শিশু পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন কেন্দ্রীয় সরকারি স্কুলের প্রিন্সিপাল এবং শিক্ষিকা সহ মোট আটজন৷ চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে বাঁকুড়ার কালপাথর এলাকায়৷
গতকাল, রবিবার দু'টি শিশুকে পাচার করার সময় কেন্দ্রীয় সরকারি ওই বিদ্যালয়ের সামনে এলাকার মানুষের কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে যান ওই অধ্যক্ষ। এরপর কোনওক্রমে অধ্যক্ষ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রে জড়িত সন্দেহে তিন মহিলা সহ মোট আট জনকে গ্রেফতার করে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে পাঁচটি শিশুও। এ দিন বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হলে প্রিন্সিপ্যাল সহ তিন জনের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত এবং বাকি ৫ জনের ১৪ দিনের জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বাঁকুড়া জেলা আদালত।
ধৃত প্রিন্সিপালের নাম কমল কুমার রাজোরিয়া৷ তিনি জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়াকে। ওই স্কুলেরই আর এক শিক্ষিকাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে৷ অভিযোগ, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে শিশুদের কিনে রাজস্থান সহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ধৃত প্রিন্সিপাল এবং শিক্ষিকা।
পুলিশ সূত্রে খবর, গতকাল, রবিবার বাঁকুড়ার কালপাথর এলাকায় দু'টি শিশুকে জোর করে একটি মারুতি ভ্যানে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া। বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয়দের। এর পরই এলাকার মানুষ ওই গাড়িটিকে ঘিরে রাখলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া। মারুতি ভ্যান থেকে উদ্ধার করা হয় চার শিশু সহ দুই মহিলাকে। পরে অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের মেনগেট ও কাদারোড এলাকা থেকে শিশুদের কিনে এনে রাজস্থান সহ বিভিন্ন জায়গায় পাচার করার পরিকল্পনা ছিল অধ্যক্ষর। এর জন্য শিশুদের মায়েদের লক্ষাধিক টাকাও দেওয়া হয়েছিল। সপ্তাহ খানেক আগে এই ভাবেই ন' মাসের একটি শিশুকে কাদা রোড এলাকা থেকে এনে অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া জহর নবোদয় স্কুলেরই সুষমা শর্মা নামের এক নিঃসন্তান শিক্ষিকাকে বিক্রি করেছিলেন বলে জানতে পারে পুলিশ। অন্য দু' টি শিশু সন্তানকেও একই ভাবে বিক্রি করার উদ্যেশ্যে সম্প্রতি স্কুল চত্বরে থাকা অধ্যক্ষর কোয়ার্টারে এনে রাখা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচটি শিশুকে উদ্ধার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রির উদ্যেশ্যেই এই চক্রের জাল বিছিয়েছিলেন জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া। শিশুগুলিকে যৌন হেনস্থা করা হত কিনা তা জানতে উদ্ধার হওয়া পাঁচ শিশুদের মেডিক্যাল পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।
এই চক্রে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের নামজাদা ওই স্কুলের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষিকার নাম যুক্ত হওয়ায় তাঁদের কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার মানুষ। এ দিন আদালতে তোলার সময় অভিযুক্ত প্রিন্সিপাল কমল কুমার রাজোরিয়াকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনও জবাব দেননি৷
Mrityunjoy Das
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bankura