#পুরুলিয়া:বিদেশি রোলেক্স ঘড়িটার মতই থমকে আছে সময়। কয়েকশো বছরের স্থবিরতা পুরুলিয়ার দেবী বাড়িতে। রাজবাড়ি থেকে বহু দূরে শবনপুরে এখনো অপেক্ষা করে আছেন কুলদেবী। ভাই বোনের ঝগড়ার প্রতীক হিসেবে।পাখির কলরব রয়ে গেছে। আগের মতই। ঐতিহ্যবাহী ঘন্টাটা বেজে চলেছে। আজো। শুধু থেমে গেছে রোলেক্স ঘড়িটা। আর সময়টাও থমকে গেছে ওই ঘড়িটার সঙ্গে। নেই তোপের আওয়াজ। ধুলো জমেছে বেলজিয়াম কাঁচের আয়নায়। ঝাপসা স্মৃতির মত। তবু প্রতি শরতে মনে পরে সব কিছু।ঘড়িটা থমকে আছে। কয়েক শ’ বছরের ইতিহাসকে বুকে চেপে। রাজা বল্লাল সেনের মেয়ে সাধনাকে বিয়ে করে কাশীপুর ফিরবেন তৎকালীন রাজা কল্যাণ শেখর। যৌতুক হিসেবে পেয়েছিলেন কালো ঘড়িটা আর রাজ তরবারি। সঙ্গে সাধনার আবদার মেনে কুলদেবীকে সঙ্গে নিয়ে আসছিলেন কাশীপুরের পথে।বিরোধিতা করেছিলেন বল্লাল সেনের ছেলে লক্ষণ সেন। দিদির সঙ্গে কুলদেবী কেন যাবেন? কুলদেবিকে ফিরিয়ে আনতে নতুন জামাইয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে লক্ষণ সেন। সেনা বাহিনী নিয়ে আটকাতে যান। ফিরিয়ে আনতে চান কুলদেবীকে।কুলদেবীকে রক্ষা করতে শবনপুরে এক গুহায় নিরাপদ আশ্রয়ে রেখে যুদ্ধে যান নতুন জামাই কল্যাণশেখর আর সাধনা। যুদ্ধে হেরে যায় লক্ষণ সেনের বাহিনী। কিন্তু কুলদেবীকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে না সাধনা। কথিত যে কুলদেবি জানান, এইখানেই দুই রাজ্য থেকেই দূরে অপেক্ষা করবেন তিনি। থাকবেন দুই কুলের দেবী
সেই থেকে আজো। কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে আছেন বল্লাল সেনের কুলদেবী। সেন কন্যা সাধনার একান্ত আপনার জন হিসেবে। গল্প গাথায় শোনা যায়। কুলদেবী জানিয়েছিলেন প্রতি অষ্টমীতে পুজো নিতে কাশীপুরে আসবেন তিনি।সেই গল্প আজো চলছে। প্রথা মেনে আজো রাজ বাড়ীতে রুপোর থালায় সিন্দূর রাখা হয়। সেই খানে নাকি ষোড়শী কন্যার পায়ের ছাপ পরে। বোঝা যায় তিনি এসেছিলেন । পুজো নিতে।রাজ রাজ্যেশ্বরীর পুজোয় এখনো হাজারো মানুষ আসেন। আজো কাশীপুরের ভক্তরা বলেন। “মল্লে রা, শিখরে পা / দেখবি যদি শান্তিপুরে যা” আজো নাকি সিঁদুরের ছাপে চতুর্ভূজা কল্যাণেশ্বরী আসেন। আসেন কাশীপুর দেবীবাড়িতে। রাজ বাড়ীর মূল পুজোতে।
First published:
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।