#মেদিনীপুর: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আছড়ে পড়ার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেল। ইয়াসের প্রভাবে মানুষের যা ক্ষতি হয়েছে তা সীমাহীন। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় উপরে আছেন মৎস্যজীবীরা। তাদের পাশে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন 'শুভেন্দু'। এই 'শুভেন্দু' অবশ্য রাজনীতির ময়দানের ব্যক্তিত্ব নন। ইনি যদিও পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা।
এই রাজ্যে মাত্র তিনটি হ্যাচারি হয়েছে। অনুকূল নয়, এমন আবহাওয়ার মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় হ্যাচারি চালানো বেশ কঠিন। তেমন অবস্থাতেও দিঘা উপকূলে চিংড়ির চারা উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন শুভেন্দু পাল। পশ্চিমবঙ্গে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চিংড়ির চারা উৎপাদিত হয়ে আসে দক্ষিণ ভারত থেকে। সেখানে এই রাজ্যে লার্ভা থেকে চারা উৎপাদন করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন শুভেন্দুবাবু। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক এলাকা। নিউ দীঘা থেকে জেলিংহ্যাম অবধি সমুদ্র উপকূল বরাবর ৭১ কিমি এলাকা জুড়ে রয়েছে একাধিক মৎস্যজীবীদের গ্রাম। রয়েছে শঙ্করপুর বন্দর। সবটাই এখন সমুদ্রের গ্রাসে। কোটি কোটি টাকার মাছ মরে গিয়েছে। ভেসে গিয়েছে চিংড়ি মাছের পুকুর। ভেসে গিয়েছে চিংড়ির চারা। এই অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত এই সব মৎস্য চাষীদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
রাজ্যে রয়েছে চিংড়ির চারা উৎপাদনের জন্যে তিনটে হ্যাচারি। ওল্ড দিঘা থেকে উদয়পুর যাওয়ার পথে সমুদ্রের ধারে রয়েছে পরপর দুটি হ্যাচারি। আর একটি হ্যাচারি আছে তাজপুরে। চিংড়ির চারা উৎপাদন বেশ কষ্টসাধ্য। সমুদ্রের জল প্রথমে বিশেষ পাইপ লাইন দিয়ে নিয়ে আসা হয়। তারপর তা পরিশোধন করা হয়। সেই জলে দেওয়া হয় খাবার। কি ধরণের খাবার দেওয়া হবে তা পরীক্ষা করা হয় ল্যাবরেটরিতে। এরপর লার্ভা থেকে চারা উৎপাদন হয়ে গেলে তাকে প্যাকেজিং করা হয়। বিশেষ ভাবে অক্সিজেন দিয়ে চলে এই প্যাকেজিং। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে এই কাজে ক্ষতি হলেও তা সামলে নিয়ে এখন চাষীদের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ নিচ্ছেন শুভেন্দু বাবু।
তিনি জানিয়েছেন, "আমরা একে অপরের পরিপূরক। ইয়াসের কারণে চাষীদের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। পুকুর ভেসে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে এখন অন্যত্র আমদানি করাও সম্ভব হচ্ছে না। চাষীদের পক্ষে এখনই আমাদের থেকেও চারা নেওয়া সম্ভব হবে না। আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের পাশে আমরা দাঁড়াতে চাই।" কিন্তু কিভাবে হবে সেই কাজ। ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক আধিকারিকদের সাথে তিনি কথা বলেছেন। আবর্জনা সরিয়ে আগের অবস্থায় ফিরে আসলে পুকুর চাষীদের সাহায্য করতে চান শুভেন্দু বাবু। তিনি জানিয়েছেন, "প্রয়োজন হলে আমরা চাষীদের বিনামূল্যে চারা দেব। আমরা এই বিষয়ে সরকারের সাথে কথা বলছি। সাহায্য আমরা করতে প্রস্তুত।" রাজ্যের সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় যে আবহাওয়ায় চিংড়ির চারা উৎপাদন করছেন শুভেন্দু বাবু তাতে আগামীদিনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় চাষীদের কাছে তারা এই চিংড়ির চারা পাঠাতে চান। তবে সব ভুলে আপাতত লক্ষ্য মাছ চাষীদের পাশে দাঁড়ানো। শুভেন্দু বাবুর কাজের প্রশংসা করেছেন মৎস্য দফতরের আধিকারিকরাও।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Cyclone Yaas, Fishermen