#বোলপুর: সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগ বুঝতে বোলপুরের দুই গ্রামে পৌছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। দোকানে বসে চা খেলেন, আলু বরবটি দিযে পাঁচমেশালি রান্না করলেন । বোলপুর সফরের শেষ লগ্নে এসে বল্লভপুরডাঙা ও সরকারডাঙা গ্রামে যান মুখ্যমন্ত্রী। এদিন বেলা দেড়টা নাগাদ কলকাতা ফিরে যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। তার জন্যে সোনাঝুরি'তে সরকারডাঙা গ্রামের পাশে বানানো হয়েছিল হেলিপ্যাড। তার পাশের গ্রামেই এদিন হঠাৎ করে চলে আসেন তিনি। একাধিক গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। জানার চেষ্টা করেন তাদের অভাব।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে শৌচালয় ও বাংলার বাড়ি ও পানীয় জল নিয়ে তাদের অসুবিধার কথা জানান গ্রামবাসীরা। বল্লভপুরডাঙা গ্রামের এক বাসিন্দা টুম্পা সোরেন। সে কলেজে পড়ে। এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে জানায় শৌচালয়ের বিষয়ে। তার মা সোনামণি সোরেন বলেন, গ্রামে যথাযথ ভাবে শৌচালয় নেই। ফলে মহিলাদের বিশেষ করে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। অভিযোগ একাধিকবার প্রশাসনকে জানানোর পরেও তারা সে অর্থে পাত্তা দেননি। এর ফলে তাদের প্রতিদিন অস্বস্তিকর অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়।মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের থেকে সবটা শোনেন। এরপর তিনি জেলাশাসক বিজয় ভারতীকে নির্দেশ দেন অবিলম্বে দুয়ারে সরকার প্রকল্পে যুক্ত করে শৌচালয় বানানোর কাজ শুরু করুক। জেলাশাসকের কাজে মুখ্যমন্ত্রী মৃদু ক্ষোভও প্রকাশ করেন ৷
একইসঙ্গে তিনি জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে বলেন, ''কেষ্ট কাল সকাল থেকেই যেন কাজ শুরু হয়ে যায়।" দ্রুত কাজ শুরু করে দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দেন অনুব্রত। এর পাশাপাশি গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গ্রামের পুকুর সংষ্কার করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন সেই কাজ দ্রুত শেষ করতে। এদিন গ্রামে গিয়ে রেশন, কন্যাশ্রী, ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কথা বলেন গ্রামবাসীদের সাথে। কেন কাজ আটকে থাকছে তা নিয়ে প্রশাসনকে একাধিক প্রশ্ন করেন। কোনও অভাব থাকলে দ্রুত দুয়ারে সরকার ক্যাম্প যেতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন গ্রাম পরিদর্শন সেরে মুখ্যমন্ত্রী যান সরকারডাঙা গ্রামের এক হোটেলে। বাঙালি হোটেলে গিয়ে তিনি পাঁচমেশালী রান্না করেন। আলু, পটল, বরবটি দিয়ে রান্না করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, "আমি রান্না করতে ভালোবাসি। আমি অনেক রান্না করে খাইয়েছি। এখানে এসে রান্না হচ্ছে দেখে ভালো লাগল।" এরপর তিনি চা পান করেন ওখানে। সঙ্গে অনুব্রত মন্ডলকে খাওয়ান। এই হোটেলের পাশের একটি দোকানেও তিনি যান। সেখানেও খোঁজ খবর নেন। দুটি দোকানেই মিষ্টি খাওয়ার জন্যে ৫০০ টাকা করে দেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের মতে ঘরের মেয়ে এটাই ইউ এস পি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের। ফলে বোলপুরের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মসূচীর পরে মমতা বন্দোপাধ্যায় ফের জেলার মানুষের কাছে বার্তা দিয়ে যান 'আমি তোমাদেরই লোক'।
আবির ঘোষাল