হোম /খবর /দক্ষিণবঙ্গ /
প্রয়াত বাবাকে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে, পরীক্ষা দিয়ে এসে মুখাগ্নি বোলপুরের ছাত্রীর

Birbhum News: প্রয়াত বাবাকে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে, পরীক্ষা দিয়ে এসে বাবার মুখাগ্নি, বোলপুরে করুণতম ঘটনা

এই স্কুলেই পরীক্ষা দিয়েছে পরীক্ষার্থী

এই স্কুলেই পরীক্ষা দিয়েছে পরীক্ষার্থী

Birbhum News: অন্যদিকে, ভূবনডাঙার শুকনগর শ্মশানে শেষকৃত্যে জন্য নিয়ে যাওয়া হয় দেহ৷ শ্মশানে দেহ নামিয়ে পরিজন-প্রতিবেশিরা অপেক্ষা করতে থাকে মৌসুমির৷

  • Share this:

বোলপুর: বাবার মৃতদেহ বাড়িতে রেখে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিল মেয়ে। পরীক্ষা শেষে ফের শ্মশানে গিয়ে মুখাগ্নি করল সে৷ এদিন উচ্চমাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা ছিল। আর ভোর ৪টেয় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বাবার৷ শোকে বিহ্বল হয়েই প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছায় মেয়ে৷

বোলপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মকরমপুরের বাসিন্দা ছিলেন অষ্টম দলুই (৪০)। এদিন ভোর ৪টেয় বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। বোলপুর নেতাজি বাজারে চায়ের দোকান চালিয়েই স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার চলত। বড় মেয়ে মৌসুমি দলুই পারুলডাঙা শিক্ষানিকেতন আশ্রম বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। উচ্চমাধ্যমিকে তার পরীক্ষা কেন্দ্র বোলপুর শৈলবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। এদিন, বাবার মৃত্যুর পরে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিজনরা৷ কিন্তু, দুঃস্থ বাবার স্বপ্ন ছিল মেয়ে যেন ভাল করে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়, ফল ভাল হয়৷ তাই শোক উপেক্ষা করে নিজেকে শক্ত করে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছায় মৌসুমি। সকলের সঙ্গে বসে ইংরাজি পরীক্ষা দেয় সে৷

অন্যদিকে, ভূবনডাঙার শুকনগর শ্মশানে শেষকৃত্যে জন্য নিয়ে যাওয়া হয় দেহ৷ শ্মশানে দেহ নামিয়ে পরিজন-প্রতিবেশিরা অপেক্ষা করতে থাকে মৌসুমির৷ বাড়ির বড় মেয়ে সে৷ তাই বাবার মুখাগ্নি তাকেই করতে হবে৷ পরীক্ষা শেষে শ্মশানে এসে বাবার মুখাগ্নি করে মৌসুমি। এমনই করুন দৃশ্যের সাক্ষী থাকল বোলপুর৷ এখনও উচ্চমাধ্যমিকের আরও ৪টে পরীক্ষা বাকি৷ সেগুলিও একই ভাবে দেবে মৌসুমি।

আরও পড়ুন: শান্তনুর ফোনেই সব রহস্য, এবার বড় কিছু ঘটবে! শুভেন্দুর দাবিতে পাল্টা 'আপনি কোথায় থাকবেন'?

আরও পড়ুন: কলকাতার ৩ ক্যাফেতে ঘটেছে সেই বৈঠক, শান্তনুর সঙ্গে কোন নেতার? জেনে গেল ইডি

 সে জানায়, "এর আগেও বাবার দু’বার স্ট্রোক হয়েছিল। তৃতীয় বারে বাবা মারা গেল৷ বাবা চাইত আমি যাতে ভাল করে পরীক্ষা দিই। তাই পরীক্ষা দিলাম, পরীক্ষা ভাল হয়েছে।"

মৌসুমির কাকা সুভাষ দলুই বলেন, "পড়াশোনা আগে৷ তাই বাবার মৃতদেহ রেখেই সে পরীক্ষা দিতে গিয়েছে। খুব মর্মান্তিক। আমাকে বলল কাকা কী করব৷ আমরা সবাই পরীক্ষা দিতে পাঠালাম। যে যাবার সে তো চলে গিয়েছে, আর ফিরবে না৷ পড়াশোনা করুক মেয়ে সেই ইচ্ছে ছিল দাদার।"

শৈলবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রুবি ঘোষ বলেন, "জীবনের সবচেয়ে বড় মানুষটি চলে গিয়েছে তাও সে পরীক্ষা দিতে এসেছে। খুব শক্ত মনের পরিচয়ের জন্য ওকে আমরা কুর্নিশ জানাই৷ আমরাও মেয়েটির সমস্ত রকম খেয়াল রেখেছি।"

ইন্দ্রজিত রুজ

Published by:Uddalak B
First published:

Tags: Birbhum news