#বর্ধমান: দিপালী দে। বয়স ৮২। বিধবা। সন্তান নেই। অসহায়। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বাগিলা গ্রামে নিজের পৈত্রিক ভিটেতেই দিন গুজরান করেন খুবই কষ্টের মধ্যে। তারই মধ্যে অসতর্কতায় পড়ে গিয়েছিলেন। হাত ভেঙে গিয়েছে। পাও নিজের বশে নেই। চলাচল করার ক্ষমতা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন অর্থবল না থাকা এই মহিলা দিশেহারা। কেই বা হাতের অপারেশন করাবে! সেই খরচই বা আসবে কোথা থেকে। মুস্কিল আসান হয়ে উঠল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড।
বৃদ্ধার এই অসহায় পরিস্থিতির কথা জানতে পেরেছিলেন বাগিলার পঞ্চায়েত সদস্য প্রলয় পাল। দিপালীদেবীর কথা শোনার পরই তিনি সময় নষ্ট না করেই তাঁর বাড়িতে যান। প্রলয়বাবুর তৎপরতায় এগিয়ে আসে বাগিলা গ্রাম পঞ্চায়েত। সোমবারেই হাতের অপারেশন করতে হবে জানতে পারে গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। তড়িঘড়ি তাঁরা যোগাযোগ করেন মেমারি এক বিডিও অফিসের সাথে। তাড়াতাড়ি দিপালীদেবীকে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করে দেওয়ার জন্য বিডিও অফিসে আর্জি জানান তাঁরা।
সদিচ্ছার হাত বাড়িয়ে দেয় বিডিও অফিস। ব্লক প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। কিন্তু দিপালীদেবী বয়স এবং অসুস্থতার কারণে যে দুয়ারে সরকার শিবিরে যেতে পারবেন না!স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করতে আসার সামর্থ্য কোথায়। হাল ছাড়েনি গ্রাম পঞ্চায়েত। ল্যাপটপ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি সহ টেকনিক্যাল অপারেটের এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের স্টাফদের নিয়ে দিপালীদেবীর বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন সকলে। সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তৈরি করে তুলে দেওয়া হয় বৃদ্ধার অশক্ত হাতে।
এই উদ্যোগ এই তৎপরতায় খুশি দিপালীদেবী। তিনি বলেন, আমার জন্য সরকার এতো কিছু করবে ভাবতে পারিনি। আমি অবাক হয়ে গেছি। এবার আমার অপারেশনটা হবে। পঞ্চায়েতের যারা এটা করলেন ভগবান এদের মঙ্গল করবেন।যার উদ্যোগ এবং প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হলো সেই প্রলয় পাল বলেন, আমি খবর পেয়েই ব্লকের সাথে যোগাযোগ করে এই ব্যবস্থাটা করে দিতে পারলাম। ওনার পাশে গ্রাম পঞ্চায়েত সব সময় থাকবে। মেমারি-১ ব্লকের বিডিও মহ আলি ওয়ালি উল্লাহ বলেন, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের এটা একটা আমাদের কাছে সফল প্রয়োগ। এইরকম বিধবা বয়স্কা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরাও খুশি। প্রশাসন এবং গ্রাম পঞ্চায়েত ওনার পাশে থাকবে। অপারেশন যাতে ভালোভাবে হয় সেটাও আমরাও দেখব।