#খড়গপুর: লকডাউনে যখন পড়ুয়াদের বাড়ি ফিরতে বলে দেশের একাধিক ক্যাম্পাস খালি করতে বলা হয়েছিল তখন আইআইটি খড়গপুর ক্যাম্পাসে থেকে যান এক তৃতীয়াংশ পড়ুয়ারা। অন লাইন কোর্স চালু করে, শ্রেনী পাঠ বন্ধ করার পরও প্রায় সাড়ে চার হাজার ছেলে মেয়ে থেকে গিয়েছিলেন ক্যাম্পাসে। লকডাউনেও আইআইটি কর্তৃপক্ষ তাঁদের আবাসনে রেখে খাওয়ার পরিবেশন সহ সমস্ত সুযোগ বহাল রেখেছিল৷ কিন্তু আর সেই অনুমতি দিতে চাইছেন না কর্তৃপক্ষ৷ আগামী ১৯ শে জুনের মধ্যে ক্যাম্পাস খালি করে দিতে বলা হয়েছে সমস্ত ছাত্ৰছাত্রীকেই। সম্প্রতি আইআইটি খড়গপুর কর্তৃপক্ষ একটি নোটিশ দিয়ে করে এই নির্দেশ জারি করেছে।
আইআইটি খড়গপুরের রেজিষ্টার বি.এন.সিংহ জানিয়েছেন, ''১০দিন সময় দেওয়া হয়েছে পড়ুয়াদের যা তাঁদের বাড়ি যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট৷ এরমধ্যে তাঁদের ক্যাম্পাস খালি করে দিতে বলা হয়েছে। এমনিতেই আমাদের আ্যকাডেমিক ক্যাম্পাস পুরোপুরি বন্ধ ছিল এবার ছাত্রাবাসগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হবে।"
উল্লেখ্য লকডাউনের আগেই করোনা সংক্রমণ শুরুর পরপরই মার্চের মাঝামাঝি আইআইটি কর্তৃপক্ষ পঠনপাঠন বন্ধ করে পড়ুয়াদের বাড়ি যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল৷ কিন্তু সেখানে সেটা বাধ্যতামূলক ছিল না। বলা হয়েছিল ইচ্ছা করলে তারা বাড়ি চলে যেতে পারেন। প্রায় ১২হাজার পড়ুয়ার বেশিরভাগই বাড়ি চলে গেলেও ৪ হাজার মত পড়ুয়া থেকে যান। এরপর লকডাউন চালু হয়ে গেলে ফিরতে পারার আর সুযোগ ছিল না। এই সময় আইআইটিকে মেস চালু রাখতে হয়। মেসের কর্মীরা যাতে ক্যাম্পাসের বাইরে তাঁদের বাড়িতে গিয়ে সংক্রমণের কবলে পড়ে যান এবং তার থেকে ক্যাম্পাসের ভেতরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে তাই তাদের বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি।
রেজিষ্টার জানিয়েছেন, "ওই মেস কর্মীদের এবার ছুটি দেওয়া দরকার। অমানুষের মত পরিশ্রম করেছেন তাঁরা। নিজের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেননি দিনের পর দিন। জেলখানার মত তাঁদের সময় কেটেছে। পরিবারের লোকেরা দূর থেকে এসে তাঁদের দেখে গেছেন। এবার ওঁদের ছুটি দেওয়া দরকার তাই পড়ুয়াদের যেতে বলা হয়েছে।"
উল্লেখ্য ইতিমধ্যেই আইআইটি কোনও মূল্যায়ন ছাড়াই spring session শেষ হয়েছে। বলা হয়েছে আগের পরীক্ষা, মৌখিক,উপস্থিতি ইত্যাদির নিরিখেই মূল্যায়ন হবে। পরের session শুরু আগষ্ট মাসে। এর আগে মেস কর্মচারীদের অন্তত দেড় মাসের ছুটি দিতে চায় আইআইটি।
আইআইটি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পরের সেমিষ্টার ঠিক কবে চালু হবে তা এখুনি বলা মুশকিল। দেশে করোনার গতিপ্রকৃতি, সরকারের সিদ্ধান্ত, অনেক কিছুর ওপরেরই তা নির্ধারন করবে। তাই আগষ্টেই যে শুরু করা যাবে এমনটা জোর দিয়ে বলা যাবেনা। এই পরিস্থিতিতে আর পড়ুয়াদের থাকার কোনও অর্থই হয়না। তাছাড়া পরবর্তী সেশনের জন্য হোস্টেলগুলি, বাজার সহ বিভিন্ন জায়গা স্যানিটাইজেশন করে রাখা দরকার। তার জন্যও ক্যাম্পাস খালি করে দেওয়াটা দরকার।