#মালদহ: গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কাটিয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে মালদহে খাতা খোলার লক্ষ্যে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস। ভালো ফলের আশায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াই এর ডাক দিল তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে সমস্ত বিধানসভার দলীয় প্রার্থীদের উপস্থিতিতে বৈঠকে বসে জেলা নেতৃত্ব। প্রার্থীদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান তৃণমূল সভাপতি মৌসম বেনজির নূর।
মালদহে এবার তৃণমূল কংগ্রেস বেশ কিছু আসন পাবে বলে দাবি করেন মৌসম। বৈঠকে হাজির ছিলেন তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা ইংরেজবাজার কেন্দ্রের প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী, মানিকচকের তৃণমূল প্রার্থী সাবিত্রী মিত্র, চাঁচোলের প্রার্থী নিহার রঞ্জন ঘোষ, মোথাবাড়ির সাবিনা ইয়াসমিন ও সুজাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি আবদুল গনির মতো হেভিওয়েট প্রার্থীরা।
মালদহের তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সর্বজনবিদিত। বারবার চেষ্টা করেও গোষ্ঠী কোন্দল মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে জেলা এমনকী রাজ্য নেতৃত্বও। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে মালদহ জেলার ১২টি বিধানসভা আসনের মধ্যে আটটিতে জেতে কংগ্রেস। বাকি তিনটি আসনে বামেরা এবং একটি আসন জেতে বিজেপি। কিন্তু, কোনও আসন পায়নি তৃণমূল কংগ্রেস। মালদহে কোনও আসন না পাওয়া নিয়ে এর আগেও বারবারই প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শোনা গিয়েছে খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এবার রাজ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়ে যাওয়ায় মালদহের মতো জেলা থেকে আসন জেতা অত্যন্ত জরুরী তৃণমূলের কাছে।
তৃণমূল কর্মীদের একাংশের মতে, ভোটের এখনও বেশ কিছুদিন সময় রয়েছে। নেতারা অর্থাৎ প্রার্থীরা যদি নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি কাটিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে পারেন তাহলে মালদহে আরও ভালো ফল সম্ভব। মালদহে বেশকিছু বিধানসভা রয়েছে যেখানে একাধিক তৃণমূল নেতার প্রভাব রয়েছে। ফলে তাঁরা সকলে একজোট হয়ে বিধানসভা ভোট করবেন কিনা তা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
সূত্রের খবর, টিম পিকের পরিকল্পনায় আজ দলের ঐক্যবদ্ধ চেহারা তুলে ধরতে সমস্ত প্রার্থীকে ডেকে পাঠিয়ে উত্তরীয় ও ফুল দিয়ে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি এক জোট করে সংবাদমাধ্যমের সামনে হাজির করে জেলা নেতৃত্ব। রতুয়া বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সমর মুখোপাধ্যায় ছাড়া বাকি ১১ জন প্রার্থী এদিন জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে উপস্থিত হন। সংবাদ মাধ্যমের সামনে একসঙ্গে ফটোশুটে অংশ নেন তাঁরা। তবে, হেভিওয়েট প্রার্থীরা শুধু নিজেদের কেন্দ্রে প্রচার করবেন, নাকি একে হন্যের হয়ে লাগোয়া বিধানসভা এলাকাতেও প্রচার করবেন। তা নিয়ে কোনও সুস্পষ্ট মন্তব্য করেনি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান তৃণমূলের প্রার্থীরাও।
যদিও রাজনীতিক ওয়াকিবহাল মহলের মতে, একেই মালদহে তৃণমূলের সংগঠন কিছুটা দুর্বল। লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের মত বড় লড়াইয়ের ময়দানে এখনো জেলায় সেভাবে তৃণমূল সাফল্য পায়নি। এরই মধ্যে সম্প্রতি জেলায় শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি। এমনকি তৃণমূলের একাধিক নেতা ও সম্পত্তি বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এই অবস্থায় নিজেদের মধ্যে দূরত্ব মিটিয়ে নেতারা ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলে এবারও মালদহের তৃণমূলের লড়াই কঠিন হতে পারে।
(সেবক দেবশর্মা)