#ঝাড়গ্রাম: 'হেনকালে হায় যমদূত প্রায় কোথা হতে এল মালী/ঝুঁটি-বাঁধা উড়ে সপ্তম সুরে পাড়িতে লাগিল গালি!' হুইল চেয়ারে করে ভোট প্রচারে বেরিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ শানাতে রবীন্দ্রনাথের 'দুই বিঘা জমি'কেই হাতিয়ার করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির মিথ্যাচারকে নিশানা করতে গিয়ে মমতা বুধবার ঝাড়গ্রামের গোপিবল্লভপুর থেকে রীতিমতো চাঁচাছোলা ভাষায় বললেন, 'আজ এত কিছু কাজ করার পরেও বিজেপি আমাদের চোর বলে। সবচেয়ে বড় ভ্রষ্টাচারী দল বিজেপি। দুর্নীতি, দাঙ্গাবাজ দল। দুঃশাসন করছে দেশ জুড়ে।'
এবারের ভোট প্রচারে বেরিয়ে মহিলা ভোটের দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছেন মমতা। বিজেপির 'মহিলা বিরোধী' ভাবমূর্তি প্রচারে বারবার আক্রমণ শানাচ্ছেন তিনি। তুলে আনছেন উত্তরপ্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে মহিলাদের অবস্থার কথা। এদিনও মমতা বলেন, 'যদি আপনারা চান আমি থাকব না, নিশ্চয়ই আপনারা আপনাদের মতো ভোট দিতে পারেন। এটা আমার মা-ভাই-বোনদের উপর ছেড়ে দেব। তাঁরাই আমাদের শক্তি। উত্তরপ্রদেশে সবচেয়ে বেশি অত্যাচার হয়। ধর্ষণ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হল মেয়েটাকে। এই তো বিজেপি রাজ্য।'
ভোট ভাগাভাগি রুখতে এদিন ফের সিপিএম-বিজেপিকে একাসনে রেখে নিজের উপর হওয়া অত্যাচারের কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, 'আগে সিপিএম মারত, এখন মারে বিজেপি। কিন্তু আমার দুটো পা নয়, সারা বাংলার মা-বোনেদের পায়ের জোরই আমার জোর। বিজেপিকে হারাবই এটা আমাদের অঙ্গীকার।' লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রামে বিজেপির উত্থানের প্রেক্ষিতে এদিন মমতার অভিযোগ, 'মিথ্যে কথা বলে ভোট নিয়েছে। কাউকে বলেছে ৫০০ টাকা নাও, মিছিলে যাও। কাউকে বলেছে ৫০০০ টাকা নাও, বিজেপিকে ভোট দাও। মনে রাখবেন এটা বিজেপি-র টাকা না। ওরা কিছু করেনি। একেবারে শূন্য। ওদের এ বার শূন্য করে দিন।'
বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছনোর প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মমতা পুরুলিয়াতেই বলেছিলেন, তাঁর সরকার এমনিতেই সকলে বিনামূল্যে রেশন দিচ্ছে। এবার ক্ষমতায় এলে আর রেশন দোকানে গিয়ে চাল-ডাল সংগ্রহ করতে হবে না সাধারণ মানুষকে। বরং তাঁদের দোরগোড়ায় সবকিছু পৌঁছে দেবে সরকার। আর মমতার এই প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতেই নির্বাচন কমিশন জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। কিন্তু তাতেও যে মমতা নিজের অবস্থান থেকে সরে আসছেন না, তা এদিন প্রমাণ করেছেন গোপিবল্লভপুরেও। বলেছেন, 'বিনা পয়সায় রেশন দিই আমরা। আগামীদিন আপনাদের রেশনে যাওয়ার দরকার নেই। দুয়ারে সরকার দরজায় দরজায় খাবার পৌঁছে দিয়ে আসবে।'