Saradindu Ghosh
#বর্ধমান: দেশের নানা প্রান্তে ছুটে বেড়ানোই কাজ। পর্যটকদের নিয়ে সমুদ্র পাহাড় জঙ্গলে পাড়ি জমায় বাসগুলি। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, উত্তর ভারত থেকে দক্ষিণ ভারত, নৈসর্গিক প্রাকৃতিক দৃশ্য কিংবা ইতিহাসের টান। বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। লাক্সারি কোচ বাসে চড়ে ১৫ দিনের ট্যুর। রক্সৌল হয়ে নেপাল, কাঠমান্ডু, পোখরা। কিংবা কাশ্মীর লাদাখ। করোনা আবহে থমকে গিয়েছে সেই ইচ্ছে ডানায় ভর করে ঘুরে বেড়ানো। টানা তিন মাস তাই ঠায় দাঁড়িয়ে লাক্সারি ট্যুরিস্ট বাসগুলি। বেতন নেই। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আতঙ্ক পদে পদে তাড়া করে বেড়াচ্ছে সেইসব বাসের চালক কর্মীদের।
শুধু বর্ধমান শহরেই রয়েছে পঞ্চাশটিরও বেশি ট্যুরিস্ট বাস। বড় আশা নিয়ে বহু লক্ষ টাকা খরচ করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসগুলি সাজিয়ে রাস্তায় নামিয়েছিলেন মালিকরা। যে বাসে ভ্রমণ যত আরামদায়ক সেই বাসের চাহিদা তত বেশি। লকডাউনের আগে থেকেই সেই বাসগুলি ঠায় দাঁড়িয়ে বর্ধমানের পূর্বাশা বাসস্ট্যান্ডে। বাস কর্মীরা বলছেন, মাস গেলে ব্যাঙ্কের মোটা টাকা ঋণ শোধ করতে হচ্ছে। তার ওপর রয়েছে চালক কর্মীদের বেতন। অনেক মালিক কিছু কর্মীকে অর্ধেক বেতন দিচ্ছেন। জবাব দিয়ে দিয়েছেন অনেক মালিকই। লকডাউনের শুরুতেই তাঁরা কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছিলেন, সব স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বেতন দেওয়া যাবে না।
করোনার জেরে বাতিল বিয়ের অনুষ্ঠান। অন্যান্যবার ট্যুরের মাঝে বরযাত্রী, কন্যাযাত্রীর ভাড়া মেলে। এ বার সেসবও বন্ধ। কিছু বাস পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছনোর কাজ পেয়েছিল দু-একদিন। কাজ বলতে সে টুকুই। কর্মীরা আসছেন। বাসের দেখভাল করে সংসারের টানাটানির গল্প করে বাড়ি ফিরছেন। তাঁরা বলছেন, স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকার ভাড়াই দশ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। বিনা বেতনে, নামমাত্র বেতনে যে কিভাবে দিন চলছে তা আমাদের মতো ভুক্তভোগীরাই বুঝছেন, বললেন কর্মীরা।
তাঁরা বললেন, আনলকের হাত ধরে সব স্বাভাবিক হয়ে আসছে ঠিকই। কিন্তু তার প্রভাব পর্যটন শিল্পে পড়তে অনেক দেরি রয়েছে। এখনও দেশজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। তাই বাসিন্দারা এখনও বেশ কয়েক মাস দেখে তবেই বেড়াতে যাওয়ার কথা ভাববেন। তার উপর লকডাউনের জেরে কাজ খুইয়েছেন অনেকেই। বেড়াতে যাওয়ার কথা আর ভাবতেও পারবেন না অনেকেই। তাই আগামী মাসগুলি যে কিভাবে কাটবে তা আমরা ভেবে উঠতে পারছি না।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bardhaman, Tour Plan, Tourism industry, Tourist Buses