার ভোরে বেলপাহাড়ি থানার ভুলাভেদা রেঞ্জের দলদলিতে হাতির হানায় মারা যান দুই ব্যক্তি। তাদের সাথে এক মহিলাও ছিল পরে জানা গিয়েছে তারো হাতির হামলায় মৃত্যু হয়েছে। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে নিহত এক ব্যক্তির নাম সরোজ মাহাতো (৬০)।বাড়ি ভুলাভেদার ফুলবেড়িয়া গ্রামে,অপর বেক্তী গুরুচরন মাহাত বাড়ি দলদলি ও সুভলা পাল বাড়ি টাংবেদা।
এদিন তারা এবং গ্রামের কয়েক জন মহুল ফুল কুড়াতে দলদলির জঙ্গলে গিয়েছিলেন।সেখানে একটি দাঁতালের সামনে পড়ে গেলে প্রথমেন সরোজকে আছর মারে।পরে আরো দুজন নিহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই নিয়ে এক সপ্তাহে সাত জনের হাতির হানায় মৃত্য হল। জখম হয়েছেন এক জন।জানা গিয়েছে কাঁকড়াঝোড় এলাকায় একটি দাঁতাল হাতি এদিন এই আক্রমণ চালিয়েছে।
পর পর হাতির আক্রমনে মৃত্যুর ঘটনা বাড়তে থাকায় রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি হয়েছে গ্রামবাসীর।উল্লেখ্য সোমবার রাতে দুটি পৃথক ব্লকে হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। মঙ্গলবার সকালে নয়াগ্রাম ব্লকের চাঁদাবিলা রেঞ্জের চাঁদাবিলা এলাকায় হাতির হানায় জখম হয়েছেন কার্তিক রানা নামে এক ব্যক্তি। আহত ব্যক্তিকে স্থানীয় মানুষজনেরা উদ্ধার করে নয়াগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে সোমবার রাতে নমিতা মাহাত (৬৫)। বাড়ি মাণিকপাড়া রেঞ্জের বালিয়া গ্রামে। ও সাঁকরাইল ব্লকের চুনপাড়া এলাকায় হাতির হানায় মৃত্যু হয় সুজিত মাহাত (৩৪)। এর বাড়ি মাণিকপাড়া ফাঁড়ি থানার ইন্দখাড়া গ্রামে। বনদফতর ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে সোমবার সন্ধ্যায় খড়্গপুর থেকে বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন সুজিত সহ তিন বন্ধু। সেই সময় চুনপাড়া এলাকায় একটি হাতির মুখোমুখি হয়ে যায়।
রাস্তা বেহাল অবস্থা হওয়ার কারণে বাইক জোর চালাতে পারনি। যার বাইক ছেড়ে পালানোর সময় সুজিত মাহাতকে শুঁড় দিয়ে ধরে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। অন্যদিকে মাণিকপাড়া রেঞ্জের বালিয়া গ্রামে ঢুকে খাবারের সন্ধ্যানে বাড়িঘর ভাঙ্গচুর চালায় ৬ থেকে ৭ টি হাতির দল। হাতি ঘর ভাঙ্গছে দেখে প্রাণ বাঁচাতে ঘরে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। ওই সময় একটি নমিতা মাহাতকে শুঁড়ে ধরে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পরে নিহত মহিলা ও যুবককে এদিন রাতেই ঝাড়্গ্রাম জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
আরও পড়ুন : North 24 Parganas News: হিন্দু রীতি মেনে হল ভোম্বলের শ্রাদ্ধ, ভোজ খেলেন পাঁচশো অতিথি-সহ দেড়শ সারমেয়
অন্যদিকে রবিবার দুপুরে নায়াগ্রাম ব্লকের বড় নেগুই গ্রামের এক গৃহবধূ দৈমন্তি মাহাত (২৫) জঙ্গলে কাঠ পাতা সংগ্রহ করতে গিয়ে হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে। গত তিনদিনে পর পর হাতির হানায় মৃত্যু ও আহতের ঘটনা ঘটতে থাকায় উদাসিনতার অভিযোগ তুলেছে বাসিন্দারা। দ্রুত হাতি তাড়ানোর দাবি তুলছেন বাসিন্দারা। যদিও বনদফতরের একটি সুত্র থেকে জানা গিয়েছে বারে বারে মানুষজনকে সচেতন করা হচ্ছে। যে এলাকায় হাতি রয়েছে সমস্ত এলাকায় মাইকিং করে সচেতন করা হয়, সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বাইরে হতে নিষেধ করা হয়।
আরও পড়ুন : Wood Apple: বেল খেলে কী হয় জানেন? পাকা বেলের উপকারিতা চমকে দেবে! আগুন দাম বাজারে!
তা সত্ত্বেও মানুষজন বন দফতরের নির্দেশকে অমান্য করে বাইরে ঘোরাঘুরি করেন। মানুষ সচেতন না হলে হাতির হানায় মৃত্যু ও আহতের ঘটনা ঠেকানো সম্ভব হবে না। বনদফতর সুত্রে জানা গিয়েছে নয়াগ্রাম ব্লকের কেশররেখা রেঞ্জ এলাকায় ১২ টি, সাঁকরাইল ব্লকের ৬ থেকে ৭ টি হাতি রয়েছে। একদিনে একই জায়গায় হাতির হানায় দুই ব্যক্তির মৃত্যু ঘটনা আতঙ্ক বাড়ছে।
রাজু সিং
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Jhargram news