#বর্ধমান: আমরা কি চা খাব না? খাব না চা? মুখে সেকথা না বললেও আকারে ইঙ্গিতে সে বলতে চেয়েছিল এমনটাই। পবনপুত্রের সেই শরীরী ভাষা বুঝতে কোনও রকম অসুবিধা হয়নি চা বিক্রেতার। আর পাঁচটা খদ্দেরের মতোই তার দিকে এগিয়ে দেওয়া হয়েছিল চা বিস্কুট। শীতের সকালে সে সেই চা বিস্কুট খেতে থাকলো তাড়িয়ে তাড়িয়ে। শীতের সকালে একটু চা নাহলে কি আর মন ভালো থাকে! শুক্রবার সকালে সেই ছবি ধরা পড়ল আমাদের ক্যামেরায়।
পূর্ব বর্ধমানের ভাতার বাজারে কেষ্টদার চায়ের দোকান। তেমন কুয়াশা না থাকায় সকাল থেকেই বেশ জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। সেই শীতকে আরও একটু উপভোগ্য করে তুলতে গরম চায়ে চুমুক দিতে তখন সেই চায়ের দোকানে ভিড় জমিয়েছেন অনেকেই। এলাকার অনেকেই আয়েশ করে বসেছেন চায়ের দোকানের বেঞ্চিতে। গরম চায়ের কাপে উষ্ণতা খুঁজে নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা মেতেছেন তাঁরা।ঠিক সেই সময় চায়ের দোকানে হাজির এক হনুমান। এসে বসেছে অন্যান্যদের সঙ্গে ফাঁকা জায়গা খুঁজে নিয়ে।
পাশে তাকে বসতে দেখে কেউ কেউ হাতে তুলে দিয়েছেন বিস্কুট। কিন্তু তার চাহিদা আরও কিছু।দৃষ্টি চা বিক্রেতার কেষ্টদার দিকে। যেন বলতে চাইছে ,আমি কি চা খাব না? খাব না চা? মুখে না বলতে পারলেও তার চোখের চাওনি বুঝতে কোনও রকম অসুবিধা হয়নি চা বিক্রেতার। তিনি এগিয়ে দিয়েছিলেন ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ। কিন্তু সভ্য মানুষের মত ঠোঁটের সামনে চায়ের কাপ ধরা এখনও সড়গড় হয়ে ওঠেনি তার। তাই কিছুটা ইতস্তত করছিল সে। তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন চা বিক্রেতা কেষ্ট দা। তিনি কাপ ধরেন মুখের সামনে। এরপর আর চা খেতে কোনও রকম অসুবিধা হয়নি এই হনুমানের। হাতে বিস্কুট ধরে চায়ের কাপে চুমুকের সেই দৃশ্য দেখে অবাক হন অন্যান্যরাও।
জমাটি ঠান্ডায় চায়ের চুমুক যে বেশ তৃপ্তি এনে দিয়েছে তাও বোঝা যাচ্ছিল তার শরীরে অভিব্যক্তিতে। আশপাশের সবাই যে অবাক দৃষ্টিতে তার চা খাওয়া দেখছে তা বুঝেও, না বোঝার ভান করেই ছিল সে। চা খাওয়া শেষ হলে অন্যদের বসার জায়গা করে দিয়ে খাবারের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন তিনি। তার এই আচরণে অবাক চায়ের দোকানে মালিক কেষ্ট দা থেকে শুরু করে সকলেই। আগামিকাল সকালে চায়ের টানে তিনি ফের দোকানে আসে কিনা তা জানতে উৎসুক সকলেই। লকডাউনের সময় আমরা কি চা খাব না ভাইরাল হয়েছিল ব্যাপকভাবে। ভাতারের হনুমানের চায়ে পে চর্চা এখন এলাকাবাসীর মুখে মুখে ফিরছে।
SARADINDU GHOSH