#মাঝেরমানা: গ্রামের নাম মাঝের মানা। তাই বোধহয় গ্রামে নেতাদের আসতেও মানা। তবে ভোটের তো আসতে মানা নেই। চারদিকে দামোদরের মধ্যেই জেগে পূর্ব বর্ধমানের মাঝের মানা চর। পোশাকি নাম দক্ষিণ ভাষাপুর। পাকা রাস্তা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, জল, যোগাযোগ ব্যবস্থা কিছুই নেই। নেই রাজ্য বারবার অবহেলিত থেকে যায়।
দামোদরের শুকনো বালি গরমে আরও গনগনে.. সেই বালিতে আধঘণ্টা হেঁটে এক চর। সেই চরেই গ্রাম। পূর্ব বর্ধমানের গলসির শিকারপুর হয়ে এই গ্রামের ঠিকানা। নাম মাঝের মানা। খাতায় কলমে অবশ্য দক্ষিণ ভাষাপুর। আজও আন্দামানের মতই বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হয়ে বাঁচে মাঝের মানা চর।
লম্বায় তিন কিলোমিটার ও চওড়ায় দেড় কিলোমিটার জমি নিয়ে অস্তিত্বেরসংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে মাঝের মানা
গ্রামে বাসিন্দা ৭০০-র বেশি
গ্রামে ভোটার ৩৯২ জন
এ গ্রাম আসলে নেই রাজ্য। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যুগে নেই তালিকাটা বেশ লম্বা... এই নেই ওই নেই করতে করতে ভাষা হারিয়েছে দক্ষিণ ভাসাপুর.. যেদিকেই যান দামোদর পেরোতে হবে। গ্রামে কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। বিদ্যুৎও নেই। বাসিন্দারা সোলার প্যানেল বসিয়েছেন নিজেদের খরচে। টিভি চলে দিনে দু'-তিন ঘণ্টা। দামোদরে জল বাড়লে বাড়ে ভেসে যাওয়ার আতঙ্ক। নেই রাজ্যে তাই কোনও বাবা মেয়ের বিয়ে দিতে চান না।
পূর্ববঙ্গ থেকে কয়েকজন এসে দামোদরের চরে মাথা গুঁজেছিলেন। সেই শুরু। তারপর পলিমাটিতে ধান-আলু চাষ। নদী পেরিয়ে সবজি বিক্রি করে কোনওরকমে সংসার চলে। গ্রামে নেই বাজার-হাট। নুন তেল ওষুধ আনতে হয় নদী পেরিয়ে।
মাঝেরমানাও ভোট দেবে। বেঁচে থাকার জন্য একটা ব্রিজ, বাড়িতে বিদ্যুৎ, চিকিৎসার মত কয়েকটা দাবি জানায় দামোদরের চর। কেউ শোনেই না।
এখনও ভোট চাইতে আসেননি কেউ। তা নিয়ে অবশ্য আর আক্ষেপ করে না মাঝেরমানা। মাঝের মানায় বোধহয় নেতাদের আসতে মানা.. তাই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে যেন অলিখিত নির্বাসিত হয়েই থেকে যায় এই গ্রাম..