#নদিয়া: দুর্ঘটনার প্রায় সাড়ে ১৩ ঘণ্টা বাদে নৌকাডুবির নিখোঁজদের সন্ধানে নামল NDRF ৷ নিখোঁজদের সন্ধানে নামানো হল NDRF-এর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডুবুরি ৷ উদ্ধারকাজে নামানো হল দুটি হাইস্পিড বোট ৷ শনিবার রাতে নদিয়ার কালনার কাছে নৌকাডুবির ঘটনার পর ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় কেটে গেলেও একজন নিখোঁজ যাত্রীকেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি ৷ রবিবার সকাল থেকে উদ্ধার কাজ নিয়ে প্রশাসনের তরফে গড়িমসির কারণে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শান্তিপুর ও কালনা ফেরিঘাট অঞ্চল ৷
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে ১৫০-এর উপর যাত্রী সওয়ার হয়েছিলেন ৷ প্রাথমিক অনুমান, অতিরিক্ত যাত্রীভারেই মাঝগঙ্গায় ডুবে যায় নৌকাটি ৷ স্থানীয় মানুষের তৎপরতায় রাতে প্রায় ৫০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনও নিখোঁজ বহু যাত্রী ৷ যদিও এই দাবি অস্বীকার করে পুলিশ জানিয়েছে, আর চার থেকে পাঁচজনকে উদ্ধার করা বাকি ৷ এই নৌকা দুর্ঘটনায় থানায় একই পরিবারের তিনজনের নিখোঁজ হওয়ার ডায়েরি লিখিয়েছেন সুজাতা বিশ্বাস ৷ তিনি জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী রাম বিশ্বাস ও তাদের দুই সন্তানও ছিলেন ওই অভিশপ্ত নৌকায় ৷ তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও এখনও নিখোঁজ তাঁর স্বামী ও দুই সন্তান ৷
কালনায় নৌকাডুবিকাণ্ডে সাতজনের নামে কালনা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করা হয়েছে বলে জানালেন বর্ধমানের এসপি গৌরব শর্মা ৷ নিখোঁজদের তালিকায় নাম রয়েছে রামপ্রসাদ বিশ্বাস(শান্তিপুর), তাঁর মেয়ে বৃষ্টি বিশ্বাস(৭), ছেলে শৌভিক বিশ্বাস (৪), লক্ষ্মী বর্মন (ধাত্রীগ্রাম), সন্ধ্যা মণ্ডল (ধানতলা), কৌশিক বসাক (শান্তিপুর), চিরঞ্জিত ঘোষ (শান্তিপুর ) ৷
সকাল থেকে উদ্ধার কাজ শুরু করে প্রশাসন ৷ কালনার ঘাটের দিকে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালানো হলে ডুবে যাওয়া নৌকার খোঁজ মেলে ৷ ক্রেন এলেও ডুবে যাওয়া নৌকা এখনও নদীর তলদেশ থেকে তুলে আনা সম্ভব হয়নি ৷ নিখোঁজদের কোনও খোঁজ এখনও মেলেনি ৷ কালনার ঘাটে যন্ত্রাংশের অভাবে ডুবুরিরা উদ্ধার কাজ আপাতত বন্ধ রেখেছে ৷ উদ্ধারকাজ খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে রয়েছেন নদিয়ার এসপি ৷
অন্যদিকে, শান্তিপুর ফেরিঘাটে উদ্ধারকাজ ঠিক মতো শুরু না হওয়ায় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়তে শুরু করে জনতা ৷ ইটের আঘাতে শান্তিপুর থানার এক সাব ইনস্পেকটারের মাথা ফেটে যায় ৷ আহত হন শান্তিপুর থানার এক কনষ্টেবলও ৷ বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের গাড়ি লক্ষ্য করে জনতা নিজের ক্ষোভ উগরে দেয় ৷ শান্তিপুর ঘাটে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক লঞ্চে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ৷ সব মিলিয়ে চুড়ান্ত উত্তেজক ও বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিস্থিতি শান্তিপুর ফেরিঘাটে ৷ উত্তেজক পরিস্থিতি সামাল দিতে ফেরিঘাটে নামানো হল র্যাফ ৷ উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ ৷ ছোঁড়া হয় রবার বুলেট ও ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল ৷ এর আগে এদিন সকালেও উদ্ধার কাজ ঠিক মতো শুরু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ জনতা আগুন ধরিয়ে দেয় নৌকায় ৷ হামলার অভিযোগে ৩০-৩৫জনকে আটক করেছে পুলিশ ৷ উদ্ধারকাজ খতিয়ে দেখতে এদিন সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছান রানাঘাটের SDPO ইন্দ্রজিৎ বসু, নদিয়ার অতিরিক্ত SP অজয় প্রসাদ ৷ তাদের সামনে পেয়ে নিখোঁজ যাত্রীদের আত্মীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েন ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Boat Accident, Boat Drowned, Kalna, NDRF, Rescue Operation, কালনা, নৌকাডুবি