#বর্ধমান: জমির ফসল মা জগদ্ধাত্রীকে নিবেদন করেন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বিদ্যানগরের বাসিন্দারা। চাল কুমড়ো থেকে শুরু করে কলা,আখ শশা, পেয়ারা যে যেমন ফসল ফলান,নিবেদন করেন মা জগদ্ধাত্রীকে। একের পর এক ফসল বলি দেওয়া হয় প্রতিমার সামনে। বছরের পর বছর ধরে এই রীতি পালন করে আসছেন গ্রামবাসীরা।
এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, এক সময় এই এলাকা ছিল পিছিয়ে পড়া। উন্নয়নের আলো থেকে বঞ্চিত থেকে গিয়েছিল গ্রামের পর গ্রাম। বছর বছর গঙ্গার বন্যায় সব হারাতেন বাসিন্দারা। এলাকায় পুজো পার্বণ বলে বিশেষ কিছুই ছিল না। তারই মধ্যে গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করেন সতেরো বছর আগে। তখন থেকেই মাঠের ফসল উৎসর্গ করা হয় মা জগদ্ধাত্রীকে।
পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর এক নম্বর ব্লকের বিদ্যানগর গ্রামের ষষ্ঠীতলায় এই জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করা হয়। গ্রামবাসীরা জানালেন, এলাকায় তিন হাজারের বেশি বাসিন্দার বসবাস। সকলেই প্রায় শ্রমজীবী পরিবারের সদস্য। বেশিরভাগ বাসিন্দা আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া, তবুও এই পুজোকে ঘিরে আন্তরিকতার অভাব নেই কারও মধ্যেই। জমির সবচেয়ে ভাল ফসলটি মাকে নিবেদন করে তৃপ্ত হন তাঁরা। তাই বলির সময় কেউ নিয়ে আসেন চাল কুমড়ো, কেউ আবার বড় আকারের পেয়ারা। গাছের বড় পাকা কলা থেকে আখ... বলির জন্য কিছু না কিছু নিয়ে আসেন সকলেই।
এলাকার বাসিন্দা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানালেন, এখন পাকা রাস্তা হয়েছে। আলোর ব্যবস্থা হয়েছে। শিশুদের জন্য স্কুল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র সবই তৈরি হয়েছে।আগে এসব ছিল না। বাসিন্দাদের আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য বেড়েছে। বাসিন্দাদের বিশ্বাস, মা জগদ্ধাত্রীর আশীর্বাদেই সংসারে উন্নতি এসেছে। ফসলের ফলন ভাল হচ্ছে। সেই বিশ্বাস থেকেই বলির জন্য ফল সবজি নিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। এবারও সেই প্রথার ব্যতিক্রম ঘটেনি। তবে এবার করোনা সংক্রমণের কারণে পুজো করা যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন অনেকেই।শেষে ঠিক হয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পুজোর আয়োজন করা হবে। সেই মতই স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজো চলছে বিদ্যানগরে।